একদিনে ক্রিপ্টো বাজার থেকে উধাও এক ট্রিলিয়ন ডলার Staff Staff Reporter প্রকাশিত: ২:৩৫ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৫, ২০২৫ চীনের ওপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন করে ১০০ শতাংশের বেশি শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেওয়ার পরই বড় ধাক্কা গেছে বিশ্বজুড়ে ক্রিপ্টোকারেন্সি বাজারে। ব্লুমবার্গের রিপোর্টে জানানো হয়েছে, মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে, এই শুল্ক আরোপের প্রভাব পড়ে বাজারে ব্যাপক হতাশার ভিড় তৈরি হয়েছে, যেখানে এখন পর্যন্ত ১৯ বিলিয়নেরও বেশি ডলার ক্ষতি হয়েছে। দ্য ইকোনোমিকস টাইমসের রিপোর্ট অনুসারে, এই ঘোষণার পর গত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সামগ্রিক বাজার মূল্য এক ট্রিলিয়নেরও বেশি ডলার কমে গেছে, যা এখন পর্যন্ত এক রেকর্ড। এই সময়ের মধ্যে, কয়েনগ্লাসের তথ্য অনুযায়ী, এটিকে বলা হয় ‘ক্রিপ্টো ইতিহাসের সবচেয়ে বড় লিকুইডেশন ইভেন্ট’, যেখানে একাধিক ট্রেডার প্রলুব্ধ হয়েছেন বৃহৎ পরিমাণ অর্থ হারিয়ে। তথ্য অনুযায়ী, মাত্র এক দিনে ১৯ বিলিয়নের বেশি ডলারের ক্রিপ্টো পজিশন জোরপূর্বক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং কয়েক অণু ট্রেডার তাদের দীর্ঘমেয়াদী পজিশন হারিয়েছেন। কয়েনমার্কেটক্যাপের তথ্য অনুসারে, ১১ অক্টোবর দুপুর ১২:৪২ মিনিটে বিটকয়েনের মূল্য ৮.০৫% কমে পড়ে ১,১১,৫৪২.৯১ ডলারে। এর বাজার মূল্য দাঁড়িয়েছে ২.২২ ট্রিলিয়ন ডলার এবং ট্রেডিং ভলিউম ছিল ১৮৩.৮৮ বিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে, ইথেরিয়াম ১১ শতাংশ পতনের পরে প্রায় ৩,৮৭৮ ডলার ট্রেড হচ্ছে। প্রধান অল্টকয়েনগুলো যেমন- এএক্সপি, ডজকয়েন, ও কার্ডানো, প্রায় ৩০ শতাংশ মূল্যহ্রাস সম্মুখীন হয়েছে। এই মূল্যপতনের মূল কারণ হিসেবে বিশ্লেষকরা লিভারেজড ট্রেডের ধসকেই দেখছেন, যেখানে বেশ কিছু ট্রেডার অতিরিক্ত ধার নিয়ে দীর্ঘমেয়াদী পজিশন রাখছিলেন। বিশ্লেষকদের মতে, মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ২০ বিলিয়নেরও বেশি ডলার লিভারেজড পজিশন বন্ধ হওয়ার ফলে, ইতিহাসের অন্যতম বড় এই লিকুইডেশন ঘটেছে। এক কথায়, এই অপ্রত্যাশিত ঘটনার মাধ্যমে এক মিলিয়নেরও বেশি ট্রেডার তাদের পজিশন হারিয়েছেন, যার বেশিরভাগই ছিল বিটকয়েন ও ইথেরিয়ামের দীর্ঘমেয়াদী পজিশন। বিজনেস অ্যাম ওয়েবসাইটের তথ্য বলছে, ক্রিপ্টো বাজারের ব্র্যান্ড স্ট্রেংথ ইনডেক্সের ওপেন ইন্টারেস্টের প্রায় ৪০ শতাংশ হ্রাস ঘটেছে। এতে বোঝা যাচ্ছে, সিস্টেম থেকে দ্রুত পরিমাণে লিভারেজের অর্থ সরানো হচ্ছে, যা সামগ্রিক স্তরকে কমিয়ে দিচ্ছে। আফ্রির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ড্যানিয়েল পারেরা বলছেন, এটি মূলত একটি ‘তরলতা-চালিত রিসেট’, যেখানে বিক্রির মাধ্যমে স্বাভাবিকভাবেই পরিস্থিতি সামলানো হয়েছে। তিনি বলেন, এই ঘটনার সঙ্গে ব্লকচেইনের মূল বিষয় বা কৌশলের সম্পর্ক খুবই কম এবং এটি সম্পূর্ণ ম্যাক্রো অর্থনৈতিক উদ্বেলনের ফলাফল। ইনভেস্কোর ইটিএফ প্রোডাক্টের ম্যানেজার ক্রিস মেলর উল্লেখ করেন, এটি একটি অযৌক্তিক আচরণ ছিল না। তার মতে, বিটকয়েন এখন উচ্চ বাটা ম্যাক্রো অ্যাসেটের মতো আচরণ করছে, যা বৈশ্বিক অর্থনীতি, মুদ্রাস্ফীতি, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা ও বৈশ্বিক ট্রেড পরিস্থিতির প্রতিক্রিয়া। এটি ক্রিপ্টোকারেন্সির ভবিষ্যতের জন্য একটি অনুসন্ধানমূলক লক্ষণ, অপূর্ণতা নয়। অন্যদিকে, ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কানাডা, মেক্সিকো ও চীনের ওপর নতুন শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তে গোটা বিশ্বে বাণিজ্য যুদ্ধের ঝুঁকি বাড়ছে। এর ফলস্বরূপ, শুধু শেয়ার বাজারই নয়, ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদেও বিনিয়োগকারীদের সৃষ্টির আগ্রহ কমে যাচ্ছে, যার প্রভাব পড়ছে ক্রিপ্টোকারেন্সি বাজারেও। এই সব বিস্তারিত পরিস্থিতি মিলিয়ে বোঝা যাচ্ছে, আজকের এই গভীর ট্রেডিং সংকট একটি বড় বৈশ্বিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের ইঙ্গিত দিচ্ছে। SHARES অর্থনীতি বিষয়: