বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশে বেকারদের জন্য ১৫০.৭৫ মিলিয়ন ডলার ঋণ অনুমোদন Staff Staff Reporter প্রকাশিত: ৩:৩৬ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৭, ২০২৫ বাংলাদেশের স্বল্প আয়ের তরুণ ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য কর্মসংস্থান ও উন্নয়ন ব্যঙ্কের দিক থেকে একটি বড় উন্নয়ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিশ্বব্যাংক সম্প্রতি দেশের জন্য ১৫০.৭৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুমোদন দিয়েছে, যার মাধ্যমে কর্মক্ষেত্র সৃষ্টি, দক্ষতা উন্নয়ন এবং উপযুক্ত জীবনযাত্রার সুযোগ আরও বিস্তৃত হবে। এই অর্থের মাধ্যমে বিশেষ করে নারীরা ও জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার জনগোষ্ঠীর জন্য ব্যাপক গুরুত্ব দেওয়া হবে। এই অর্থায়ন মূলত ‘রিকভারি অ্যান্ড অ্যাডভান্সমেন্ট অব ইনফরমাল সেক্টর এমপ্লয়মেন্ট’ (রেইজ) প্রকল্পের আওতায় দেওয়া হচ্ছে, যার মাধ্যমে দেশের প্রায় ১ লক্ষ্য ৭৬ হাজার যুবক-যুবতীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এর আগে এই প্রকল্পের মাধ্যমে দুই লাখ ৩৩ হাজার মানুষ উপকৃত হয়েছেন। বিশ্বব্যাংকের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রকল্পে অংশগ্রহণকারীরা দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ, শিক্ষানবিশ (অ্যাপ্রেন্টিসশিপ), উদ্যোক্তা উন্নয়ন ও ক্ষুদ্র ঋণের সুবিধা পাবেন। এসব উদ্যোগ যুবকদের নিজেদের দক্ষতা ও ব্যবসা বাড়াতে সহায়তা করবে, যাতে তারা সহজে কর্মসংস্থান লাভ ও স্বাবলম্বী হতে পারেন। বিশেষ করে নারীদের ক্ষমতায়ন ও উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন উদ্ভাবনী উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে, যার মধ্যে রয়েছে মানসম্মত শিশুযত্ন (চাইল্ডকেয়ার) সেবা প্রদানের সুবিধা। এর পাশাপাশি জলবায়ু সহনশীল জীবনযাত্রার জন্য নানা কার্যক্রম চালু করা হবে, যাতে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার জনগণ জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব থেকে রক্ষা পায়। বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানবিষয়ক ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় পরিচালক গেইল মার্টিন বলেন, ‘একটি ভালো চাকরি একটি জীবন বদলে দিতে পারে। তবে দুঃখের বিষয়, বাংলাদেশে প্রতি বছর লক্ষ লাখ তরুণ কর্মসংস্থানের আলো দেখেন না। কর্মক্ষেত্রের মান, দক্ষতার পার্থক্য ও পেশাগত অঙ্গীকরণের চ্যালেঞ্জ বিদ্যমান।’ তিনি আরো বলেন, ‘এই অতিরিক্ত অর্থায়ন দেশের দরিদ্র পরিবারের আরও বেশি যুবক-যুবতী, বিশেষ করে নারীদের জন্য বাজারভিত্তিক দক্ষতা, প্রয়োজনীয় সম্পদ ও প্রশিক্ষণের সুযোগ সৃষ্টি করবে, যা তাদের জীবন মান উন্নত করবে।’ এই অর্থায়নের ফলে প্রকল্পের কার্যক্রম শহরকেন্দ্রিক সীমাকে ছাড়িয়ে গ্রামীণ এলাকাতেও সম্প্রসারিত হবে। ফলে অপ্রতুল সুযোগে থাকা প্রান্তিক যুবক-যুবতীরা সহায়তা পাবে। এছাড়া নারীদের জন্য মানসম্মত ও সাশ্রয়ী শিশুযত্ন সেবা চালু করে নারীদের কর্মসংস্থানে আরও গতি আনা হবে। এই উদ্যোগে শিশুদের প্রাথমিক স্বাস্থ্য ও বিকাশের ক্ষেত্রেও উন্নতি হবে। নারীদের আত্মবিশ্বাস ও ক্ষমতায়নের জন্য জীবনদক্ষতা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকবে। চাকরির জন্য আগাম প্রস্তুত করার জন্য কর্মসংস্থান মেলা, নিয়োগদাতাদের সঙ্গে সংযোগ, বিপণন ও চুক্তি আলোচনার মতো কার্যক্রম জোরদার করা হবে। বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র সামাজিক সুরক্ষা অর্থনৈতিক বিভাগ ও প্রকল্পের টিম লিডার আনিকা রহমান বলেন, ‘রেইজ প্রকল্প তরুণ ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জীবনে গৌরব ও পরিবর্তন আনে। এই নতুন অর্থায়নের মাধ্যমে আমরা আরও বেশি কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ, ক্ষুদ্রঋণের সুযোগ বাড়ানো ও মানসম্মত শিশুযত্নের মতো আধুনিক সমাধান চালু করতে পারব, যা তরুণ ও নারীদের জন্য সম্ভাবনার দিগন্ত উন্মোচন করবে।’ প্রকল্পটি ইতিমধ্যে উল্লেখযোগ্য সাফল্য দেখিয়েছে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষানবিশদের ৮০ শতাংশের বেশি তিন মাসের মধ্যে কাজে নিয়োজিত হয়েছেন। তরুণ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা আয় বৃদ্ধি ও ব্যবসার উন্নতি উল্লেখ করে থাকেন। ২০২১ সালে যাত্রা শুরু করের পর থেকে রেইজ প্রকল্প কোভিড-১৯ দুর্যোগের সময় ক্ষতিগ্রস্ত ৫০ হাজারের বেশি ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাকে পুনরায় চালাতে ঋণ ও প্রশিক্ষণ দিয়েছে, দুই লাখ পঞ্চাশ হাজারের বেশি প্রবাসীকে পুনঃএকত্রিকরণে সহায়তা করেছে এবং এক লাখ ২২ হাজারের বেশি উপকারভোগীকে বিভিন্ন অন্তর্ভুক্তিমূলক সেবা প্রদান করেছে। এর মধ্যে ৫৫ শতাংশ নারী রয়েছেন। অতিরিক্ত এই অর্থায়নের ফলে, এই সময়ের মধ্যে বিশ্বব্যাংকের মোট সহায়তার পরিমাণ দাঁড়াল ৩৫০.৭৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। SHARES অর্থনীতি বিষয়: