ঢাকায় শুরু হয়েছে চামড়া শিল্পের বৃহৎ প্রযুক্তি প্রদর্শনী

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ৩:৩৭ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৫, ২০২৫

চামড়া শিল্প, আধুনিক জুতা তৈরির যন্ত্রপাতি, জুতার উপকরণ, রাসায়নিক দ্রব্য ও আনুষঙ্গিক পণ্যের সমন্বয়ে বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী ‘লেদারটেক বাংলাদেশ’ শুরু হয়েছে। এটি রাজধানীর আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটি বসুন্ধরা (আইসিসিবি) এর এক্সপো ভিলেজে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যেখানে দেশের অন্যতম বড় এই শিল্পের ১১তম আসর উদ্বোধন করা হয় বৃহস্পতিবার।

প্রদর্শনীতে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন, যিনি বলেন, বাংলাদেশে চামড়া শিল্প এখনও তার পূর্ণ সম্ভাবনার দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। লেদারটেকের মতো এই ধরনের আয়োজন শুধুমাত্র প্রদর্শনী নয়, বরং শিল্পের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের এক চমৎকার প্রয়াস। তিনি প্রত্যাশা করেন, সরকারী ও বেসরকারি উদ্যোগের সমন্বয়ে বাংলাদেশ এই শিল্পে আরও অগ্রগতি করবে।

এছাড়া, লেদারগুডস এবং ফুটওয়্যার উৎপাদন ও রপ্তানি খাতের সংগঠনের সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ এখন রপ্তানি ভিত্তিক চামড়া শিল্পের এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। নীতিমালা ও প্রযুক্তিগত উন্নতির মাধ্যমে এই শিল্প আরও শক্তিশালী হবে বলে তিনি আশাবাদী।

বিএফএলএলএফইএর চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ মাহিন বললেন, চামড়া ও জুতা শিল্প আমাদের দেশের অন্যতম বড় রপ্তানির ক্ষেত্র। এই প্রদর্শনী আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদের অবস্থান আরও দৃঢ় করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

অ্যানোজক সংস্থা এএসকে ট্রেড অ্যান্ড এক্সিবিশনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক টিপু সুলতান ভূঁইয়া জানান, এবারের আসরে বাংলাদেশের পাশাপাশি ভারত, পাকিস্তান ও চীনসহ মোট আটটি দেশের প্রায় ২০০ কোম্পানি তাদের উন্নত পণ্য প্রদর্শন করবেন। তাদের মধ্যে রয়েছে দেশের প্রধান শিল্প সংগঠনগুলো, যা শিল্পের বিভিন্ন দিক দিয়ে সহযোগিতা করছে।

‘লেদারটেক বাংলাদেশ’ এর যাত্রা শুরু হয়েছিল ১১ বছর আগে, তখন এটি ছিল প্রযুক্তি ভিত্তিক একটি প্ল্যাটফর্ম যা দেশের শিল্প উদ্যোক্তাদের জন্য বিশ্বব্যাপী জুতার, ভ্রমণের আনুষাঙ্গিক ও সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তি প্রদর্শনের লক্ষ্য নিয়ে। সময়ের সাথে সাথে, এই আয়োজন বাংলাদেশের চামড়া, জুতা ও সংশ্লিষ্ট খাতে উদ্ভাবন ও বাজার সম্প্রসারণের অন্যতম নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হয়ে উঠেছে। এর মাধ্যমে এক দশক ধরে শিল্পের উন্নয়ন ও নেটওয়ার্ক তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে।

বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানি খাত হিসেবে চামড়া ও জুতা শিল্পের অবস্থান তৈরি হয়েছে। এই শিল্প বিশ্বে চামড়াজাত পণ্যর ৩ শতাংশ ও মোট চামড়ার প্রায় ১০ শতাংশ চাহিদা পূরণ করে। শিল্পনীতি ২০২২ এর আওতায় এটি বহুমুখী রপ্তানি প্রবৃদ্ধির অগ্রাধিকার খাতে পরিণত হয়েছে, যা এই খাতকে বৈশ্বিক রূপে আরও জনপ্রিয় করে তুলছে।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য মতে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের অক্টোবরের মধ্যে, এই শিল্পের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছে। গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ৯ দশমিক ৭ শতাংশ, যা ৫৯১.৫ মিলিয়ন ডলার। সাম্প্রতিকMonths অবস্থা ঠিক হয়ে আসার ফলে এই শিল্প ধীরে ধীরে স্বাভাবিক ধারায় ফিরে আসছে। এটি দেশের রপ্তানি বহুমুখীকরণে এবং টেকসই ও বৈশ্বিক ক্ষেত্রে শক্ত অবস্থান গড়তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

প্রদর্শনীটি চলবে ৪ থেকে ৬ ডিসেম্বর, সকাল ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত। দর্শনার্থীরা বিনামূল্যে এই প্রদর্শনী উপভোগ করতে পারবেন।