ইউক্রেনে রাশিয়ার ব্যাপক হামলা এবং শান্তি আলোচনার প্রস্তুতি

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ৩:৪৩ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৮, ২০২৫

রাশিয়া ইউক্রেনে ব্যাপক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে, এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে গুরুত্বপূর্ণ এক বৈঠকের প্রস্তুতি নিচ্ছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। এই বৈঠকের আগে রাজধানী কিয়েভসহ বিভিন্ন অঞ্চলে রাশিয়ার রকেট হামলা ও ক্ষেপণাস্ত্র পরিসর বাড়ছে। শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) জেলেনস্কি জানিয়েছেন, রোববার তিনি ফ্লোরিডায় ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এই আলোচনা মূলত যুদ্ধ বন্ধের পথে অগ্রগতি ও ভবিষ্যত শান্তির ব্যাপারে আলাপ হবে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে অভিযান শুরু করে, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে ইউরোপের সবচেয়ে প্রাণঘাতী সংঘাতে পরিণত হয়েছে। রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, রাশিয়ার হামলার ভয়াবহতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় হয়ে ওঠে। ইউক্রেনের সেনারা ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনের তীব্র হামলার মুখে পড়েছে, যার ফলে রাজধানী কিয়েভের সঙ্গে দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলের কিছু জায়গায় সতর্কতা জারি হয়েছে। স্থানীয় সময় শনিবার ভোর থেকে উপাখ্যানে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে, যার মধ্যে কয়েকটি তীব্র আলো ও কমলা রঙের শেড দেখা গেছে। এই হামলায় অন্তত আটজন আহত হয়েছেন। পোল্যান্ডও এই হামলার প্রভাব থেকে রেহাই পায়নি; কিয়েভের কাছে তার বিমানবন্দরগুলো সাময়িকভাবে বন্ধ হয়, এবং পোল্যান্ডের সশস্ত্র বাহিনী আকাশে উড়ে গেছে বলে জানা গেছে। তবে রাশিয়া এই হামলার বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। এই অস্থির পরিস্থিতির মধ্যে শান্তির জন্য উদ্যোগ বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। জেলেনস্কি জানিয়েছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ২০ দফার শান্তি পরিকল্পনার প্রগ্রতি প্রায় পুরোপুরি সম্পন্ন হয়েছে এবং ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা নিয়ে আলোচনা চলছে। নতুন বছরের আগে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। ট্রাম্প এক সংবাদ মাধ্যমে বলেছেন, এই প্রক্রিয়ার মূল চালিকাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র। এদিকে, শনিবার ট্রাম্প ও জেলেনস্কি টেলিফোনে আলোচনা করবেন, সঙ্গে থাকবেন ইউরোপীয় নেতারা। ইউক্রেনের রাজধানীতে আরও একটি গুরুতর ঘটনা ঘটেছে—শক্তিশালী বিস্ফোরণের শব্দ ও আকাশে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সতর্কতা। কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিচকো জানান, আকাশ প্রতিরক্ষা বাহিনী কাজ করছে এবং সবাই আশ্রয়কেন্দ্রে থাকার আহবান জানান। ইউক্রেনের বিমানবাহিনী জানিয়েছেন, সারা দেশে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে হামলা চালানো হয়েছে। এতোসব ঝড়ঝঞ্ঝার মধ্যেও, রাজনৈতিক ও সামরিক পর্যায়ে শীর্ষপর্যায় আলোচনা এবং শান্তির লক্ষ্যে দেশের নেতারা নানা উদ্যোগ নিচ্ছেন। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এমন এক চুক্তির সম্ভাবনাও দেখছেন, যেখানে কিছু দখলকৃত ভূখণ্ড বিনিময়ের মাধ্যমে যুদ্ধ সমাপ্তির পথে এগিয়ে যেতে পারেন। ক্রেমলিনের সূত্র জানায়, পুতিন দনবাসসহ কিছু অঞ্চল রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য শক্তভাবে অটল। ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনায় পুতিন এমনও জানিয়েছেন, দনবাসের বাইরে অন্যান্য রুশ নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলের অদলবদল বা হস্তান্তরেও তার মত থাকতে পারে। অন্যদিকে, জেলেনস্কি বলেছেন, বর্তমানে চলমান ২০ দফার শান্তি পরিকল্পণা অগ্রগতি লাভ করেছে, তবে এখনও দনবাসের কিছু অংশ রুশ দখলে থাকায় বিষয়টি জটিলভাবে রয়ে গেছে। রাশিয়া ছাড়াও জাপোরিঝঝিয়া পারমাণবিক কেন্দ্র নিয়েও মতভেদ রয়েছে। এই সংকটের মধ্যে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী ইউরোপের ভয়াবহ এই সংঘাতের সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত ও তার প্রধান পরামর্শদাতা স্টিভ উইটকফসহ অন্যান্যরা শান্তির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন, যা ভবিষ্যতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়।