সেপা চুক্তি হলে বাংলাদেশ ও কোরিয়ার সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হবে

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ৯:৩০ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ২১, ২০২৫

বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বের জন্য সাম্প্রতিক সময়ে আলোচনা শুরু হয়েছে, যা দুই দেশের সম্পর্ককে আরও গভীর ও ফলপ্রসূ করে তুলবে বলে মনে করছে কোরিয়ার প্রতিনিধিরা। ঢাকায় প্রেসিডেন্ট ইয়ং সিক পার্কের নেতৃত্বে এই উদ্যোগের সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে তিনি বলেন, যদি বাংলাদেশের সঙ্গে কোরিয়ার অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বের জন্য সেপা চুক্তি বাস্তবায়িত হয়, তবে এটি দুই দেশের সম্পর্কের নতুন দিগন্ত খুলে দেবে। এটি বিশেষ করে তৈরি পোশাক শিল্পের ক্ষেত্রে নতুন সুযোগ সৃষ্টি করবে, বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

পার্ক ইয়ং সিক বলেন, দ্বিপাক্ষিক এই চুক্তি কোরিয়ার বাজারে বাংলাদেশের অংশীদারিত্ব বাড়ানোর জন্য প্রেরণা জোগাবে। তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়ার বিনিয়োগের জন্য একটি উত্তম পর্যবেক্ষণযোগ্য গন্তব্য হয়ে উঠছে, কারণ তার অর্থনৈতিক গতি, কৌশলগত অবস্থান এবং শ্রমশক্তির পরিমাণ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

তাঁর মতে, বাংলাদেশের বিনিয়োগের সম্ভাবনা পুরোপুরি কাজে লাগানোর জন্য যত দ্রুত সম্ভব ভিসা ব্যবস্থা সহজ করার পাশাপাশি শুল্ক ছাড়, কাঁচামাল ও মধ্যস্থ পণ্য জতিলভাবে কমানো, প্রকল্প শেষে ডলারে অতিরিক্ত অর্থ দেওয়া এবং দেশের ভেতর থেকে মুনাফা পাঠানোর সুবিধা বৃদ্ধির পদক্ষেপ নিতে হবে। এসব উন্নত পরিবেশের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিনিয়োগের আকর্ষণ আরও বাড়বে।

অধিকন্তু, তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে কোরিয়ায় রপ্তানি ক্রমাগত বেড়েই চলছে, তবে রপ্তানি পরিমাণ এখনও পর্যাপ্ত নয়। পাদুকা, আইসিটি পণ্য, চামড়াজাত পণ্য, হালকা শিল্পজাত পণ্য ও ওষুধের মতো পণ্য আরও বেশি পরিমাণে কোরিয়ায় রপ্তানি করা সম্ভব।

এছাড়াও, পার্ক ইয়ং সিক উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের উন্নয়নে অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনীতি, সামাজিক কল্যাণ ও দায়িত্বশীল বিনিয়োগের গুরুত্ব অপরিহার্য। তিনি বাংলাদেশে টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে কোরিয়ার সহযোেগিতার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।

সেমিনারে বাংলাদেশে কাজরত শীর্ষস্থানীয় কোরিয়ান কোম্পানিগুলোর প্রতিনিধিরা তাদের সমাজসেবী কর্মসূচি ও সিএসআর কার্যক্রম তুলে ধরেন, যেমন এলজি, স্যামসাং, উরি ব্যাংক, দোহওয়া ইঞ্জিনিয়ারিং ও ইয়ংওয়ান। তারা শিক্ষা, স্বাস্থ্যমূলক উদ্যোগ, পরিবেশ সংরক্ষণ এবং দক্ষতা উন্নতিতে তাদের বিভিন্ন প্রকল্পের কার্যক্রম উপস্থাপন করেন।

এছাড়া, প্রধান কোরিয়ান এনজিওগুলো সেভ দ্য চিলড্রেন কোরিয়া, অক্সফাম কোরিয়া, হ্যাবিট্যাট কোরিয়া, গুড নেইবারস, এডিআরএ ও গ্লোবাল কেয়ার তাদের সামাজিক উন্নয়নের কাজের বিশাল উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে। তারা বাংলাদেশে স্থানীয় সম্প্রদায়ের জীবনমান উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্পের উপর গুরুত্ব দেন।

অনুষ্ঠানে বিখ্যাত সাবেক রাষ্ট্রদূত ও সিএসআর বোর্ডের চেয়ারম্যান ফারুক সোবহান তার বক্তব্যে বিনিয়োগ ও ব্যবসায়িক সম্পর্ক গড়ে তুলতে দায়িত্বশীল কর্পোরেট কর্তব্যের গুরুত্ব তুলে ধরেন, যেখানে তিনি বলছেন, এ ধরনের অংশীদারিত্ব বিশ্বাস, সহযোগিতা ও দীর্ঘমেয়াদি বন্ধুত্ব আরও দৃঢ় করে।

উপস্থিত আরও বক্তারা ছিলেন কোরিয়া-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (কেবিসিসিআই) সভাপতি শাহাব উদ্দিন খান ও কোরিয়ার কান্ট্রি ডিরেক্টর জিহুন কিম। সবাই মিলেই দুই দেশের সম্পর্কের ভবিষ্যৎকে আরও সুদৃঢ় করার জন্য তাদের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।