শেখ হাসিনার মানবতাবিরোধী অপরাধের রায় আজ

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ৩:৩১ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৭, ২০২৫

গত বছরের जुलाई-অগাস্টের গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আজ সোমবার বিচারিক রায় ঘোষণা করবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এই মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কু্রামাল এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের অংশগ্রহণের বিষয়ে রায় প্রদান হবে।

এই দিনটি নির্ধারণ করেছেন বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১, গত ১৩ নভেম্বর। অন্য সদস্যরা হলেন বিচারক মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

বহুল আলোচিত এই মামলায় ৫টি অভিযোগ আনেন রাষ্ট্রপক্ষ, যার মধ্যে অন্যতম হলো মানবতাবিরোধী অপরাধ। প্রসিকিউশন সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড চেয়েছেন। অন্যদিকে, আসামিরা নিজেদের নির্দোষ দাবি করে খালাসের জন্য যুক্তি উপস্থাপন করেছেন। চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে তার আইনজীবী খালাসের দাবি করেছেন।

আদালতে পরিবেশিত ছিলেন পুলিশের সাবেক প্রধানসহ একঝাঁক সাক্ষী, যার মধ্যে রয়েছে গণঅভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের পরিবারের সদস্যরা। সঙ্গে ছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান। মোট সাক্ষী সংখ্যা ছিল ৫৪ জন।

মামলার অভিযোগ অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জুলাই-অগাস্টে ছাত্র-জনতা ও অঙ্গ সংগঠনের আন্দোলন দমন করতে আওয়ামী লীগ সরকার ও তার সহযোগী বাহিনী মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে। এ বিষয়ে ২৩ অক্টোবর অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান তার বক্তৃতায় আন্তর্জাতিক বিচার ব্যবস্থার নানা দিক তুলে ধরেন।

সাক্ষীরা বলছেন, এই ষড়যন্ত্রমূলক গণঅভ্যুত্থান ও তার আতঙ্কে দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক গণহত্যা ও human rights violation হয়। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অঙপ্রত্যেকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগ প্রস্তুত করা হয়েছে।

মামলার তদন্ত ও সাক্ষ্যপ্রমাণের জন্য সব ধাপ সম্পন্ন হয় চলতি বছর। প্রাথমিকভাবে অভিযোগ গঠন, সাক্ষ্যগ্রহণ ও যুক্তিতর্কের মাধ্যমে মামলার কার্যবিধি সম্পন্ন হয়। মামলার অভিযোগের মধ্যে রয়েছে উসকানি, অস্ত্র ব্যবহারে জড়িত থাকা, হত্যা ও লাশ পোড়ানোর মতো গুরুতর ক্ষেত্রে।

রিপোর্ট অনুযায়ী, অভিযোগপত্র মোট ৮ হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার, যার মধ্যে তথ্যসূত্র, জব্দ তালিকা ও শহীদদের তালিকা রয়েছে। এই মামলার তদন্তে সহায়তা করেছে বিভিন্ন সংস্থা।

বিশ্বের একটি বড় আয়োজন হিসেবে এই মামলার রায় সরাসরি সম্প্রচার করবে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) এবং রয়টার্স, যাতে পুরো বিশ্ব এটি দেখতে পাবে। রায়ের আনুষ্ঠানিকতা চলাকালে প্রয়োজনীয় সুরক্ষা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামীম জানিয়েছেন, রায় ঘোষণা হবে ট্রাইব্যুনাল-১ এর অধীনে, যা সরাসরি সম্প্রচারিত হবে। এছাড়া, রাজধানীর বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বড় স্ক্রিনে রায় দেখানো হবে।

বাংলাদেশে এর আগে কোনো নারী হিসেবে এ ধরনের সাজা কার্যকর হয়নি। তবে, শেখ হাসিনার ক্ষেত্রে কি এই ট্রাডিশন ভাঙা হবে কিনা, এ প্রশ্নে প্রসিকিউটর তাদের স্পষ্ট পূর্বাভাস দিয়েছেন।

পরিবর্তে, রায় তার পেলে পরোয়ানা ইন্টারপোলে পাঠানো হবে, বলে জানানো হয়। এটি কোনো রকম সম্পত্তির জন্য নয়, বরং আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী বিচার সফর সম্পন্ন হবে।