চট্টগ্রাম বন্দরের তিনটি টার্মিনাল বিদেশি অপারেটরদের হাতে যাওয়ার পরিকল্পনা Staff Staff Reporter প্রকাশিত: ২:৩৫ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৩, ২০২৫ চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি, লালদিয়ার চর এবং ঢাকার কেরানীগঞ্জের পানগাঁও টার্মিনালগুলো ডিসেম্বরের মধ্যে বিদেশি অপারেটরদের হাতে হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ। তিনি জানান, এই তিনটি টার্মিনালের মধ্যে পানগাঁও টার্মিনালটি কিছুটা সময় আরও নেওয়া হবে। এছাড়া, আগামী অক্টোবরে নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) থেকে বিদেশি অপারেটরদের পরিচালনায় নেওয়ার পরিকল্পনা ছিল, সেটার জন্যও কিছুটা সময় লাগবে। রোববার রাজধানীর পুরানা পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির ভাষণে সচিব এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ভবিষ্যতের পরিকল্পনায় স্ট্র্যাটেজিক ও ভৌগোলিক বিষয়গুলো বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে, তবে এতে কোনো বড় সমস্যা হবে না। শ্রীলঙ্কা, ভারতে and অন্যান্য দেশের বন্দরে বিদেশি অপারেটররা কাজ করছে, সেখানে কোনো সমস্যা থাকলে কেন আমাদের দেশের বাসিন্দারা তা সফলভাবে পরিচালনা করতে পারবেন না? চট্টগ্রাম বন্দরের ক্যাপাসিটি বাড়ানোর পরিকল্পনা সম্পর্কে তিনি বলেন, আমাদের বন্দরটি এমন কিছু করছে যা বিশ্বের অধিকাংশ বন্দরের ক্ষমতার বাইরে। তারা কন্টেইনার থেকে পণ্য ডেলিভারির জন্য নতুন প্রযুক্তি ও ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। বন্দরের ১৩টি গেটের মধ্যে বর্তমানে মাত্র ৬টিতে স্ক্যানিং মেশিন আছে, তাও আবার অনেকগুলো নষ্ট। এভাবে চালানো সম্ভব নয়। এজন্য বিদেশি অপারেটর নিয়োগের মাধ্যমে বন্দরের ক্ষমতা বাড়ানোর চেষ্টা চলছে, যা বিনিয়োগ আকৃষ্ট করবে। ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে অনেকেই বিদেশিদের হাতে বন্দর চালানোর বিরোধিতা করছেন এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, তারা বিভিন্ন সময় এ নিয়ে নানা কথা বলছেন, তবে পরিস্থিতি বুঝে পরে তারা মত পরিবর্তন করে থাকেন। বন্দরের উন্নয়নে ব্যয় বৃদ্ধির বিষয়ে প্রশ্নের উত্তরে সচিব বলেন, যদি সেবার মান বাড়ানো যায় এবং দ্রুততর সেবা দেওয়া হয়, তাহলে অযৌক্তিক জাহাজের দেরি কমানো সম্ভব। এতে বিধ্বস্ত ক্ষতি ও ক্ষতি কমে আসবে, ফলে অতিরিক্ত খরচই সমস্যা নয়। সমুদ্রগামী জাহাজ মালিক সমিতির সভাপতি আজম জে চৌধুরী বলেন, দেশের জাহাজের মধ্যে দুই ধরনের পতাকা দেখা যায়। সরকারি তেল ও পণ্য বহনকারী জাহাজগুলো সরকারি পতাকাবাহী হলেও, সেক্টরে কার্যরত বেসরকারি জাহাজের পতাকা কোন দেশের হতে পারে তা স্পষ্ট নয়। তিনি প্রশ্ন করেন, তাহলে দেশের বাইরে কোন দেশের পতাকায় জাহাজ পরিচালনা হচ্ছে? মূল প্রবন্ধে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) চেয়ারম্যান ড. জায়দী সাত্তার বলেন, দেশে জাহাজ ভাঙা শিল্প ও ছোট জাহাজ নির্মাণ খাত বড় জাহাজ তৈরির জন্য ভিত্তি তৈরি করছে। বর্তমানে প্রায় ২০০ মিলিয়ন ডলারের কার্যাদেশ রয়েছে, যারা এগুলো আগে থেকে ঠিকমতো সরবরাহ করতে পারলে এই অঙ্ক আরও বাড়বে। এর জন্য প্রচলিত ব্যাংকিং ব্যবস্থার বাইরে আলাদা উপযোগী ব্যাংকিং সুবিধা গড়ে তুলতে হবে। তিনি আরো বলেন, বৈশ্বিক বাণিজ্য নির্ভর করে জাহাজ নির্মাণ শিল্প। বিশ্ব অর্থনীতি ভালো থাকায় এই খাতে সম্ভাবনা বাড়ছে। গতিসূচক সুবিধা কাজে লাগালে, দুই বিলিয়ন ডলারের শিল্পে রূপান্তর সম্ভব। অপর দিকে, স্বল্পোন্নত রাষ্ট্র থেকে উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তরপ্রক্রিয়ায় থাকায় তিনি জোর দিয়ে বলেন, এখন এশিয়ীয় ও উন্নয়নশীল শিল্পে মনোযোগী হতে হবে। জাহাজ নির্মাণ শিল্প একদিকে তৈরি পোশাকের বাইরে টেকসই শিল্প হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে। অতিথিদের মধ্যে ছিলেন ইআরএফের সভাপতি দৌলত আক্তার মালা, এবং সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম। SHARES অর্থনীতি বিষয়: