ইসরাইলের বাধা সত্ত্বেও গাজায় ত্রাণ বহরের অগ্রগতি অব্যাহত Staff Staff Reporter প্রকাশিত: ২:৪২ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৩, ২০২৫ গাজায় পৌঁছানোর জন্য প্রস্তুতি নেওয়া ত্রাণ বহনকারী এক নৌবহর জানিয়েছে, ইসরাইলি নৌবাহিনীর প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও তাদের বেশ aantal জাহাজ বৃহস্পতিবার বিপর্যস্ত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের দিকে সাহসীভাবে এগিয়ে চলেছে। এই খবর নিশ্চিত করেছে এএফপি জেরুজালেম থেকে। জানা গেছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের স্বেচ্ছাসেবক ও রাজনীতিবিদরা সহায়তা পাঠানোর জন্য নিজেদের জাহাজে যোগ দিয়েছেন। ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার অবরোধজোড়া পরিস্থিতি দেখে জাতিসংঘও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, জানিয়ে সেখানে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা বেড়ে গেছে। গত মাসে স্পেন থেকে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা নামে এই নৌবহর ছেড়ে যায়, যাতে প্রধানত সুইডেনের জলবায়ু সক্রিয় কর্মী গ্রেটা থানবার্গসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা ও মানবাধিকার কর্মীর দল রয়েছে। তবে বুধবার ইসরাইলি নৌবাহিনী তাদের বাধা দেয়ার জন্য সতর্ক করে এবং বেশ কিছু জাহাজকে সামনের দিকে এগোতে নিস্তার দেয়নি। তারপরও বৃহস্পতিবার ভোরের দিকে এই নৌবহর জানিয়েছে, তারা বাধা উপেক্ষা করে গাজা উপকূলের খুব কাছাকাছি পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে। নৌবহরটি এক্স-এ পোস্ট করেছে, যেখানে দেখা গেছে, স্থানীয় সময় ভোর ৩টা ২০ মিনিটে (GMT ০০:২০) তারা বলছে, ‘ইসরাইলের দখলের বিরুদ্ধে সব বাধা উপেক্ষা করে মাত্র ৪৬ নটিক্যাল মাইল দূরে ৩০টি নৌকা এখনো গাজার দিকে এগোচ্ছে।’ ত্রাণ বহনকারী দলের মুখপাত্র সাইফ আবুকেশেক বলেছেন, ইসরাইলি বাহিনী ২শ’ জন যাত্রীসহ ১৩টি নৌকা আটক করেছে। যাত্রীদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিলেন স্পেন ও ইতালির নাগরিকও। তিনি ইতোমধ্যে ইনস্টাগ্রামে একটি ভিডিও পোস্ট করে বলেছেন, ‘আমাদের মিশন চলছে’। এছাড়াও উল্লেখ করেছেন, ‘তারা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, তারা অনুপ্রাণিত এবং আজ ভোরের মধ্যে অবরোধ ভেঙে দিতে তারা প্রয়োজনীয় সবকিছু করছে।’ নৌবহর সূত্রে জানা গেছে, বুধবার রাত ৮টা ৩০ মিনিটে ইসরাইলি নৌবাহিনী বাধা দেয়ার ঘটনা ঘটেছে, যারা আন্তর্জাতিক জলসীমা অতিক্রম করার সময় এই পদক্ষেপকে ‘অবৈধ’ বলে অভিহিত করেছে। এই বিষয়ে একটি বিবৃতিতে বলা হয়, ‘নিশ্চিত বাধা সত্ত্বেও লাইভ স্ট্রিম এবং কিছু নৌকার সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।’ অপরদিকে, ইসরাইলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক্স-এ জানায়, ‘কিছু জাহাজকে নিরাপদে থামানো হয়েছে এবং তাদের যাত্রীরা ইসরাইলি বন্দরে স্থানান্তর করা হচ্ছে।’ মূলত থানবার্গের জাহাজসহ কয়েকটি জাহাজের ছবি ও ফুটেজ সেখানে দেখা গেছে, সেখানে বলা হয়েছে, ‘গ্রেটা ও তার সহযাত্রীরা নিরাপদ ও সুস্থ আছেন।’ হামাস এই নৌচলাচলের বাধাদানকে ‘জলদস্যুতা ও সামুদ্রিক সন্ত্রাসবাদের অপরাধ’ বলে কড়া ভাষায় নিন্দা জানায়, কারণ এটি ইসরাইলের সাথে গাজায় চলমান সংঘাতের মধ্যে এসেছে। তবে স্পেন ও ইতালির সমর্থনে জাহাজগুলো গাজার উপকূলে প্রবেশের জন্য প্রস্তুত হলেও, ইসরাইলের নিষেধাজ্ঞা মানতে তারা অস্বীকৃতি জানিয়ে, ঘটা করে স্থানীয় প্রশাসন ও নৌ সেনাদের সতর্ক করে রেখেছে। এই ঘটনা নতুন করে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগও তোলে। ইতালিতে ইতোমধ্যে নৌবহরটিকে সমর্থনের জন্য সাধারণ ধর্মঘটসহ বিভিন্ন প্রতিবাদ সভাও অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে বেশ কিছু রাজনৈতিক ও মানবাধিকার সংস্থা এই প্রক্রিয়াকে ‘নিরপেক্ষতা ও মানবিকতার বিরুদ্ধে অবিচার’ বলে অভিহিত করেছে। কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেট্রো ঝড়ো ভাষায় বলেছেন, ‘ইসরাইলি বাধা অমানবিক এবং ন্যায়বিচারের পরিপন্থী। আমি আমার দেশের ইসরাইলি কূটনীতিকদের বহিষ্কার করবো।’ অন্যদিকে তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, এই ধরনের জলসীমায় বাধাদানের ঘটনা ‘আন্তর্জাতিক আইনের গুপ্ত লঙ্ঘন ও অসংখ্য বেসামরিক নাগরিকের জীবন ঝুঁকিতে ফেলছে।’ এখনো এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকায় অনেক দেশ ও আন্তর্জাতিক সংগঠন উদ্বিগ্ন। স্পেন ও ইতালির নেতারা তাদের সমর্থক সমাবেশের মাধ্যমে এই ঘটনায় প্রতিবাদ জানাচ্ছে, একই সাথে জাহাজ চলাচলের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখার দাবি জানাচ্ছে। আন্তর্জাতিক সমাজে এই অভিযান বলপ্রয়োগের মাধ্যমে অসাধুপন্থার উদাহরণ হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে শান্তি শান্তির পথকে আরো কঠিন করে তুলতে পারে। SHARES আন্তর্জাতিক বিষয়: