জয়পুরহাটে খননের তিন বছর পর שוב ভরাট হচ্ছে চিরি নদী Staff Staff Reporter প্রকাশিত: ৯:৩২ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ২১, ২০২৫ শুধু তিন বছর আগে জয়পুরহাটের চিরি নদন খননের কাজ শেষ হওয়ার পর আশার আলো দেখছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তারা প্রত্যাশা করেছিলেন এই খনন কাজের মাধ্যমে নদীর পানি ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে, নাব্যতা ফিরে আসবে, মাটি ও বালুর অববাহিকা পরিষ্কার হবে এবং সেচ ও যোগাযোগের সুবিধা বহুগুণে বাড়বে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, সেই প্রত্যাশাগুলো পূরণ হয়নি। এখন আবারও এই নদী ভরাট হতে শুরু করেছে, যা লক্ষণীয়ভাবেই স্থানীয় জনগণের জন্য হতাশাজনক। প্রায় ২২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যবিশিষ্ট এই চিরি নদী, যা আক্কেলপুর থেকে অন্য গ্রামে এসে পড়ে, একসময় সেচ ও নৌচলাচলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ২০১৯ সালের মার্চ থেকে শুরু হওয়া ১২১ কোটি টাকার প্রকল্পের মাধ্যমে নদी খননের কাজ সম্পন্ন হয় ২০২২ সালের জুন মাসে, যেখানে লক্ষ্য ছিল পানি সংরক্ষণ, বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নদী পুনঃউজ্জীবিতকরণ ও পরিবেশের উন্নয়ন। তবে বাস্তবতা ভিন্ন। খননের পর থেকে নদীর পাড়ে থাকা মাটি ও বালু আবারো নদীতে মিশে গেছে, নিষ্কাশনের জন্য নির্মিত বাঁধ ও ড্রেনেজ চিকন হওয়ায় সেগুলোর কার্যকারিতা ক্ষীণ। বেশ কিছু স্থানে নদীর পানি শুকিয়ে গেছে, অনেক স্থানে পানির অভাব দেখা দিয়েছে। কচুরিপানা ও ময়লা-আবর্জনা জমে থাকায় নদীটি অচল ও অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে। ফলে নদীর উদ্দেশ্য একদমই পূরণ হচ্ছে না এবং সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, নদী খননের আগে যেখানে কিছু পানি থাকত, এখন সেখানে পানিও পাওয়া যাচ্ছে না। নদী সংস্কার করার পরেই পানি হারানো ও কচুরিপানায় ভরাট হওয়ার সমস্যা দেখা দেয়। ছোটবেলার গল্পের মতো, নদীতে তখন মাছ ধরতেন সবাই। এখন আর মাছ ধরা যায় না কারণ পানির স্তর অনেক কম। গ্রামের অনেক বাসিন্দাই নদীটির এই দ্রম্ব অবস্থা দেখে হতাশ। জেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, কোটি কোটি টাকা খরচ করে খননের পরও নদীর মূল সুবিধাগুলো প্রদর্শিত হচ্ছে না। জলাবদ্ধতা ও বন্যা ঝুঁকি কমে আসলেও, নদীর সঙ্গে বড় কোনও নদীর সংযোগ না থাকায় পানির পরিমাণ খুবই কম। জয়পুরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রিয়াদুল ইসলাম বলেন, কর্মসূচির লক্ষ্য ছিল সাধারণ মানুষের জন্য উপকৃতি ও জলাবদ্ধতার ঝুঁকি কমানো। তবে কচুরিপানা ও ভরাট সমস্যা সম্বন্ধে তাদের কোনও জানানো হয়নি। দ্রুত রক্ষণাবেক্ষণ ও সচেতনতা প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন তিনি। বাংলাদেশের পরিবেশ আন্দোলনের জয়পুরহাট জেলা সমন্বয়ক লুৎফুল্লাহিল কবির আরমান জানান, চিরি নদীর খনন পুরোপুরি পরিকল্পনা ও কার্যক্রমের অবহেলার ফল। এই প্রকল্পের টাকাপয়সার কোনও লাভ হয়নি, বরং এটি জনসাধারণের জন্য দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা আরও বলেন, পরিবেশ রক্ষা ও নদীর সুন্দর্য রক্ষা করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। SHARES সারাদেশ বিষয়: