অবৈধ পণ্য আটকানোর জন্য কাস্টমসের ওপর হামলা

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ৩:৩৯ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৬, ২০২৫

চট্টগ্রামে অবৈধ পণ্য বাতিল এবং রাজস্ব ফাঁকি ঠেকানোর জন্য কাস্টমস কর্মকর্তাদের কঠোর উদ্যোগের কারণে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। দেশের রাজস্ব বোর্ড-এনবিআর মনে করছে, এই কঠোর অভিযান চালানোর প্রতিবাদে রুষ্ট কিছু পক্ষ চট্টগ্রামের দুই কাস্টমস কর্মকর্তার ওপর হামলা চালাতে পারে। শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এনবিআর জানায়, রাজস্ব ফাঁকি রোধে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণের পর এসব কর্মকর্তাকে লক্ষ্য করে এই হামলা হয়েছে।

ঘটনাটি ঘটে বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে, চট্টগ্রামের সিডিএ আবাসিক এলাকায়। তখন কাস্টমসের দুই কর্মকর্তা বহনকারী একটি প্রাইভেট কারে মোটরসাইকেলে করে যাচ্ছিলেন। সেই সময় তিনজন যুবক মোটরসাইকেলে এসে তাদের গাড়িতে হামলা চালায়। তারা চাপাতি দিয়ে গাড়ির জানালা ভাঙচুর করে ও গুলি করার হুমকি দেয়।

আসাদুজ্জামান খান, চট্টগ্রাম কাস্টমসের এআইআর শাখার রাজস্ব কর্মকর্তা এবং সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা বদরুল আরেফিন ভূইয়া, এই গাড়ি নিয়ে কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন। তিনি বলেন, এই হামলার পেছনে শর্ষে কারণ মিলছে – কাস্টমসের নিয়মিত অবৈধ পণ্য অনুসন্ধানের কারণে ক্ষুব্ধ এক পক্ষ এই হামলা চালাতে পারে। তিনি আরো বললেন, বিভিন্ন সময় তারা আমদানি নিষিদ্ধ বিভিন্ন পণ্য আটক করায় দুষ্কৃতি এই ধরনের হুমকি-ধামকি দিচ্ছে এবং মোবাইল ফোনে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। এ বিষয়ে তিনি গত ৫ অক্টোবর বন্দর থানায় জিডি করেছেন।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি চট্টগ্রাম কাস্টমস বিভিন্ন ধরণের নিষিদ্ধ পণ্য যেমন ১০ কোটি টাকার ঘনচিনি, পপি বীজ, ও বিপুল পরিমাণ বিদেশি সিগারেট জব্দ করে। গত মে মাসে ৩০ কোটি টাকার নিষিদ্ধ সিগারেটের চালানও আটক হয়। এই সব খাদ্য ও সিগারেটের চালান আটকানোর ফলে ক্ষুব্ধ একটি পক্ষ বিভিন্ন সময় মোবাইল ফোনে হুমকি দিয়ে আসছে বলে জানা গেছে।

এনবিআর এর বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চট্টগ্রামের বন্দরে বিভিন্ন শেডকেন্দ্রিক একটি জালিয়াত চক্র ‘মিথ্যা ঘোষণা’ করে নানা জনের পণ্য আমদানির সুবিধা নিয়ে অবৈধভাবে চালান আটকাচ্ছে। ৫ অক্টোবর, এই জালিয়াতচক্রের এক সদস্য রাজস্ব কর্মকর্তাদের হোয়াটসঅ্যাপে ফোন করে ভয়ভীতি দেখায় ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়। পরের দিন, অর্থাৎ ৬ অক্টোবর, সেই বিষয়ে বন্দর থানায় জিডি করেন কর্মকর্তারা।

চট্টগ্রাম কাস্টমসের উপকমিশনার তারেক মাহমুদ জানিয়েছেন, বন্দরে কিছু সিন্ডিকেট মিথ্যা ঘোষণার মাধ্যমে বা অবৈধ পণ্য আমদানির মাধ্যমে খালাসের সঙ্গে জড়িত। গত দুই মাসে এই ধরনের বেশ কিছু চালান আটক করা হয়েছে। এই সব ঘটনায়, তিনি বলেছেন, ভুক্তভোগী কর্মকর্তারা অভিযানের অংশ হিসেবে থাকায় খুবই ক্ষুব্ধ হয় এই ডাইনামিক সিন্ডিকেট সদস্যরা। ফলে, তারা এই হামলার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে।

তিনি নিজেও বিভিন্ন সময় ফোনে হুমকি পেয়েছেন বলে উল্লেখ করেন। এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার রাতেই মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুরো ঘটনায় তদন্ত চলছে এবং এই হামলাকে স্পর্শ করে এমন যারা প্রভাব ফেলতে চেয়েছে, তাদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষ।