তারেক রহমান: কেউ দেশের স্বার্থের বিরোধী কর্মকাণ্ড করতে পারবে না

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ৩:৩০ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৯, ২০২৫

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, জনগণের ভোটের মাধ্যমে গঠিত একটি গণতান্ত্রিক সরকারের মূল দায়িত্ব হলো জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ থাকা ও তাদের কাছেই জবাবদিহি করা। তিনি জোর দিয়ে বলেন, এই সরকার কখনোই কারো দলীয় স্বার্থে কাজ করবে না। শনিবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘হিন্দু প্রতিনিধি সম্মেলন-২০২৫’-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব মন্তব্য করেন। এই সম্মেলনটি পরিচালনা করেন মতুয়া বহুজন সমাজ ঐক্য জোটের নেতৃবৃন্দ।

তারেক রহমান সতর্ক করে দেন, দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি ফ্যাসিবাদী অপশক্তির পুনর্বাসনের পথ সহজ করে দিতে পারে। এজন্য তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি জোর দিয়ে বলছেন, রাজনৈতিক গোপনীয়তা ও গুপ্তচরবৃত্তির বিরুদ্ধে সজাগ থাকতে হবে। তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠীরা বিভিন্ন সময়ে মুখোশ পরে গোপন কৌশল অবলম্বন করে গণতন্ত্রের অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। তাদের এই অপকৌশল রুখে দাঁড়ানো সকলের প্রত্যাশা ও দায়িত্ব।

তারেক রহমান আরও মন্তব্য করেন, ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে অনেকের ভূমিকা দেশের জনসংখ্যার অধিকাংশের নাগরিকের অধিকার ও সুযোগের জন্য ক্ষতি করতে পারে। তিনি বলেন, এই জন্য প্রত্যেককেই সতর্ক থাকতে হবে এবং প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। তিনি শেখান, ফ্যাসিবাদবিরোধী মতবিনিময় ও ঐক্য বজায় রাখা এই অপশক্তির দমন করতে এক গুরুত্বপূর্ণ কৌশল। বিএনপি এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে অন্তর্বর্তী সরকার ও আন্দোলনের অংশীদারদের সঙ্গে সমঝোতা ও সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে।

তারেক রহমান উল্লেখ করেন, বাংলাদেশে বিএনপি বরাবরই এক শান্তিপ্রিয়, সহনশীল ও গণমুখী দল। ভিন্ন মতের প্রতি তাদের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি সংস্কৃতির অংশ। দেশের জনসাধারণের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতা নিশ্চিত করতে বিএনপির রাজনীতি গুরুত্বপূর্ণ বলে তিনি দাবি করেন।

তিনি আশ্বাস দেন, নির্বাচনে জয়ী হলে বিএনপি সরকার গঠন করবে এবং সমাজের কম আয় করে এমন পরিবারের জন্য ৫০ লাখ ‘ফ্যামিলি কার্ড’ বিতরণ করবে। পাশাপাশি তরুণদের জন্য বিভিন্ন ধরনের কারিগরি প্রশিক্ষণ ও ভাষা শিক্ষা চালু করে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলা হবে, যাতে দেশের ভেতর ও বাইরে কাজের সুযোগ তৈরি হয়।

বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের বিষয়েও আলোকপাত করে তিনি বলেন, এই বৈচিত্র্যই আমাদের সামাজিক ও রাজনৈতিক জীবনের সৌন্দর্য। তিনি বলেন, এই বৈচিত্র্য্য ভরীক ঐক্যের ভিত্তিই হচ্ছে।

সর্বশেষে, তিনি বাংলাদেশে সব ধর্মের মানুষের সমান অধিকারের কথা উল্লেখ করে বলেন, একজন বাংলাদেশি হিসেবে আপনার যে অধিকার, তা আমারও একই রকম। কেউ বেশি বা কম নয়। তিনি হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতাদের দাবি পূরণের আশ্বাস দিয়েছেন। অনুষ্ঠানে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্যরা আসাদুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ইকবাল হাসান মাহমুদ সহ অন্যান্য নেতারা বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে আরও অংশ নেন মতুয়া বহুজন সমাজ ঐক্য জোটের সদস্যসচিব কপিল কৃষ্ণ মণ্ডল, যুগ্ম আহ্বায়ক সমেন সাহা, হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক, হিন্দু ফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিজন কান্তি সরকার এবং মতুয়া সম্প্রদায়ের নেত্রী সুবর্ণা রাণী ঠাকুর আর অন্যান্য উপস্থিত নেতৃবৃন্দ।