ঐকমত্য কমিশনের ‘জাতীয় অনৈক্যের’ চেষ্টা অভিযোগ, সালাহউদ্দিন আহমদ বললেন

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ৩:৩১ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৯, ২০২৫

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এক গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ‘জাতীয় অনৈক্য’ সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে বলে গত মঙ্গলবার মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, কমিশন জুলাইয়ে জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের জন্য যে প্রস্তাবনা এবং সুপারিশের তালিকা উপদেষ্টাদের কাছে জমা দিয়েছে, তা মূলত প্রকাশ করে বিভিন্ন দলের মধ্যে বৈপরীত্য ও বিভেদের ছোঁয়া। তিনি এ বিষয়ে বলেন, কমিশনের কিছু সুপারিশ এবং প্রস্তাব এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে যা মূল চুক্তি বা জাতীয় সার্বভৌম সংলাপের স্বাক্ষরিত জাতীয় সনদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “১৫ আগস্টে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল স্বাক্ষর করে যে জাতীয় সনদে সম্মতি দিয়েছে, সেই দস্তাবেজের বহির্ভূত কিছু সুপারিশ হস্তান্তর হয়েছে, যা এই চুক্তির মূল উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যের সঙ্গে সম্পূর্ণ বিপরীত। তিনি আরও বলেন, ‘জাতীয় সনদে ৮৪ দফার মধ্যে বিভিন্ন দফা নিয়ে বিভিন্ন দলের ভিন্ন মতামত বা নোট অব ডিসেন্ট রয়েছে। এই নোট অব ডিসেন্টে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, সংশ্লিষ্ট দলগুলো যদি তাঁদের নির্বাচনী ইশতেহারে এই বিষয়গুলো উল্লেখ করে ম্যান্ডেট প্রদান করে, তবে তার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, বর্তমানে দেওয়া সুপারিশের সঙ্গে এই নোট অব ডিসেন্টের কোনও উল্লেখ নেই।’

জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে গণভোট অনুষ্ঠানের পরিকল্পনাও কমিশনের অন্যতম সুপারিশ। এই প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘সচরাচর খুবই আশ্চর্যজনক যে, নির্বাচন উপযুক্ত সময়ে, অর্থাৎ নির্বাচনের আগে বা তার দিনেই এই গণভোটের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে বিএনপির পক্ষে একটি স্পষ্ট ঘোষণা দিচ্ছি—আমরা মনে করি, এটি প্রস্তাবের অপ্রয়োজনীয়তা ও অপ্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা।’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘হয়তোবা এ নিয়ে আবার সকল রাজনৈতিক দল আলোচনা করবে। সেই সঙ্গে নতুন একটি প্রস্তাব এসেছে, যেখানে সংবিধান সংস্কার পরিষদের নামে একটি আইডিয়া যুক্ত করা হয়েছে, যা আগে এই মঞ্চে ছিল না। এই বিষয়ে কোনও ঐকমত্য এখনও সৃষ্টি হয়নি।’

ঐকমত্য কমিশনের একটি সুপারিশের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘৯০ দিনের মধ্যে বা ২৭০ দিনের মধ্যে যদি কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়িত না হয়, তবে সেটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে আইন হয়ে যাবে—এমন ধারণা হাস্যকর এবং গ্রহণযোগ্য নয়।’

বৈঠকের ফলাফলের বিষয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘বহুদলীয় গণতন্ত্রের স্বার্থে দলীয় জোটের মাধ্যমে নির্বাচন করলেও, প্রত্যেক দলকে নিজেদের প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করার ব্যবস্থা থাকায় আমি মনে করি, এই আইনি প্রক্রিয়ার বাস্তবায়ন হয়েই থাকুক। আমরা এর জন্য আইন উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা করছি, তিনি আমাদের জানিয়েছেন, বিষয়টি উপদেষ্টা পরিষদের সঙ্গে আলোচনায় নিয়ে যাবেন। আমরা অপেক্ষা করব।’

নির্বাচনের পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত কেউই বলছেন না যে, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে না। আমরা অবিচলভাবে জানাই—ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সরকার এ ব্যাপারে প্রস্তুত থাকায় আমরা আশাবাদী।’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এনসিপির সঙ্গে বিএনপি কোনও জোটে থাকছে কি না, তা এখনই এই মুহূর্তে বলতে পারছি না। তবে আলোচনা চলমান রয়েছে।’