গাজায় ৫০০ বার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে ইসরায়েল Staff Staff Reporter প্রকাশিত: ৩:৪৬ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৫, ২০২৫ গাজায় গত ১০ অক্টোবর যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ৪৪ দিনে ইসরায়েলি বাহিনী কমপক্ষে ৪৯৭ বার এই আপস লঙ্ঘন করেছে। এর ফলে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস এ তথ্য নিশ্চিত করেছে, খবর আল জাজিরার। ইসরায়েলি সেনারা যুদ্ধবিরতি ভেঙে দফায় দফায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে, এতে প্রায় ৩৪২ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছে। নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু, নারী এবং বয়স্ক। গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর এই গুরুতর ও পদ্ধতিগত যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে। তাদের মতে, এসব হামলা আন্তর্জাতিক মানবিক আইন ও চুক্তির স্পষ্ট লঙ্ঘন। গত শনিবার বিভিন্ন দফায় ২৭ বার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করা হয়েছে, এর ফলে ২৪ জন নিহত ও ৮৭ জন আহত হয়েছেন। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ইসরায়েলি এই হামলার কারণে ফিলিস্তিনিরা মানবিক ও নিরাপত্তাগত বিপদে পড়েছেন, এ জন্য ইসরায়েলই দায়ী। শনিবার গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলা চালায়, সেখানেও শিশুসহ কমপক্ষে ২৪ ফিলিস্তিনি নিহত হন। প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানিয়েছে, গাজার কালো রেখার অভ্যন্তরে হামাসের একজন যোদ্ধা ইসরায়েলি সেনাদের ওপর আক্রমণ করার পর এই সামরিক অভিযান চালানো হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, হামাসের শীর্ষ পাঁচ সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে। তবে হামাস এ বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি। অন্যদিকে, ইসরায়েলি কারাগারে এক নারীর বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। ইসলামি সংবাদ সংস্থা তাসনিমের রিপোর্ট অনুযায়ী, ১১০ দিন ধরে তিনি ইসরায়েলি কারাগারে বন্দি আছেন। তিনি হলেন, পশ্চিমতীরের আল-খালিল শহরের তাসনিম নিউজ এজেন্সির ফিলিস্তিনি রিপোর্টার ফারাহ আবু আয়্যাশ। ৬ আগস্ট তাকে হেব্রোনের বেইত উম্মার গ্রামে গ্রেফতার করা হয়, এরপর উত্তর কাবুল ডিটেনশন সেন্টারে স্থানান্তরিত করা হয়। তার বিরুদ্ধে নির্যাতন, হয়রানি ও হামলার গুরুতর অভিযোগ ওঠে। তাসনিম নিউজ এজেন্সি তার মামলার অনুসন্ধান শুরু করে, কিন্তু বিভিন্ন পদক্ষেপে তারা এটি প্রকাশে বিলম্ব করে। তবে, ফারাহর ভয়াবহ কারাগার জীবন ও তার আইনজীবীর সঙ্গে আলোচনার পর এই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। চলমান যুদ্ধবিরতির মধ্যেই গাজায় নতুন করে আঘাত হেনেছে ইসরায়েল, এতে শিশুসহ ২৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ৮৭ জন। আল জাজিরা মঙ্গলবার এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, প্রথম হামলাটি হয় উত্তর গাজা সিটিতে একটি গাড়িতে, এরপর দেইর আল-বালাহ ও নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরেও হামলা চালানো হয়। রিমাল এলাকায় ড্রোন হামলায় অন্তত ১১ জন নিহত ও ২০ জন আহত হয়েছেন। দেইর আল-বালাহতে একটি বাড়িতে হামলায় তিনজন নিহত হন, যেখানে একজন নারীও রয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, হামলার সময় ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। গাজার সরকারি গণমাধ্যম বলছে, ১০ অক্টোবর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ইসরায়েল এই কটি বার লঙ্ঘন করেছে। এসব হামলায় ৩৪২ জন সাধারণ মানুষ নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু, নারী ও প্রবীণ। বিবৃতিতে বলা হয়, ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর এই ধারাবাহিক ও গুরুতর লঙ্ঘন আন্তর্জাতিক মানবিক আইন ও চুক্তির সম্পূর্ণ বিরোধী। তবে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর দপ্তর দাবি করে, গাজার হামাসের একজন যোদ্ধা সেনাদের ওপর আক্রমণ করার পর এই অভিযান চালানো হয়। হামাস এ ঘটনার জন্য মধ্যস্থতাকারীদের হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়ে জানিয়েছে, ইসরায়েলি সরকার গাজায় তাদের অবস্থানের নির্ধারিত হলুদ রেখার পশ্চিমে অগ্রসর হয়েছে এবং যুদ্ধবিরতি এলাকার সীমা পরিবর্তন করছে। তারা দ্রুত হস্তক্ষেপের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আবেদন জানিয়েছে। SHARES আন্তর্জাতিক বিষয়: