হোয়াইট হাউসের একটি অংশ ভাঙার কাজ শুরু Staff Staff Reporter প্রকাশিত: ১:৩৭ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৩, ২০২৫ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনায় হোয়াইট হাউসের পূর্ব দিকের ইস্ট উইংয়ে নতুন বলরুম নির্মাণের জন্য ভাঙার কাজ শুরু হয়েছে। এই উদ্যোগ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে। সাবেক এক মার্কিন আইনপ্রণেতা এটিকে «স্রেফ ধ্বংসযজ্ঞ» বলে অভিহিত করেছেন। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্থানীয় সময় সোমবার হোয়াইট হাউসের ইস্ট উইংয়ের একটি অংশ ভাঙার কাজ শুরু হয়। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, ভবনের বাইরের অংশে নির্মাণের চিহ্ন স্পষ্টভাবে ফুটে উঠছে। এর আগে নিউইয়র্ক পোস্টেও কিছু ছবি প্রকাশিত হয়েছে। সোমবার নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যাল-এ ট্রাম্প লিখেছেন, “হোয়াইট হাউসে নতুন বলরুম নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। আমি গর্বিত যে, আমি প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে এ মহৎ প্রকল্পটি শুরু করতে পারলাম—করদাতাদের কোনও টাকা অপচয় না করে! এটি সম্পূর্ণ অর্থায়ন করছে কিছু দেশপ্রেমিক, বড় মার্কিন কোম্পানি এবং আমি নিজেও।” সেদিনই ওয়াশিংটন ডিসিতে আইনের এক ইভেন্টে তিনি বলেছিলেন, “আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে সুন্দর বলরুম তৈরি করছি।” তিনি আরও যোগ করেন, “আমি কখনো ভাবিনি যে আমি এখানে থাকতে পারব; কারণ পাশেই নির্মাণ কাজ চলছে—সেকথা হয়তো মাঝেমধ্যে শোনা যাবে।” প্রায় ২৫০ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে হোয়াইট হাউসে এই বিশাল বলরুম তৈরির পরিকল্পনা গত জুলাইয়ে প্রকাশিত হয়। এটি হবে হোয়াইট হাউসের শতাব্দীর মধ্যে সর্ববৃহৎ এক প্রকল্প। প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট জানিয়েছিলেন, ৯০ হাজার বর্গফুটের এই বলরুমে একসঙ্গে ৬৫০ জন অতিথি বসে থাকবেন। কর্মকর্তারা বলেছেন, এই প্রকল্পের অর্থায়ন করছেন ট্রাম্প ও কিছু গোপন দাতা। তখন ট্রাম্প বলেছিলেন, “গত ১৫০ বছর ধরে হোয়াইট হাউসে বলরুমের আকাঙ্ক্ষা ছিল। কোনো প্রেসিডেন্টেরই এ ধরনের পরিকল্পনা ছিল না। আমি নির্মাণে পারদর্শী। সুন্দর, সময়োপযোগী ও মানসম্পন্নভাবে কাজ শেষ করব।” ওয়াশিংটন পোস্টের খবর, ট্রাম্প দাবি করেছেন যে নতুন কাঠামোটি বর্তমান ভবনের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হবে না। তিনি বলেছেন, “এটি কাছাকাছি থাকবে, কিন্তু স্পর্শ করবে না। বর্তমান ভবনের প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা রেখেই এটি নির্মাণ হবে। আমার প্রিয় স্থান, হোয়াইট হাউসেরই এক অংশ এটি।” ধারণা করা হচ্ছে, কাজটি ২০২৯ সালের জানুয়ারির আগেই সম্পন্ন হবে, যখন ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদ শেষ হবে। সম্প্রতি হোয়াইট হাউসে ওই নতুন বলরুমের জন্য দাতাদের নিয়ে এক ডিনার অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন ট্রাম্প। সেখানে তিনি বলেন, “নতুন বলরুমে থাকবে বুলেটপ্রুফ কাচ, ১ হাজারের বেশি অতিথির ধারণক্ষমতা এবং প্রেসিডেন্টের অভিষেক অনুষ্ঠান আয়োজনের উপযুক্ত আধুনিক অবকাঠামো।” সেই ডিনারে আমাজন, অ্যাপল, মেটা, গুগল, মাইক্রোসফট, প্যালান্টির ও লকহিড মার্টিনের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গেছে। অন্যদিকে, এই উদ্যোগের বিরুদ্ধে সামাজিক ও রাজনৈতিক মহলে নানা ধরনের সমালোচনাও উঠেছে। ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্রেট কংগ্রেসম্যান মার্ক তাকানো একটি প্রস্তাব দিয়েছেন, যেখানে বলা হয়েছে—সরকারি কার্যক্রম বন্ধ থাকলে (শাটডাউন) হোয়াইট হাউসে কোনো নির্মাণ বা সংস্কারকাজে ফেডারেল তহবিল ব্যবহার করা যাবে না, যদি না সেটি স্বাস্থ্য বা নিরাপত্তার জন্য জরুরি হয়। বর্তমান শাটডাউনের ২০তম দিন এটি চলছে। সাবেক রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান জো ওয়ালশ এক্সে লিখেছেন, “এটি জনগণের বাড়ির এক ভয়ংকর বিকৃতি। যদি আমি ২০২৮ সালে প্রেসিডেন্ট হই, প্রথম কাজই হবে ওই বলরুমটি বুলডোজার দিয়ে ভেঙে ফেলা।” তিনি আরও বলেছিলেন, “আমেরিকানদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি, সাপ্তাহিক ছুটিতে নিজেদের হাতুড়ি ও ক্রোবার নিয়ে এসে এই বিকৃত নির্মাণের অবসান ঘটান।” মানবাধিকার আইনজীবী কাসিম রশিদও এক্সে লিখেছেন, “আমেরিকায় আয়-সম্পদের বৈষম্য এখন রেকর্ড পর্যায়ে। অথচ আমরা ২৫০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করছি এক অহংকারপ্রসূত প্রকল্পে।” SHARES আন্তর্জাতিক বিষয়: