রাজবাড়ীতে বিআরটিএ অফিসে দালাল ও দুর্নীতির ভয়াল চিত্র Staff Staff Reporter প্রকাশিত: ৩:০৮ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২০, ২০২৫ বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) রাজবাড়ী কার্যালয়টি দীর্ঘ দিন থেকে ঘুষ-দুর্নীতির কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয়েছে। সেখানে দালালদের দাপাদাপি চাপিয়ে দেওয়া নানা অনিয়মের জন্য খুবই পরিচিত। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) নানা অভিযান সত্ত্বেও, দুর্নীতির চক্র আলোর আড়ালে থাকা অব্যাহত রেখেছে তাদের কার্যক্রম। অভিযানে সরাসরি গ্রেপ্তার হলেও জামিনে মুক্তির পর তারা আবারো পুরাতন চেহারায় ফিরে আসে। ব্যাংকের স্লিপ, অর্থের বিনিময়ে দ্রুত কাজের প্রতিশ্রুতি ও নিয়মিত ঘুষের মাধ্যমে এখানকার অফিসে নিত্যনৈমিত্তিক দুর্নীতি চলমান। এতে করে সাধারণ মানুষ দুর্ভোগে পড়ছে। টাকা দিয়ে কাজ না হলেও ফেরত পাওয়া যায় না, আর প্রতিবাদ করলে দালালদের হাতে লাঞ্ছিত হতে হয়। এ ধরনের ঘটনা যেন প্রতিদিনের নিত্যযাত্রা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে প্রশাসনের চোখ এড়িয়ে যায় এসব অনিয়ম। সোমবার সকালে রাজবাড়ী বিআরটিএ অফিসে মো. আক্রামুজ্জামান নামে এক সিল কন্ট্রাক্টরকে টাকা দিয়ে কাজ না করানোর অভিযোগে মো. সুমন শেখ মারধরের শিকার হন। তিনি বলেন, এক বছর আগে ৮,৫০০ টাকা দিয়ে কাগজের জন্য জমা দিয়েছি। সোমবার সকালে আসার সময় টাকা ফেরত চাওয়া হলে আক্রামুজ্জামান থাপ্পর মারেন। প্রতিবাদ করলে তার সঙ্গে থাকা ৪-৫ জন এলোপাথাড়ি মারধর শুরু করেন। অন্য আরেক ভুক্তভোগী, মো. বিল্লাল হোসেন, ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য ডাকা সময়ে টাকা দেওয়ার পরও দুই বছর ধরে কখনো কাজ সম্পন্ন হচ্ছে না। ৭ মে দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের অভিযান চালানো হলে রাজবাড়ী বিআরটিএর দালালচক্রের মূল হোতা আক্রামুজ্জামানসহ অন্যান্য দালালসহ বেশ কয়েকজন গ্রেপ্তার হন। অভিযান চলাকালে তল্লাশি করে দালালদের কাছ থেকে মোট ৭২ হাজার ৪২০ টাকা অর্থ উদ্ধার করা হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের ফরিদপুর আঞ্চলিক কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. মোস্তাফিজ জানান, ওই অভিযানে অফিসের সিল কন্ট্রাক্টর আক্রামুজ্জামানসহ অন্য দালালদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ উদ্ধার করা হয় এবং তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলাসহ প্রয়োজনীয় কর্মवाही শুরু হয়েছে। স্থানীয়রা ও ভুক্তভোগীরা জানাচ্ছে, রাজবাড়ী বিআরটিএ অফিসের কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশে ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ায় গ্রহীতাদের নানা অজুহাতে বাধা ও জিম্মি অবস্থা সৃষ্টি করে প্রতিনিয়ত অর্থ হাতিয়ে নেওয়া হয়। তরুণরা বলছেন, লাইসেন্সের জন্য তিন-চারবার পরীক্ষায় ফেল করার পর একজন দালাল কাছ থেকে ১৯ হাজার টাকা নিয়েছেন। অথচ এক বছরেরও বেশি সময় ধরে কাজের জন্য ঘুরছেন, কিন্তু আশা সদর্থক ফল পাননি। এ অবস্থায়, আক্রামুজ্জামানের বাড়ি ও সম্পদ নিয়ে অভিযোগ রয়েছে। তিনি শহরের বেড়াডাঙ্গায় দ্বিতল বাড়ি এবং জাপানি টয়োটা গাড়ি সংগ্রহ করেছেন, যা কয়েক কোটি টাকার সম্পদ। এদিকে, তার ফোনে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে রাজবাড়ী বিআরটিএর সহকারী পরিচালক (ইঞ্জিন) মো. নাসির উদ্দিন বলেন, আক্রামুজ্জামান বিআরটিএর কর্মচারী নন, তিনি একজন বহিরাগত। অফিসের ভেতরে মারধরের বিষয়টি আমাকে এডিএম জানিয়েছেন, আমি এখন সেখানে নেই, পরে কথা বলবো। SHARES সারাদেশ বিষয়: