বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ইসলামের আদর্শে ইনসাফভিত্তিক দেশ গড়ার প্রতিশ্রুতি: তারেক রহমান

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ৩:৩৪ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৫, ২০২৫

আরো ইনসাফভিত্তিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আসন্ন নির্বাচনে আলেম-ওলামাদের দোয়া ও সমর্থন চেয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, দেশে ও রাষ্ট্রে বিএনপির মূলমন্ত্র হবে ন্যায়পরায়ণতা। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)–এর ন্যায়পরায়ণতার আদর্শকে অনুপ্রেরণা হিসেবে নিয়ে আগামীর ইনসাফভিত্তিক বাংলাদেশ গড়ার জন্য তিনি দেশের সব ইমাম, খতিব, মুয়াজ্জিন ও আলেম-ওলামা মাশায়েখের দোয়া ও সমর্থন চাইছেন।

রোববার বিকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে সংঘঠিত জাতীয় সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা জানান, যা অনুষ্ঠিত হয়েছিল সম্মিলিত ইমাম খতিব পরিষদ আয়োজিত।

তারেক রহমান বলেছেন, দীর্ঘ দশকের ত্রুটিপূর্ণ শাসন ও শোষণের ফলে প্রমাণ হয়েছে, ইসলামের মূলনীতি এবং দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় একে অন্যের সাথে ঐক্য অপরিহার্য। তিনি আরও বলেন, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব সুসংহত করতে আগামী নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ।

তিনি জানান, বিএনপি এমন একটি সমাজব্যবস্থার পক্ষে, যেখানে মুসলমানরা বিনা সংকোচে কুরআন ও সুন্নাহর উপর ভিত্তি করে জীবন পরিচালনা করতে পারবে, নিরাপদে ইবাদত করতে পারবে। একইভাবে অন্য ধর্মের অনুগতরাও স্বচ্ছন্দে ও নিশ্চিন্তে তাদের ধর্ম ও সংস্কৃতি পালন করতে পারবে।

তারেক রহমান মনে করেন, সমাজে সংস্কারকারী ইমাম, খতিব ও মুয়াজ্জিনদের মধ্যে যারা আর্থিকভাবে পিছিয়ে রয়েছেন, তাদের জন্য রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে আর্থিক সহায়তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের একটি দায়িত্ব। তিনি জানান, বিএনপি ভবিষ্যতে প্রতিমাসে এ ধরনের প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের জন্য নির্দিষ্ট অর্থনৈতিক সহায়তা ও ভাতা চালু করার পরিকল্পনা করেছে। পাশাপাশি, ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের আর্থিক স্বাবলম্বী করতে ‘ইমাম-মুয়াজ্জিন কল্যাণ ট্রাস্ট’কে শক্তিশালী করে বহুমুখী প্রকল্প গ্রহণের পরিকল্পনাও রয়েছে।

তিনি বলেন, ইমাম-খতিব পরিষদের কয়েকটি প্রধান দাবিকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পূরণে রাষ্ট্রের সব রকম সম্ভবনা আছে। বিশেষ করে, চাকরির নিয়ম বা সার্ভিস রুল তৈরির দাবিটি অত্যন্ত যৌক্তিক। বর্তমানে অনেক মসজিদে ইমাম ও মুয়াজ্জিনের চাকরি নির্ভর করে সংশ্লিষ্ট মসজিদ কমিটির ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর— যা বদলানো দরকার। বিএনপি রাষ্ট্রে ক্ষমতায় গেলে তারা এই ক্ষেত্রে দ্রুত উদ্যোগ নেবে। সব দাবির জন্য পর্যাপ্ত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা বিবেচনা করে নির্দিষ্ট সুপারিশও গ্রহণ করবে তিনি।

তারেক রহমান আরও উল্লেখ করেছেন, একটি ধর্মনিরপেক্ষ ও ধর্মপ্রাণ রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি বিশ্বাস করে, ইসলাম ও তার ঐতিহ্য নিয়ে মতবিরোধ বা বিভ্রান্তি দেশের অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে পারে না। তিনি বলেন, নেতৃস্থানীয় আলেম-ওলামাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে—বিশেষ করে ইসলাম ও মূল্যবোধের খেয়াল রাখতে। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, ইসলামের নীতিমালা অনুযায়ী মুসলমানরা স্বচ্ছন্দে ও নিঃসংকোচে জীবন পরিচালনা করতে পারেন, যেন কোনও ভিন্নমত বা মতান্তর যেন ফিতনা সৃষ্টি না করে।

সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক, বাংলাদেশ খলাফত আন্দোলনের আমির হাবিবুল্লাহ মিয়াজী, জমিয়তে উলামায় ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব সাখাওয়াত হোসেন রাজি ও হেফাজত নেতা জুনায়েদ আল হাবিব প্রমুখ।