যুদ্ধবিরতির পরেও গাজায় ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত Staff Staff Reporter প্রকাশিত: ৩:৪৭ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৫, ২০২৫ যদিও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যুদ্ধবিরতিকaji শুরু হলেও, গাজার বিভিন্ন স্থানে ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী অবিচ্ছিন্নভাবে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে ইসরায়েলি বিমান হামলার খবর পাওয়া গেছে, যা এ ব্যাপক সংকটের সার্বিক পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। এখন পর্যন্ত, এই অবরুদ্ধ উপত্যকায় ইসরায়েলের বর্বরতা ২৩৬ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে, যা যুদ্ধবিরতির পরে অন্তত এই সংখ্যার মৃত্যুর দিকেই ইঙ্গিত দেয়। খবর দিয়েছে আল-জাজিরা। অধিকারপ্রাপ্ত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বাহিনী ও বসতি স্থাপনকারীদের হামলায় এক কিশোরসহ দুই ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। অন্যদিকে, গাজা শহরে চলমান তল্লাশি অভিযান শেষে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস আরও তিন বন্দির মরদেহ ফিরিয়ে দিয়েছে। এর আগে, যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে ইসরায়েল আরও ৩০ ফিলিস্তিনির মরদেহ ফিরিয়েছে, যাদের মধ্যে অনেকের শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন দেখা গেছে। এসব মরদেহ স্বাস্থ্য সংস্থার মাধ্যমে পরিবারের নিকট জানানোর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক রেড ক্রসের মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে। অক্টোবরের শুরুর দিকে স্বাক্ষরিত বন্দি বিনিময় চুক্তির ফলস্বরূপ এই মরদেহ ফিরিয়ে আনা হয়। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, এ পর্যন্ত মোট ২২৫ জনের মরদেহ ফেরত এসেছে। এ নথিপত্রে বলা হয়েছে, মেডিকেল টিমগুলো মরদেহগুলো শনাক্ত করে নথিভুক্ত করছে এবং পরিবারের কাছে জানানো হচ্ছে। বিভিন্ন চিকিৎসক সূত্র জানায়, বেশিরভাগ মরদেহে নির্যাতনের চিহ্ন আছে, চোখ বাঁধা ও হাতকড়া পরানো ছিল। কেউ কেউ পচে গেছে বা পুড়ে গেছে, আবার অনেকের দাঁত বা অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত। ইসরায়েল হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে কারাগারে আটক রেখেছে, অনেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল না করেই বন্দি রাখা হচ্ছে। ইসরায়েলি নির্যাতনের ভয়াবহতার বিষয়টি বছর দিন ধরে প্রকাশ পাচ্ছে, বিশেষ করে গাজায় যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার পরে তা আরও বেড়েছে। মধ্যস্থতায় যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপে গাজায় ইসরায়েলের হামলা বন্ধের ধরণে, হামাস ২০ জন জীবিত বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে, এর বিনিময়ে ইসরায়েল প্রায় দুই হাজার ফিলিস্তিনি রাজনৈতিক বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে। পাশাপাশি, গাজা শহরের বিভিন্ন অংশ থেকে আংশিক প্রত্যাহারও সম্পন্ন হয়েছে। ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি আক্রমণে, এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৬৮ হাজার ৮৫৮ জন নিহত এবং ১ লাখ ৭০ হাজার ৬৬৪ জন আহত হয়েছে। এই ভয়াবহতা চলাকালীন, গাজার বাসিন্দাদের জীবন ভীষণ দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। ইসরায়েলের বিমান হামলায় গাজার বেশির ভাগ বাড়িঘর সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। বিশেষ করে প্রয়াত নেতা ইয়াসির আরাফাতের বাড়ির ইতিহাসও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই বাড়ি গাজার রিমাল এলাকায়, যেখানে এখন কিছু পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। ইসরায়েলি হামলার কারণে বাড়িটির বহু অংশ ধ্বংস হয়েছে, দেয়ালে আঁকা স্মারক চিত্রগুলো ধুলোয় ভস্মীভূত। অধ্যাপক আশরাফ নাফেস আবু সালেম বলেন, ‘এটি একটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। বাড়ির অনেক অংশ পুড়ে ছাই।’ সেখানে থাকা পুরোনো বই ও ছবি দেখে তিনি বলেন, ‘আমরা প্রথম ইন্তিফাদার সময় থেকেই সংগ্রাম করছি। আমাদের জাতীয় পরিচয় এবং প্রেরণার কেন্দ্র ছিল এই স্বাধীনতা সংগ্রাম। ’ বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯২৯ সালে জন্ম নেওয়া ইয়াসির আরাফাত দীর্ঘ জীবনে গাজায় ২৭ বছর নির্বাসিত থাকার পরে ১৯৯৪ সালে ফিরে আসেন। তিনি গাজা নিয়ে বেঁচে ছিলেন শতাব্দীকাল সময়। দ্য গার্ডিয়ান এর প্রতিবেদন অনুসারে, জাতিসংঘের তথ্যে দেখা যায়, দুই বছরে গাজায় ইসরায়েলি আক্রমণে প্রায় তিন-চতুর্থাংশ ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে। এর ফলে, সেখানে অন্তত ৬ কোটি ১০ লাখ টন ধ্বংসাবশেষ জমা হয়েছে, যার নিচে চাপা পড়ে আছে বহু মরদেহের সন্ধান। বিশ্বের মানব জীবন ক্ষতিটা গাজায় ব্যাপক তারতম্যে প্রকাশ পেয়েছে। ‘দ্য ল্যানসেট’ এর শুক্রবারের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, সূত্রাবলীর হিসেব অনুযায়ী, হামলায় ৩০ লাখের বেশি বছর ক্ষতি হয়েছে। ৬০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন, এর মধ্যে অনেকই শিশু। মানবজীবন থেকে গড়ে প্রতি মৃত্যুর সঙ্গে হারিয়ে গেছে ৫১ বছর। শিশু মৃত্যুর কারণে, ১৫ বছরের কম বয়সের অনেকের জীবনও হারিয়ে গেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এসব হিসেব মিনিমাম, প্রকৃত ক্ষতির পরিমাণ আরও বেশি হতে পারে। SHARES আন্তর্জাতিক বিষয়: