মিশ্র ফলের বাগান করে তরুণ শিক্ষকের সফলতা

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ৩:৩৯ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৬, ২০২৫

মাগুরা সদর উপজেলার দ্বারিয়াপুর গ্রামে এক তরুণ শিক্ষক নিজ উদ্যোগে গড়ে তুলেছেন একটি মিশ্র ফলের বাগান, যা 그의 নতুন সফলতার পথ তৈরি করেছে। সাদমান সাকির সোহাগ, তিনি আলাইপুর আলিম মাদ্রাসার শিক্ষক, তার বাবার রেখে যাওয়া সাতশো শতাংশ জমিতে এই বাগান গড়ে তুলেছেন। শিক্ষকদের পেশায় যা সাধারণত জীবিকা নির্বাহের জন্য কম হয়ে থাকে, সেখানে তিনি আরও বেশি আগ্রহ দেখিয়ে গাছ লাগানোর সিদ্ধান্ত নেন। ২০২০ সাল থেকে শুরু হয় তার এই বাগান উদ্যোগ, যেখানে তিনি বিভিন্ন দেশি-বিদেশি ফলের গাছ লাগিয়েছেন – যেমন বারোমাসি কমলা, মাল্টা, পেয়ারা, পেঁপে, সফেদা, কদবেল, ডালিম, আমড়া, ও বিভিন্ন প্রকার ফল। এর পাশাপাশি তিনি পুকুর কেটে মাছের চাষ শুরু করেছেন, যেখানে রয়েছে রুই, কাতলা, মৃগেলসহ নানা প্রজাতির মাছ। বিশেষ করে কমলার চাষে তার ব্যাপক সফলতা এসেছে। প্রথমে ৪০০ চারা নিয়ে বাগান শুরু করেছিলেন, এখন সেখানে ১৪০০ কমলার গাছ রয়েছে। ফলনের মাধ্যমে তিনি প্রতি মৌসুমে এক থেকে দেড় লাখ টাকা লাভ করেন, যেখানে প্রতি কেজি কমলা বিক্রি হয় ২০০-২২০ টাকায়। তার এই উদ্যোগের কারণে তিনি শুধু নিজের জীবিকা নির্বাহ בלבד করে থাকেন না, নতুন তরুণদের জন্য অনুপ্রেরণাদায়ক একজন উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। তিনি জানান, মাঠে পানি সরবরাহের জন্য তিনি ১৪ হাজার ৪০০ ওয়ার্ডের সোলার প্যানেল বসিয়েছেন, যা দিয়ে ১১ হর্স পাওয়ারের মোটর চালানো হয় এবং আশেপাশের আরও ২০০ বিঘা জমির জল সরবরাহ হয়। সোহাগ বলছেন, আমি শিক্ষকতাকে আমার পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছি, তবে গাছ লাগানোর শখ আমার ছিল ছোট থেকেই। আমি চাই আমার মতো আরও শিক্ষিত তরুণরা স্বাবলম্বী হোক, বাড়িতে বা আশেপাশে যতটুকু জায়গা আছে সেখানে কিছু গাছ লাগাক। এতে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় থাকবে এবং দেশের বেকারত্বও কমে যাবে। কমলা চাষে কর্মরত ইকরামুল বলেন, আমাদের প্রতিদিন গাছের যত্ন নিই, ফল সংগ্রহ করি এবং বিক্রি করি। সোহাগ ভাই আমাদের প্রতিদিনের মজুরি দিয়ে থাকেন, যা থেকে আমাদের সংসার চলে। তাঁর বাগানের কমলা খুবই সুস্বাদু, রসালো, এবং মাগুরার বাজারে চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। ড্রাইভার বলেছেন, আমরা প্রতি বছর কমলা ক্যারেটে করে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রির জন্য নিয়ে যাই। মাগুরা কৃষি বিভাগের নবাগত কর্মকর্তা মাসুদ রানা জানিয়েছেন, তরুণ উদ্যোক্তা হিসেবে সাদমান সাকিব সোহাগের এই উদ্যোগ অবশ্যই প্রশংসার যোগ্য। কৃষি বিভাগ সব সময় এই ধরনের উদ্যোক্তাদের পাশে থাকছে এবং পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়ে চলেছে।