মির্জা ফখরুলের বক্তব্য: নির্বাচন বিলম্বিত করতে পিআর পদ্ধতির ষড়যন্ত্র

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ২:৩২ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৪, ২০২৫

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্পষ্ট করে বলেছেন যে, পিআর পদ্ধতি নিয়ে চলমান আন্দোলনের মূল লক্ষ্যই হচ্ছে কেন্দ্রীয় নির্বাচনকে বিলম্বিত করা। তিনি উল্লেখ করেছেন, এই চক্রান্তের মাধ্যমে দেশ পরিচালনায় জনগণের আস্থা অটুট রাখতে চাচ্ছে না কেউ। ফখররুল বলেন, কিছু রাজনৈতিক দল এই পদ্ধতির বিরুদ্ধে কথাবার্তা বললেও তাদের আসল উদ্দেশ্য হলো, জনগণের ভোটাধিকারকে বাধাগ্রস্ত করা ও নির্বাচনী পরিবেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করা। এই পদ্ধতি দেশের সাধারণ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য নয় এবং সরকার পক্ষের চাপিয়ে দেওয়া এমন পরিকল্পনাও তারা সূচনালাভ করেনি। দেশের মানুষের বুঝদারীতার উপর আস্থা রেখে তিনি বলেন, আমাদের দল স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে যে, তারা এই পদ্ধতিকে মেনে নেবে না। জনগণই এলো ভোটের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেবে এবং তাদের ভোটের মধ্য দিয়েই নির্ধারিত হবে পরবর্তী সরকার।

মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি আশাবাদী যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ২০২৮ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করবে। তিনি আরও বলেছিলেন, দেশের জনগণ স্বাভাবিকভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে তাদের পছন্দের দলকে বেছে নেবে, যারা ইতিমধ্যে পূর্বে সরকারের দায়িত্ব পালন করে দেশের উন্নতিতে কাজ করেছে। তিনি মন্তব্য করেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এই দেশে প্রথম সংবিধানে আল্লাহর উপর আস্থা আর বিশ্বাসের কথা লিখে গেছেন, যা আজকের অন্যান্য দল প্রকৃতির বিকৃতি করে বিভ্রান্তির অপচেষ্টা চালাচ্ছে।

ফখরুল আরও জানান, ১৯৭৫ সালে শহীদ জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে সেদিনের পরিস্থিতির বিরুদ্ধে জনগণ সরব হয়েছিল, তখন এই দেশ স্বনির্ভর ও আত্মনির্ভরশীল করার জন্য একত্রিত হয়েছিল। বর্তমানেও সেই একই লক্ষ্যে আমরা সবাই একাত্ম হয়েছে আমাদের নেতা তারেক রহমানের নেতৃত্বে। আমাদের লক্ষ্য হলো একটি স্বনির্ভর, স্বচ্ছ মজ্জা ও মর্যাদাপূর্ণ বাংলাদেশ গড়ে তোলা, যেখানে দেশের মানুষ Proud হবে।

তিনি অস্পষ্ট করে বলেন, বিভিন্ন ষড়যন্ত্র এখনো চলছে। তবে, তিনি দৃঢ়ভাবে আশ্বস্ত করেন যে, বাংলাদেশের মানুষ সব চক্রান্ত আর ষড়যন্ত্রকে পরাস্ত করতে সক্ষম। সামনের দিনগুলোয় চ্যালেঞ্জ আসবে, তবে সত্য ও ন্যায্যতার পক্ষে চলতে তিনি সবাইকে আহ্বান জানান। আমাদের প্রক্রিয়া শান্তিপূর্ণ এবং গণতান্ত্রিক উপায়ে হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

ফখরুল মন্তব্য করেন যে, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ভুলে যাওয়া বা অবমূল্যায়ন করার চেষ্টাকারীরা নিজেদের ষড়যন্ত্রে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, যুদ্ধের মধ্য দিয়েই আমাদের স্বাধীনতা এসেছে, এবং এই স্বাধীনতা আমাদের সামনের পথে নতুন চিন্তা-চেতনা ও উন্নতির জন্য পথ দেখিয়েছে। তিনি যোগ করেন, তাঁর সহযোদ্ধারা সকলেই মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন। তাই, আমাদের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে তোলা, যেখানে সবাই একসাথে এগিয়ে যাবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় পার হলেও এখনো মানুষ আশা করে যে, তারা সত্যিকার অর্থে একটি নতুন ও উন্নত বাংলাদেশ দেখতে চান। তবে, এই প্রক্রিয়ার প্রত্যাশিত সুফল পেতে হলে অংশ নেওয়া প্রত্যেকের মানসিক প্রস্তুতি ও সম্মিলিত সৌজন্য জরুরি। তিনি উল্লেখ করেন, তারেক রহমানের এক্সক্লুসিভ ইনটারভিউ বা বিবিসি, ফিন্যাশনাল টাইমসের মত আন্তর্জাতিক মাধ্যমে তার কথাগুলো প্রচারিত হয়েছে, যা দেশের পার্লামেন্ট, সরকার ও জনগণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা দেয়।

বিএনপি নেতারা বলছেন, বেকার সমস্যা সমাধানে ইতিমধ্যে বেশ কিছু কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং কিছ সময়ের মধ্যেই বেশ কিছু কাজ অর্ধেক সম্পন্ন করা হয়েছে। এছাড়া, অন্যান্য দল, যেমন জাগপার, গণদল, সাম্যবাদী দল, ও ন্যাপের নেতারাও আলোচনা সভায় তাদের বক্তব্য পেশ করেন। বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই সব আন্দোলন-সংঘর্ষ ও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে জাতির সামনে বিশাল সংগ্রাম চলছে, তবে তাদের দৃঢ় বিশ্বাস, দেশের মানুষ এই বিপ্লবী লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম।