কাপ্তাইয়ে গণধর্ষণের ঘটনায় পিসিসিপির বিক্ষোভ ও বিচারের দাবি

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ৩:০৮ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২০, ২০২৫

রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলায় এক প্রতিবন্ধী মারমা নারীকে স্বজাতি তিন যুবকের হাতে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এই ন্যাক্কারজনক ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় প্রথাগত বিচারব্যবস্থায় বিষয়টি ধামাচাপা দিতে চাওয়া এবং ঘটনার দ্রুত ন্যায়বিচার না হওয়ার প্রতিবাদে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি) রাঙামাটি জেলা শাখা এক বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে।

সোমবার বিকেলে রাঙামাটি শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে অনুষ্ঠিত এই বিক্ষোভে সভাপতিত্ব করেন পিসিসিপির জেলা সভাপতি তাজুল ইসলাম, এবং সঞ্চালনা করেন জেলা সংগঠনিক সম্পাদক পারভেজ মোশাররফ হোসেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পিসিসিপির জেলা সাধারণ সম্পাদক মো. আলমগীর হোসেন, ৩৫ কাঠুরিয়া স্মৃতি সংসদের আহ্বায়িকা শাখাওয়াত হোসেন, পাশাপাশি অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

বক্তারা বলেন, চিৎমরম ইউনিয়নের চংড়াছড়ি মুখ এলাকার এই ঘটনা অত্যন্ত ন্যূনতম মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নারীর প্রতি জঘন্য অত্যাচার। অভিযোগ অনুসারে, তিন যুবক—অনুচিং মারমা (৫০), কালা মারমা (৫৫) এবং মং উ মারমা (৩৫)—একজন প্রতিবন্ধী নারীকে ধর্ষণ করে। ধারাবাহিক যৌন নির্যাতনের ফলে নারীটি এখন অন্তঃসত্ত্বা।

বক্তারা আরও বলেন, ১৭ অক্টোবর স্থানীয় সামাজিক প্রথাগত আদালতে অভিযুক্তদের জন্য ৩ লাখ টাকা জরিমানা ও ৩০ হাজার টাকা সমাজের নামে জরিমানা করা হয়। আশ্চর্যজনকভাবে, এ ঘটনার বিচারে ভুক্তভোগী নারীর জন্যও ‘সমাজের নিয়ম ভঙ্গের’ দায়ে ৫ হাজার টাকা জরিমানা ধার্য করা হয় যা সম্পূর্ণ অমানবিক ও অবিচার।

পিসিসিপি সভাপতি তাজুল ইসলাম অভিযোগ করেন, ‘এই শিশুটির দায়িত্ব কে নেবে? এর অভিভাবক কে হবে? এই অঞ্চলে প্রভাবশালী একটি আঞ্চলিক দলের নিয়ন্ত্রণ থাকায় ভুক্তভোগী পরিবার বিভিন্ন ভয় ও আতঙ্কে আইনের আশ্রয় নিতে পারছে না।’

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. আলমগীর হোসেন বলেন, ‘এটি পাহাড়ে সামাজিক বিচারের নামে নারীর প্রতি অমানবিক সহিংসতার এক ভয়াবহ দৃষ্টান্ত। অপরাধীদের অর্থদণ্ড দিয়ে দায়মুক্তি দেয়াই হলো প্রকৃত বিচার নয়, এটি একটি সম্পূর্ণ অমানবিক প্রতিবাদের খণ্ডচিত্র।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘এ ঘটনায় পাহাড়ের প্রভাবশালী সংগঠনগুলো—জেএসএস, ইউপিডিএফ, কেএনএফ—কেউই নিন্দা প্রকাশ করেনি। অন্য দিক থেকে দেখা যায়, যখন বাঙালির বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, তখন এই সংগঠনগুলো সঙ্গে সঙ্গে আন্দোলন ও প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়ে। এই দ্বিমুখী নীরবতা মানে পাহাড়ে মানবাধিকারের প্রশ্নটি অনেক সময় রাজনীতির আড়ালে চাপা পড়ে যায়।’

অতঃপর, এই আক্রোশ প্রবলভাবে প্রকাশ করে দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার এবং প্রতিবন্ধী নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপের দাবি জানানো হয়।