ফ্যাসিস্ট চক্রের অগ্নিসন্ত্রাস ও নাশকতার ছক টেলিগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপে ফাঁস

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ৩:৩১ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৪, ২০২৫

ঢাকায় অগ্নিসন্ত্রাস ও ককটেল বিস্ফোরণের পরিকল্পনাসহ জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করার জন্য বিভিন্ন ধরনের নাশকতা চালানোর অভিযোগে নিষিদ্ধ সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে নিরলস অভিযান চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। রমনা বিভাগের পুলিশ সদস্যরা মঙ্গলবার বিভিন্ন অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছেন। এসব তথ্য তিনি বুধবার গণমাধ্যমের কাছে তাৎক্ষণিকভাবে প্রকাশ করেন।

ঘটনার সূত্রপাত ৩০ অক্টোবর, ধানমন্ডি ২৮ নম্বর সড়কের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইনস্টিটিউটের গলির মুখে। সে দিন প্রচারের প্রস্তুতি নিচ্ছিল নিষিদ্ধসংগঠনের একটি মিছিল। পুলিশ ওই সময় ধানমন্ডি থানা থেকে তৎক্ষণাৎ অভিযান চালিয়ে দুইজনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন— হাজারীবাগ-ধানমন্ডি এলাকার যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শওকত ওসমান বাবু ও মিলন খান। বাবু ধানমন্ডি ২২ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং মিলন ঢাকাবিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হল ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি।

পুলিশ বলছে, শওকত ওসমান বাবু দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় দমন-পীড়নের জন্য কুখ্যাত। ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্রদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালানোর সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতা ছিল। রাষ্ট্রপতির পতনের পর তিনি কয়েকদিনের জন্য দেশের বাইরে পালিয়ে গিয়েছিলেন, তবে সম্প্রতি মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফিরে এসে নতুন করে নাশকতার পরিকল্পনা শুরু করেন। তাদের মোবাইল থেকে বিভিন্ন ভিডিও, ককটেল বিস্ফোরণের ছবি, বাসে অগ্নিসংযোগের লাইভ ফুটেজ এবং নাশকতার নির্দেশনা পাওয়া গেছে। বিশেষ করে ১৬ নভেম্বর বিল্লীবাঁধ এলাকায় বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় শওকত ওসমান বাবুর সরাসরি অংশগ্রহণ ও অর্থায়নের প্রমাণ পাওয়া গেছে।

অন্যদিকে, গ্রেপ্তার অন্য একজন আসামি মিলন খান নড়াইলের জয়নগর ইউনিয়নের বাসিন্দা। তিনি ঢাকায় বিভিন্ন এলাকায় নাশকতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছিলেন। মোস্ট গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, তিনি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি স্বপন ও যুগ্ম আহ্বায়ক সাব্বির শেখের কাছ থেকে নির্দেশনা নিতেন ও তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। বিভিন্ন জেলা থেকে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের এনে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় নাশকতা চালানো ও ঝটিকা মিছিলের পরিকল্পনা করতেন।

অপর গ্রেপ্তার ব্যক্তি সাব্বির শেখ ঢাকা মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক। তিনি স্বপনের কাছাকাছি একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা। সাব্বির বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীদের ডেকে এনে ঢাকার বাসে অগ্নিসংযোগ, ককটেল বিস্ফোরণ ও নাশকতার নির্দেশনা দিতেন। ২৮ নভেম্বর ধনমন্ডির মিছিলের প্রস্তুতিতে নেতৃত্ব দেন, কিন্তু পরে পালিয়ে যান। তবে পুলিশ ও প্রযুক্তির সহায়তায় তিনি সেখানে থেকে গ্রেপ্তার হন।

পুলিশের মোবাইল ফোন বিশ্লেষণে জানা গেছে, বিভিন্ন অনলাইন গ্রুপে— যেমন ‘আস্থায় শেখ হাসিনার যুবলীগ ঢাকা দক্ষিণ’, ‘দরবার হল গ্রুপ’, ‘বাঙালি বাংলাদেশ’, ‘২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউ’— নাশকতার পরিকল্পনা, ককটেল ও বিস্ফোরকের ছবি, অর্থের লেনদেন ও বাসে আগুন দেয়ার ভিডিওর প্রমাণ পাওয়া গেছে।

আরও জানানো হয়, রূপনগর, হাজারীবাগ, ধানমন্ডি সহ কয়েকটি এলাকায় অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় তাদের সরাসরি সম্পৃক্ততা রয়েছে। এ সকল ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার বিষয়গুলো চলমান তদন্তের মাধ্যমে প্রমাণিত হচ্ছে।