গাজায় যুদ্ধবিরতি সফলভাবে কার্যকর

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ২:৪১ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১১, ২০২৫

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী শুক্রবার এক অফিসিয়াল বিবৃতিতে ঘোষণা করেছে যে, ফিলিস্তিনে চলমান যুদ্ধবিরতি গতকাল শুক্রবার দুপুর থেকে কার্যকর হয়েছে। এতে উপত্যকার বিভিন্ন স্থানে থাকা সেনাদের ধীরে ধীরে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে এবং নির্ধারিত চুক্তি অনুযায়ী বেশ কয়েকটি সীমান্তে মনোযোগ দেয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে, গাজার দক্ষিণে বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিরা উত্তরের দিকে যেতে পারছেন, যা অনেকের আশার সঞ্চার করেছে।

নিউইয়র্ক টাইমসের রিপোর্ট অনুযায়ী, হামাস ও ইসরায়েল মধ্যকার যুদ্ধবিরতির চুক্তি অনুমোদিত হওয়ার পর এই ঘোষণা আসে। তবে, ইসরায়েলি সেনারা এখুনি কোনও ধরনের হুমকি মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকবেন বলেও জানানো হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জিম্মি ও বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিবিসির তথ্যানুসারে, আগামী সোমবার দুপুর ১২টার মধ্যে জীবিত থাকা ২০ জন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে হামাসের পক্ষ থেকে। এই সময় থেকেই এই মুক্তির গণনা শুরু হয়েছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র আবিচায় আদ্রায়ে জানান, দক্ষিণ গাজার ফিলিস্তিনিরা প্রধান সড়ক ধরে উত্তরে যেতে পারছেন। তবে, কিছু এলাকায় সেনা উপস্থিত থাকলেও, সেগুলো ‘অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে উল্লেখ করে নিরাপত্তার জন্য সাধারণ মানুষের সেখান থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে, গাজার সিভিল ডিফেন্স এজেন্সির সূত্রে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, ইসরায়েলি সেনা ও সশস্ত্র যানগুলো গাজা সিটি ও খান ইউনিস থেকে সরে গেছে। ফলে, বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা নিজ বাড়িতে ফেরার প্রত্যাশা করছেন।

এএফপি’র রিপোর্টে দেখা গেছে, হাজার হাজার ফিলিস্তিনি উপকূলের কাছাকাছি রাস্তা ধরে হাঁটছেন। খান ইউনিসে একজন শ্রমিক, আমীর আবু (৩২), বলেন, ‘শোক নিয়েই আমরা আমাদের পুরোনো এলাকায় ফিরছি।’ যদিও পরিস্থিতি এখন ধ্বংসস্তূপের স্তূপ; তবুও, তারা আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ যে পরিস্থিতি কিছুটা সঠ Thomson শেষ হয়ে আসছে।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) নিশ্চিত করেছে যে, গাজার যুদ্ধবিরতি চুক্তি Officially কার্যকর হয়েছে। তারা জানিয়েছে, তাদের সদস্যরা নির্ধারিত মোতায়েনের সীমা বরাবর ফিরে এসেছেন। এই সীমা নির্দিষ্ট এলাকায় সামরিক বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিকল্পনা অনুযায়ী মোতায়েনের জন্য নির্ধারিত।

এক বিবৃতিতে আইডিএফ জানিয়েছে, তারা শুক্রবার দুপুর থেকে মোতায়েনের সীমারেখা বরাবর অবস্থান নিয়েছেন। দক্ষিণ কমান্ডের আওতাধীন এলাকায় থাকা সেনারা সেখানে অবস্থান করবেন এবং কোনো হুমকি মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকবেন।

অফিসিয়াল তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে গাজা উপত্যকার ৫৩ শতাংশ অঞ্চল নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, যা বেশিরভাগই শহরাঞ্চলের বাইরে। পাশাপাশি, ইসরায়েল থেকে প্রতিদিন ৬০০ ট্রাকের মাধ্যমে জরুরি ত্রাণ প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। এই ট্রাকগুলো খাদ্য, ওষুধ, আশ্রয় সামগ্রী ও জ্বালানি সরবরাহ করবে বলে জানা গেছে।

আল-জাজিরার রিপোর্টে বলা হয়েছে, এই ত্রাণবাহী ট্রাকগুলো সালাহ আল-দিন ও আল-রাশিদ রাস্তাগুলো দিয়ে গাজা উত্তরে চলাচল করবে। এই কার্যক্রমের মাধ্যমে মানবিক সাহায্য পৌঁছে দেওয়া হবে। ট্রান্সপোর্টের দায়িত্ব 맡ে থাকবে জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বেসরকারি খাতের সংস্থাগুলো।

এছাড়াও, গাজা বাসিন্দারা রাফাহ সিরিয়াল দিয়ে মিসরেও যেতে পারবেন, যা আগে থেকে কিছুটা অনুমোদিত ছিল। তবে, এই যাত্রা ইসরায়েলের অনুমোদন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের পর্যবেক্ষণে হবে। এটি একটি আশার আলো হিসেবে দেখা হচ্ছে, কারণ মানুষের জীবন স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে শুরু করেছে।