রিপনের স্বপ্ন শেষ, নিথর দেহ ফিরে এল পরিবারে

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ৩:৩৮ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৩১, ২০২৫

দেশে ফিরে আসার পর তার স্বপ্ন ছিল বিয়ে করে পরিবারের সবাইকে আনন্দে ভাসাতে। কিন্তু সেই স্বপ্ন আর পূরণ হলো না। বর বেশ সাজে, হাতের লাগেজ নিয়ে বরণীয় মুহূর্তে ফিরে আসার কথা ছিল তার, কিন্তু এসে দাঁড়াল নিথর দেহ। বন্ধু-বান্ধবের সাথে স্বপ্ন দেখত, দেশে ফিরে বিয়ে করবে, সবাইকে সাথে নিয়ে খুশির দিন কাটাবে— কিন্তু তা হলো না। মরদেহে(Parcel) রূপে ফিরে এসেছে তার লাশ, যা দেখে চারদিকে কান্নায় ভরা পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। ছোটবড় সব শ্রেণির মানুষ অশ্রুসিক্ত হয়ে সংসারের শোককে কাঁদছেন। পরিবারের বড় ছেলে হিসেবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে ছিল সে, প্রবাস জীবন শুরু করে পরিবার ও স্বপ্নের জন্য। ভাই-বোন, মা— সকলের জন্য ছিল ভবিষ্যতের স্বপ্ন। কিন্তু নির্মম নিয়তির ছোঁয়ায় সবকিছু ভেসে গেছে, হয়ে গেছে ধূলিসৎস্য। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকালে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায় রিপনের মরদেহ। কফিন নামানো মাত্রই স্বজনদের চোখে পানি ঝরতে থাকলে পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে। পরিবারের বড় সন্তান, ভরসা- হঠাৎই এক অনন্ত যাত্রায় চলে গেল। রিপন চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার পোপাদিয়া ইউনিয়নের আকুবদণ্ডী গ্রামের শরীফপাড়ার সন্তান। জীবিকার তাগিদে প্রায় এক বছর নয় মাস আগে কাতারে গিয়েছিলেন। সেখানে একটি ক্লিনিং কোম্পানিতে কাজ করতেন। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে বড় তার দায়িত্ব ছিল পরিবারের দেখাশোনা করতে। ২৩ ডিসেম্বর কাতারের আল খোর এলাকায় রাস্তা পার হচ্ছিলেন, তখন গাড়ির ধাক্কায় প্রাণ হারান তিনি। দুর্ঘটনার পর মরদেহ রাখা হয় স্থানীয় হাসপাতালে মর্গে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে শেষমেশ দেশে ফিরল তার নিথর দেহ। রিপনের মৃত্যুতে গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ছেলে হারিয়ে বাকরুদ্ধ তার মা, পাশে প্রতিবেশীরাও শোকাহত। এটা যেন এক করুণ ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি। কারণ রিপনের বাবা, আবদুল গফুরও ২০০২ সালের ডিসেম্বরে প্রবাসে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেছিলেন। বাবার পর থেকে বড় ছেলের দায়িত্ব ছিল পরিবারের দেখাশোনা, এভাবেই যেন জীবন তার এক নতুন ট্র্যাজেডির মুখোমুখি হলো। মঙ্গলবার বিকেলে পারিবারिक কবরস্থানে দাফন করা হয় তাকে।