ইরানে চলতি বছর মৃত্যুদণ্ডের সংখ্যা ১,৫০০ ছাড়িয়েছে

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ৩:৪৩ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৩০, ২০২৫

ইরানে এ বছর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সংখ্যা গত বছরের থেকে বেশি হয়ে ধরা পড়েছে, যা দ্বিগুণেরও বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে। নরওয়েভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ডিসেম্বর মাসের শুরু পর্যন্ত তারা কমপক্ষে ১,৫০০ মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে। সংগঠনটি বলছে, এর বাইরে আরও অনেকের মৃত্যু দণ্ড কার্যকরণ হতে পারে, কারণ সরকার এ ব্যাপারে কোনো আনুষ্ঠানিক তথ্য প্রকাশ করেনি। খবর বিবিসির।

আইএইচআর এর তথ্যানুযায়ী, ২০২৪ সালে ইরানে মোট ৯৭৫ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়, যা আগের বছর অপেক্ষা অনেক বেশি। তবে এ সংখ্যা পুরোপুরি প্রকৃত নয়, কারণ ইরানের সরকার এ বিষয়ে কোনো বিস্তারিত জনসাধারণের সামনে প্রকাশ করেনি। বিশ্লেষকদের মতে, এই বছরও মৃত্যুদণ্ডের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিভিন্ন পর্যবেক্ষক সংগঠনও এই হিসাবের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ তথ্য দিয়েছে।

এর আগে, ইরান সরকার বলেছিল যে, মৃত্যুদণ্ড কেবল সবচেয়ে গুরুতর অপরাধের জন্যই কার্যকর করা হয়। তবে দেশটির ইতিহাসে অন্যতম আলোচিত ঘটনা ছিল ২০২২ সালে পুলিশি হেফাজত থাকা অবস্থায় কুর্দি তরুণী মাশা আমিনির মৃত্যুর ঘটনার পর ব্যাপক গণবিক্ষোভের আলোড়ন। তার আগে থেকেই দেশটিতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরণে বৃদ্ধির প্রবণতা দেখা দেয়।

মাশা আমিনি, যা মাত্র ২২ বছর বয়সী ছিলেন এবং তখন ইরানের তেহরানে নীতি পুলিশের হাতে আটক হয়েছিলেন, কারণ তিনি হজব ঠিকমতো পরেননি। তার মৃত্যুর পর দেশজুড়ে ব্যাপক প্রতিবাদ শুরু হয়, যা পরবর্তীতে ইরানের ধর্মীয় শাসনের শক্তি পরীক্ষা হিসেবে দাঁড়ায়। এই প্রতিবাদের জের ধরে ইরানের কর্তৃপক্ষ ব্যাপক দমন-পীড়ন চালায় ও মৃত্যুদণ্ডের সংখ্যা বাড়িয়ে দেয়। আইএইচআর এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে প্রায় ৫২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়, যা ২০২৩ সালে বৃদ্ধি পেয়ে ৮৩২–এ পৌঁছায়।

বিশেষত, বিক্ষোভকারী এবং গুপ্তচর বলে বিবেচিত কয়েকজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। তবে, মোট মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের ৯৯ শতাংশই হত্যা বা মাদক মামলায় দোষী সাব্যস্ত ছিল, আর এই অনুপাত প্রায় অপরিবর্তিত রয়েছে।