জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতা নিয়ে গভীর সংকটে এনসিপি

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ৩:৩৮ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৯, ২০২৫

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে জামায়াতে ইসলামী’র সাথে আসন সমঝোতা করতে গিয়ে গভীর সংকটে পড়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলের মধ্যে দেখা দিয়েছে অস্থিরতা এবং পদত্যাগের মিছিল ব্যাপক আকার ধারণ করেছে, যা বড় ধরনের ভাঙনের আশঙ্কা সৃষ্টি করেছে। ইতোমধ্যে জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতার বিরোধিতা করে দলটির একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা বিভিন্ন সদস্যের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন। সূত্র জানায়, জামায়াতের সাথে জোট গঠনের কথা জানাজানি হওয়ার পর থেকেই দলের ভিতরে সমর্থনে প্রচারণা শুরু হয়, যা মুখোমুখি বৈপরীত্য সৃষ্টি করেছে। এর ফলে সবচেয়ে বড় বিপত্তি হচ্ছে তিনি পদত্যাগের হার বাড়িয়ে চলছে। গতকাল রোববার দলটির যুগ্ম আহ্বায়ক তাজনূভা জাবীন এবং মনিরা শারমিন পদত্যাগ করেছেন। মনিরা শারমিনের বক্তব্য অনুযায়ী, তিনি এখন থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন না, কারণ তিনি দলের জোটের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, তিনি দলের স্বতন্ত্র শক্তিতে বিশ্বাস করেন এবং গণআভ্যুত্থানের তোয়াক্কা করে দেশের মানুষের অধিকতর কল্যাণের জন্য নিজের দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগেও দলটির আরও কিছু নেতাকর্মী পদত্যাগ করেছেন, যেমন জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তাসনিম জারা ও বোঝাপড়ার বিরোধিতা করে মীর আরশাদুল হক। গত বৃহস্পতিবার, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আবদুল কাদের ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, এনসিপি অবশেষে জামায়াতের সঙ্গে সরাসরি জোট বাঁধছে, যা কিনা দেশের তরুণ সমাজ ও দলের আশা-আকাঙ্ক্ষার ওপর জল ঢেলে দেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত। তিনি আক্ষেপের সুরে বলছেন, এই সিদ্ধান্তের ফলে এনসিপি জামায়াতের গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। শীর্ষ নেতারাও জানাচ্ছেন, তারা মূলত দীর্ঘদিন ধরে এ জোটের পরিকল্পনা করছিলো এবং সম্প্রতি আসন ভাগাভাগি চূড়ান্ত হয়। অন্যদিকে, ফেসবুকে ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি রিফাত রশিদ এ জোটকে ‘আত্মঘাতী’ বলে মন্তব্য করেছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এনসিপি জামায়াতের সাথে জোট করলে জামায়াত কৌশলগতভাবে লাভবান হতে পারে, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে দলের ভিতরে আরও বড় বিভাজন দেখা দিতে পারে। বিশ্লেষক ড. শামিম রেজা মন্তব্য করেন, জামায়াতের অতীত অধ্যায় নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার জন্য এনসিপির ভেতরে বিভাজন তৈরি হচ্ছে, এবং এই জোটের ফলে এনসিপি তার নিরপেক্ষ ও মধ্যপন্থী পরিচয় বজায় রেখে চলা কঠিন হয়ে পড়বে। এখন প্রশ্ন উঠছে—এনসিপি কি এটি একটি রাজনৈতিক আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিলো, না কি কৌশলগতভাবে ফলপ্রসূ সিদ্ধান্ত। আপাতত আটকে আছে রাজনীতির মাঠে এ ব্যাপারটি।