শাপলা চত্বরে হেফাজতের শহীদদের নামে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের ঘোষণা

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ২:৩০ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৯, ২০২৫

স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া জানিয়েছেন, রাজধানী মতিঝিলের শাপলা চত্বরে ২০১৩ সালের হেফাজত ইসলামের শহীদদের স্মৃতি স্মারক হিসেবে একটি স্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হবে। এই স্মারকটি যেন আগামী প্রজন্ম তাদের অবদানের কথা স্মরণ করে রাখতে পারে, সেই জন্যই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

গতকাল শনিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে হেফাজত ইসলামের মহাসমাবেশ ও মোদিবিরোধী আন্দোলনে শহীদদের পরিবারের জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই ঘোষণা দেন তিনি। অনুষ্ঠানে শহীদ পরিবারের জন্য বিশেষ অনুদানের চেকও বিতরণ করা হয়।

আসিফ মাহমুদ বলেন, ২০১৩ সালে হেফাজত ইসলামের আন্দোলন থেকেই ফ্যাসিবাদবিরোধী গণআন্দোলনের সূচনা হয়েছিল। সেদিন সরকার নিরপরাধ ও নিরীহ হেফাজত কর্মীদের হত্যা করে যেন ইসলামকে নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিল। সেই জুলুম-নির্যাতনের বিরুদ্ধে মানুষের আন্দোলন দমন করতে গেলে তারা হত্যাকাণ্ড চালিয়েছিল। কিন্তু এই ঘটনাই প্রমাণ করে, অত্যাচার কতক্ষণ স্থায়ী হয় না।

তিনি আরও বলেন, ২০১৩ সালের আন্দোলনের থেকেই ২০২৪ সালে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের নতুন সূচনা হয়। তরুণ ছাত্র-জনতা এই আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ায়, শেখ হাসিনা পালিয়ে যেতে বাধ্য হন।

অতিথিরা বলেন, যখন আমি নবম শ্রেণিতে পড়তাম, তখন টেলিভিশনে দেখতাম লাখো মানুষ কীভাবে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। তবে সেদিনের প্রকৃত তথ্য আমাদের সকলের সামনে আসেনি, যা এখন জানানো প্রয়োজন।

আসিফ মাহমুদ জানান, শাপলা চত্বরে শহীদদের নামে স্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হবে, যাতে এই আন্দোলন আগামী প্রজন্মের জন্য প্রেরণা হয়ে থাকে। এছাড়াও, ৫ মে ২০১৩ সালের শাপলা চত্বরে হেফাজত ইসলামের মহাসমাবেশে নিহত ৫৮ জন ও ২০২১ সালের মোদিবিরোধী বিক্ষোভে নিহত ১৯ জনের পরিবারকে ১০ লাখ টাকার অনুদানের চেক প্রদান করা হয়।

বিশেষ অতিথি হিসেবে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ. ফ. ম. খালিদ হোসেন বলেন, ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে আঘাত করে তৎকালীন সরকার মনে করেছিল, জুলুম-নির্যাতন দিয়ে আন্দোলন দমন করা যাবে। তিনি হেফাজত নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান, শহীদ ও আহতদের তালিকা প্রস্তুত করার জন্য, যা ধর্ম মন্ত্রণালয় সহযোগিতা করবে।

ড. খালিদ আরও বলেন, সেদিন সেখানে সাত হাজারের বেশি পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবির সদস্য হামলা চালিয়েছিল। এই ইতিহাস কখনো মুছা যায়নি।

অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার সচিব রেজাউল মাকসুদ জাহিদী, হেফাজত ইসলামের আমীর মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী, মহাসচিব মাওলানা মাজেদুর রহমান, জামায়াত ইসলামের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পারোয়ার, খেলাফত ইসলামের নেতা মাওলানা মামুনুল হক ও গণধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূরসহ অনেকে।