ইইউ বাজারে প্রবেশাধিকার বৃদ্ধিে ট্রেসেবিলিটি উন্নয়নে আলোচনা অনুষ্ঠিত Staff Staff Reporter প্রকাশিত: ৩:৩৭ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২, ২০২৫ জার্মানির উন্নয়ন সংস্থা জিআইজেডের সহযোগিতায় ‘এসটিআইএলই-দ্বিতীয়’ প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশে পণ্যের ট্রেসেবিলিটি উন্নয়নের জন্য এক উচ্চপর্যায়ের নীতিগত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে। এই আলোচনা মূলত ইইউ বাজারের পরিবর্তনশীল বিধিনিষেধ এবং এলডিসি উত্তরণের পরবর্তী চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলার জন্য বাংলাদেশের রপ্তানি সক্ষমতা ধরে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুর রহমান। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, উন্নত ট্রেসেবিলিটি ব্যবস্থার মাধ্যমে রপ্তানির বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ানো, সার্কুলার ইকোনমি প্রচার করা এবং বৈশ্বিক বাজারে টেকসই উন্নয়ন এবং দায়িত্বশীল ব্যবসায়িক আচরণ নিশ্চিত করা সম্ভব। বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্ট (বিল্ড) সংস্থাটি গবেষণা ও বিষয়ভিত্তিক সহায়তা প্রদান করে এই বিষয়ে। বিল্ডের প্রধান নির্বাহী ফেরদৌস আরা বেগম জোর দিয়ে বলেন, ট্রেসেবিলিটি এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় অগ্রাধিকার। তার মতে, বৈশ্বিক বাজারের চাহিদা ও ইইউয়ের সার্কুলার ইকোনমি, ডিজিটাল প্রোডাক্ট পাসপোর্ট (ডিপিপি), দায়িত্বশীল ব্যবসায়িক আচরণ এবং টেকসই উন্নয়নের জন্য এই ব্যবস্থা অপরিহার্য। বিশেষ করে, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় খাত— তৈরিপণ্য (আরএমজি)-এর উপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে ইইউ গ্রীন ডিলের শর্তাবলির সঙ্গে মানিয়ে নিতে হলে দ্রুত ট্রেসেবিলিটি ব্যবস্থায় সমন্বয় আনতে হবে। বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান একটি ‘জাতীয় ট্রেসেবিলিটি কৌশল’ প্রণয়নের ঘোষণা দেন, যেখানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় খাতভিত্তিক ট্রেসেবিলিটি পাইলট প্রকল্প চালু করবে। এ বিষয়ে জিআইজেড প্রযুক্তিগত সহায়তা দেবে। আলোচনায় বিভিন্ন বড় চ্যালেঞ্জও তুলে ধরা হয়, যেমন- অপর্যাপ্ত খরচ, প্রতিষ্ঠানগুলোর পারস্পরিক সমন্বয় ও তথ্য যাচাই। ভিয়েতনাম, চীন, জাপান, কোরিয়া ও ভারতের উদাহরণ উল্লেখ করে বিল্ড বলেছে, সরকারি-ব্যবসায়িক যৌথ বিনিয়োগের মাধ্যমে শক্তিশালী ট্রেসেবিলিটি ইকোসিস্টেম প্রতিষ্ঠা অপরিহার্য। বিল্ড বৈশ্বিক বাস্তবতা বিশ্লেষণ করে সুপারিশ করে, খাতভিত্তিক পদক্ষেপ নেওয়া যেমন— সবুজ অর্থায়ন চালু, তথ্য অবকাঠামো সম্প্রসারণ, এবং জরুরি ঝুট খাতের ডিরেক্টরি তৈরি। সচিব মাহবুবুর রহমান ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের অবকাঠামো গঠনের গুরুত্বের ওপর জোর দেন। তিনি জার্মানির উদাহরণ উল্লেখ করে বলেন, এ ধরনের উদ্যোগে উন্নয়ন সহযোগীদের সমর্থন প্রয়োজন। বর্তমানে, পোশাক শিল্পের উদ্যোক্তারা ক্রেতা, ব্র্যান্ড ও কনসালট্যান্টের কাছ থেকে তথ্য চাহিদা পূরণে সমস্যায় পড়ছেন, কারণ প্ল্যাটফর্মে মানসম্মত ও বৈশ্বিক মানসম্পন্ন তথ্যের অভাব রয়েছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অর্গানাইজেশনের (বিজিএমইএ) পরিচালক শেখ এইচ এম মোস্তাফিজ বলেন, একটি সম্মিলিত জাতীয় মান বা নির্দেশিকা তৈরির মাধ্যমে এই প্রক্রিয়া সহজ হবে এবং ব্যয় কমবে। জার্মান দূতাবাসের প্রথম সচিব জান্নিস হোসেন বলেন, তথ্যের প্রাপ্যতা ও ডিজিটাল অবকাঠামোর জন্য খরচের বিষয়টি বড় প্রতিবন্ধকতা। বিজিএমইএ, বিকেএমইএ ও চামড়া খাতের প্রতিনিধিরা চলমান খাতভিত্তিক পাইলট প্রকল্পের অগ্রগতি জানান। তবে, এসব প্রকল্পের সম্প্রসারণ প্রয়োজন, যাতে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সবাই অন্তর্ভুক্ত হয় এবং পুরোপুরি ট্রেসেবিলিটি নিশ্চিত হয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নতুন একটি বহুপাক্ষিক সংলাপ প্ল্যাটফর্ম চালু করেছে, যা রপ্তানি বিভাগের নেতৃত্বে পরিচালিত হবে। এতে সরকারি-বেসরকারি খাতের সদস্যরা অংশ নেবেন। এে একজন সরকারি প্রতিনিধি, রপ্তানি বিভাগের প্রধান আব্দুর রহিম খান থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার দৃষ্টান্ত তুলে ধরে একটি জাতীয় প্রকল্প বাস্তবায়ন ইউনিট (পিআইইউ) গঠনের প্রস্তাব দেন। অপরদিকে, পরিকল্পনা বিভাগের যুগ্ম সচিব মোস্তফা জামাল হায়দার বলছেন, উন্নত ট্রেসেবিলিটি বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিশেষভাবে সহায়তা করতে পারে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সরকারি কর্মকর্তা, উন্নয়ন সহযোগী, শিল্প নেতৃবৃন্দ ও সংশ্লিষ্ট খাতের প্রতিনিধিরা। SHARES অর্থনীতি বিষয়: