প্রোটিয়াদের ইতিহাসে প্রথমবার এভাবে ভারতকে পরাজিত করল দক্ষিণ আফ্রিকা

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ৩:৪৩ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৭, ২০২৫

দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে নিজেদের মাঠে ভয়ংকর পারফরম্যান্স করে ইতিহাসে নতুন এক অধ্যায় সৃষ্টি করেছে প্রোটিয়ারা। ভারতবাসীর জন্য এই টেস্টে ছিল এক ভয়ঙ্কর স্বাদ, যা তাদের জন্য ছিল অত্যন্ত অপ্রত্যাশিত। কলকাতা এবং গুয়াহাটির মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে খুব সহজভাবে হারতে হলো ভারতকে। ভারতের জন্য এই হারে রেকর্ডসের সবখানে একটি ভিন্ন নাম যোগ হলো। ইডেন গার্ডেনে মাত্র দুই দিনে শেষ হয়ে গেল ভারত-আফ্রিকার ঐতিহাসিক এই টেস্ট। গুয়াহাটির টেস্টের পঞ্চম দিনের খেলা শুরু হয় স্বাগতিকদের সংগ্রামের মধ্য দিয়ে, তবে শেষ পর্যন্ত তারা ৪০৮ রানে হার মানে। এটি ভারতের জন্য টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ব্যবধানে হারের রেকর্ড। এর আগে ভারতের সবচেয়ে বড় হার ছিল ২০০৪ সালে নাগপুরে, যেখানে তারা অস্ট্রেলিয়াকে ৩৪২ রানে হারিয়ে ছিল। বলিউডের তারকা ক্রিকেটাররা যেমন জেসন গিলেস্পি এবং গ্লেন ম্যাকগ্রা দুরন্ত বল করেন, তেমনি ভারতের রানের ডেপথে গেড়ানো ভেঙে যায়। দ্রাবিড়, শচীন ও অন্যান্য কিংবদন্তির দল দুর্বল হতে থাকে, যেখানে দ্বিতীয় ইনিংসে পাকিস্তানের কাছে ৩৪১ রানে হেরেছিল ভারত। সেই ঘটনাগুলোও কিছুমাত্র ছাপিয়ে গেল এই হারের। ভারতকে দিল এই হারের জোড়া ধাক্কা, যেখানে তাদের লক্ষ্য ছিল এক দিনের মধ্যে ড্র বা হার না মানা। শেষ দিন স্বাগতিকরা ৮ উইকেট হাতে রেখে ২৭ রানে শুরু করে। কিন্তু ভারত মাত্র ১৪০ রানে অলআউট হয়ে যায়। ফলাফল, গুয়াহাটির এই টেস্ট জয় লাভ করে দক্ষিণ আফ্রিকা। এই হার শুধু একটি ম্যাচের হার নয়, ভারতের ঘরের মাঠে হোয়াইটওয়াশের ঘটনা এবারের মতোই এটি প্রায় ২৫ বছর পরে ঘটা ঘটনা। ২০০০ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত ভারতকে তাদের মাটিতে হোয়াইটওয়াশ করেছে কেবল অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড এবং দক্ষিণ আফ্রিকা। এই তিন দলের মধ্যে বিশেষ করে কোচ ও অধিনায়কের দায়িত্বে থাকা প্রোটিয়ারা এই রেকর্ড রেকর্ড করে ইংরেজদের স্বপ্ন রঙিন করে দিয়েছে। বর্তমানে, দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্ব টেস্ট ক্রিকেটের অন্যতম শক্তিশালী দল হিসেবে নিজেদের প্রমাণ করেছে, যেখানে ক্রিকেটের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হিসেবে তাদের ইতিহাস আছে। হ্যান্সি ক্রনিয়ের পর, প্রোটিয়া অধিনায়ক হিসেবে বাভুমাই নতুন নজির সৃষ্টি করেছেন। ১২টি টেস্টে তাদের নেতৃত্ব দিয়ে তার জয়সংখ্যা অন্য সব অধিনায়কের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। প্রথম ১২ ম্যাচে তিনি ১১টি জয় ধরে রেখেছেন। অন্যদিকে, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মত শক্তিশালী দেশগুলোর ক্রিকেটে দ্রুত অগ্রগতি করতেও তারা সক্ষম হয়েছে। তবে এই খারাপ মুহূর্তে ভারতের জন্য বড় সতর্কবার্তা। যেখানে তারা ঘরের মাঠে প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় হেরেছে, সেখানে পরবর্তী দুঃসময়ও হতে পারে। এই হারের পাশাপাশি, ভারতের ব্যাটসম্যানরা এই সিরিজে কোনো এক সেঞ্চুরি করতে পারেননি, যা সর্বশেষ ১৯৯৫-৯৬ সালে দেখা গিয়েছিল। প্রোটিয়াদের বিরুদ্ধে এই সিরিজে ভারতের গড় ব্যাটিং পারফরম্যান্স ছিল খুবই দুর্বল, যেখানে গড় ছিল ১৫.২৩। এটি পূর্বে ২০০২/০৩ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ভারতের সর্বনিম্ন গড় ছিল। এভাবে একসঙ্গে একই বছর বা দুই বছর মধ্যে দুইটি সিরিজ হারার ঘটনা বিরল ঘটনা। ১২ বছর ধরে তারা ঘরের মাঠে কোনো সিরিজে হেরেনি, কিন্তু এবারই প্রথম এমন ঘটনা ঘটল। গত বছর নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরেছিল ভারত, আর এবার একেবারে মাঠের বাইরে থেকে ধবলধোলাই করে দিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। এই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের ফলাফল শুধুমাত্র ক্রিকেটের ইতিহাসে নয়, ভারতের ক্রিকেটেরও ভবিষ্যত পরিকল্পনায় বড় পরিবর্তন আনার জন্য সতর্কবার্তা হয়ে থাকবে।