ব্যথায় কাতরাচ্ছেন খালেদা জিয়া, জীবন সংকটাপন্ন: রিজভী

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ১:৫০ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৫, ২০১৯

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে। সারা শরীরে ব্যথায় কাতরাচ্ছেন তিনি। হাত-পা নাড়াতে পারছেন না। সুচিকিৎসার অভাবে তাঁর জীবন এখন সংকটাপন্ন। আমি অবিলম্বে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করছি।’

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসনকে কোনও প্রকার চিকিৎসাই দেয়া হচ্ছে না। গত ৮ দিন তাঁর কাছে কোনও চিকিৎসক যাননি। জরুরি ভিত্তিতে তাঁর উন্নত চিকিৎসা না দিলে বড় ধরণের ক্ষতি হয়ে যাবে। তাঁকে হত্যা করতেই তাকে কোনও চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে না। সুচিকিৎসার অভাবে প্রাণহানির পর্যায়ে উপনীত তিনি। আমরা মনে করি, এই মিডনাইট সরকার গভীর নীলনকশা অনুযায়ী বেগম খালেদা জিয়াকে তিলে তিলে নিঃশেষ করার অপপ্রয়াসে চালাচ্ছে বলেই চাহিদামত চিকিৎসা প্রদানের সুযোগ দিচ্ছে না। তার প্রাপ্য জামিনে সরাসরি বাধা দেয়া হচ্ছে। নগ্নভাবে আদালতের ওপর হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে।’

শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সকালে খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে রাজধানীতে একটি বিক্ষোভ মিছিল শেষে পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধ প্রজম্ম দলের উদ্যোগে সকালে মিছিলটি নয়াপল্টনস্থ বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের থেকে শুরু হয়ে নাইটিঙ্গেল মোড় ঘুরে আবারও বিএনপি কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়।

রিজভীর নেতৃত্বে মিছিলে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি’র সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেল, বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক ও মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম দলের সভাপতি শামা ওবায়েদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সাইফুল ইসলাম পটু, মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম দলের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এম ইউসুফ আলী, মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম দল ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি সাইফুল ইসলাম ও উত্তরের সভাপতি মো. ওবায়দুর রহমান অটলসহ মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম দলের অসংখ্য নেতাকর্মী।

পথসভায় সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে রিজভী বলেন, ‘পেঁয়াজের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকার পরও ক্ষমতাসীন দলের সিন্ডিকেটের কারণে পেঁয়াজের কেজি দেড় শতকের পর ডাবল সেঞ্চুরি পেরিয়ে গেছে। সর্বশেষ গতকাল যোগ হয়েছে আরো ৪০ টাকা। ২৪০ টাকা ছাড়িয়েও থামেনি দাম। দাম আর কতো বাড়বে- এই নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারছেন না। বরং সংসদে বাণিজ্যমন্ত্রীর পক্ষে শিল্পমন্ত্রী যেদিন বললেন, ‘বাজার নিয়ন্ত্রণে’- তার পরদিনই এক লাফে ৩০ থেকে ৪০ টাকা বেড়ে যায় কেজিতে। মন্ত্রীর বক্তব্যের পর পেঁয়াজের দাম আরও বেড়ে গেছে। তাদের বক্তব্য সিন্ডিকেটকে উস্কে দিচ্ছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত যে পরিমাণ পেঁয়াজ দেশে এসেছে তা চাহিদার চেয়ে অনেক বেশি। তাহলে এভাবে লাগামহীনভাবে পেঁয়াজের দাম বাড়ছে কেন?’

তিনি বলেন, ‘রাজধানীর খুচরা বাজারে, পাড়া-মহল্লার দোকানগুলোতে পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজি ২৪০ টাকা ছাড়িয়েছে। এই পরিস্থিতিতে দেশের জনগণ মনে করে পেঁয়াজ নিয়ে যে সিন্ডিকেট লুটতরাজ করছে তাদের সাথে সংশ্লিষ্ট কোনও কোনও মন্ত্রী-এমপি সরাসরি জড়িত। একারণে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ না নিয়ে বিভ্রান্তিমূলক কথাবার্তা বলছে। অবিলম্বে আমরা ব্যর্থ মন্ত্রীদের পাশাপাশি সরকারের পদত্যাগ দাবি করছি।’

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, রাজনীতিক, ব্যবসায়ী ও সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়ে যাচাই বাছাই ছাড়া সংবাদ প্রকাশ করা যাবে না বলে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিজ্ঞপ্তিতে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের তথ্য যথাযথভাবে যাচাই করে সংবাদ প্রকাশের অনুরোধ করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ শাখা থেকে এ গণবিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়। বন্ধুরা, সরকারি এ বিজ্ঞপ্তি গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণমূলক। মূলত; সরকারদলীয় লোক ও প্রশাসনের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের খবর যাতে প্রকাশ না পায় সেজন্যই এ আদেশ জারি করা হয়েছে। লোক দেখানো দুর্নীতি বিরোধী অভিযানে কিছু ছিচকে দুর্নীতিবাজের নাম প্রকাশের পর গণমাধ্যমে সরকারের শীর্ষ দুর্ণীতিবাজের তালিকা প্রকাশ হওয়ার আতঙ্ক থেকে এ আদেশ জারি করা করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘এমনিতেই গণমাধ্যমের কোনও স্বাধীনতা নেই। দেশে যা ঘটে, যত অপকর্ম, দুর্নীতি হচ্ছে তার সিকি ভাগও প্রকাশ পাচ্ছে না। তারপরও একর পর এক কালো আইন তৈরি করছে সরকার। বারবার কালো আইন করে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করাই তাদের মূল উদ্দেশ্য।’