সাংবিধানিক আদেশ জারির এখতিয়ার সরকারের নয়: সালাহউদ্দিন আহমদ

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ২:৩০ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৪, ২০২৫

জুলাই জাতীয় সনদকে নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে সংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়ে জামায়াতে ইসলামীর প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেছেন, রাষ্ট্র কোনওভাবেই আবেগের ওপর চলে না। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ইউট্যাব আয়োজিত ‘২৪ জুলাই গণঅভ্যুত্থান: তরুণের ভাবনায় শিক্ষা ও কর্মসংস্থান’ শীর্ষক এক আলোচনায় তিনি এই কথা বলেন।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, কিছু মানুষ বলছেন যে, ২৪ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের জনগণের অভিপ্রায় অনুযায়ী, এখন মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা এরকম একটি আইন বা আদেশ জারি করতে পারেন। তিনি বলেন, এটি বৈপ্লবিক বা ইমোশনার ভিত্তিতে বলার বিষয়, কারণ রাষ্ট্র কোনওভাবেই কেবল আবেগের ওপর চলে না। রাষ্ট্র পরিচালিত হয় আইন, বিধান ও নিয়মকানুনের মাধ্যমে।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, জুলাই সনদ সই হলেও তা কিভাবে বাস্তবায়িত হবে, এ বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত দেয়নি জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। গত বুধবার এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক করেছে কমিশন, এবং বৃহস্পতিবার তারা আবার পরবর্তী আলোচনা করবে। সংবাদমাধ্যমে এসেছে যে, প্রাথমিক খসড়া অনুযায়ী, জুলাই সনাদ বাস্তবায়নের জন্য একটি আদেশ জারি করা হবে এবং এছাড়া গণভোটের জন্য একটি অধ্যাদেশও প্রস্তুত করা হবে।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমি শুনেছি যে, এই সংক্রান্ত কোনও ‘এক্সট্রা কনস্টিটিউশনাল অর্ডার’ দিয়ে জাতীয় সনদ জারি করা হতে পারে এবং এতে প্রধান উপদেস্টাকে এই কাজের জন্য নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, বাংলাদেশের সংবিধানে প্রধান উপদেষ্টার এই ধরনের আইন জারির কোনও অধিকার নেই। তিনি বলেন, ‘অযৌক্তিকভাবে কেউ যদি বলে যে, এই অর্ডার করে এই সনদ জারি করতে হবে, তাহলে সেটা সম্পূর্ণ বেআইনি। প্রধান উপদেষ্টা সরকারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, কিন্তু তার কোনও অধিকার নেই আইন জারি করার।’

তিনি আরও বলেন, ‘যে ব্যক্তিটি জারির কথা বলছেন, তিনি তা করেননি। যথাযথ কর্তৃপক্ষই এই আদেশ জারি করবে, এবং সরকারের কোনও পক্ষ এই বিতর্ক তৈরি করা উচিত নয়। আমরা চাই, রাজনীতি বা ইমোশনের প্রভাব এড়িয়ে সব পক্ষ যৌক্তিকতা ও সংবিধানবিরुद्धভাবে কাজ করুক।’

সালাহউদ্দিন আহমদ আরও জানান, রাজনৈতিক দলগুলো এই বিষয়ে জনমতের চাপের কারণে অবশেষে বসে, কিন্তু মূলত বিএনপিরই প্রস্তাব ছিল জুলাই জাতীয় সনদে গণভোটের ব্যবস্থা করার। তিনি জানান, অন্য অনেক দল এই প্রস্তাবের সাথে একমত হয়েছে, তবে দুই বড় রাজনৈতিক দল এই বিষয়ে এখনও কিছু দাবি নিয়ে আলোচনা করছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, তারা যৌক্তিক সমাধানে পৌঁছাতে পারবেন।

তাদের মতে, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো মানসিক ও সামাজিক সংস্কার। তিনি বলেন, ‘আমরা যতই আইনি ও সাংবিধানিক সংস্কার করি, যতক্ষণ না মনোভাব ও মানসিকতার পরিবর্তন হয় না, ততক্ষণ প্রকৃত পরিবর্তন আসবে না। এজন্য আমাদের মানসিক সংস্কার জরুরি।’

সালাহউদ্দিন বলেন, জুলাই সনদ ১৭ অক্টোবর স্বাক্ষরিত হলেও, ঐ অনুষ্ঠানে জাতীয় নাগরিক পার্টি অংশ নেননি। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, ভবিষ্যতে সকল পক্ষ যৌক্তিক আলোচনার মাধ্যমে এই প্রকল্প সমাধান করতে পারবেন।