ইসরায়েলের বাধা উপেক্ষা করে এগিয়ে যাচ্ছে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার ৩০টি নৌযান

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ২:৪৪ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২, ২০২৫

গাজায় যুদ্ধবিধ্বস্ত ফিলিস্তিনিদের জন্য খাদ্য, ওষধ ও অন্যান্য জরুরি সামগ্রী নিয়ে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার নৌযানবহর ঠিকঠাক এগিয়ে যাচ্ছে, যদিও ইসরায়েলি নৌবাহিনী বাধা প্রদান করেছে। বুধবার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক্সে প্রকাশিত এক বার্তায় ইসরায়েলের নৌবাহিনী জানায়, তারা ১৩টি নৌযান আটক করেছে, যার মধ্যে হামাস-সুমুদ ফ্লোটিলার চারটি ছিল। তবে এই বাধার মাঝেও, পূর্ণ শক্তি দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে আরও ৩০টি নৌযান, গাজার উদ্দেশ্যে চলাচল করে।

আন্তর্জাতিক পরিবেশ ও মানবাধিকার আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গসহ বেশ কয়েকজনকে আটক করেছে ইসরায়েল। তবে তাদেরই এক বার্তায় বলা হয়, ‘গ্রেটা থুনবার্গ ও তার অন্যান্য বন্ধুরা নিরাপদ ও সুস্থ আছেন।’

গত ৩১ আগস্ট স্পেনের একটি বন্দরে থেকে শুরু হয় গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার যাত্রা, যেখানে মোট ৪৩টি নৌযান রয়েছে। এই নৌযানগুলোর মধ্যে আরও চারটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পরিচালনায়, যারা বিভিন্ন দেশের নাগরিকেরা, যোগ দিয়েছেন। এই নাগরিকরা বিভিন্ন পেশাজীবী—পার্লামেন্টারিয়ান, আইনজীবী, রাজনৈতিক আন্দোলনকারী বা স্বেচ্ছাসেবী। গত সপ্তাহে তারা ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে গাজার কাছাকাছি পৌঁছায়, যেখানে একটি শান্তিপূর্ণ মানবিক অভিযান চালানোর উদ্দেশ্যে।

অথচ, গাজা উপকূলে পৌঁছার মাত্র vài ঘণ্টা পরই, রাতে, ইসরায়েলি নৌবাহিনী তাদের চারপাশ ঘেরাও করে এবং ১৩টি নৌযান আটক করে। এ সময় তারা অজ্ঞাতনামা তিনটি জাহাজের নাম প্রকাশ করে— স্পেক্টার, অ্যালমা এবং সাইরাস।

নৌযানগুলোতে থাকা যাত্রীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবি ও ভিডিও শেয়ার করে জানান, তারা গাজার জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য ও ওষুধ নিয়ে যাচ্ছেন, যা মানে অনেকের কাছে মানবিক সাহায্য হিসেবে এক গুরুত্বপূর্ণ উপায়। তারা আরও অভিযোগ করে, ইসরায়েলি নৌবাহিনী তাদের অপহরণ করার চেষ্টা করছে। বেশ কিছু যাত্রী তাদের পাসপোর্টসহ ছবি ও ভিডিও দিয়ে ঘটনার বিস্তারিত জানিয়েছেন।

আন্তর্জাতিক মহলে, এ ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন আয়ারল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইমন হ্যারিস। তিনি এক বার্তায় বলেন, ‘এটি একটি শান্তিপূর্ণ মানবিক মিশন, যার মূল লক্ষ্য ছিল গাজায় চলমান ভয়াবহ মানবিক সংকট মোকাবেলা। এই বাধা আমাদের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক।’

তবে, বাধা সত্ত্বেও, বাকি ৩০টি নৌযান এখনও গাজার উপকূলের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। গ্লোবাল সুমुद ফ্লোটিলার পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, ‘ইসরায়েলের অবৈধ পদক্ষেপ আমাদের মাঝিনোক করতে পারবে না। আমরা আমাদের মানবিক কাজ চালিয়ে যাব এবং গাজায় একটি স্বাধীন মানবিক করিডর তৈরি করব।’

উল্লেখ্য, গত ১৮ বছর ধরে ইসরায়েল গাজার উপকূলে নৌরোধ চালিয়ে আসছে, যার ফলে গাজার কোনো মেরিন বন্দর নেই। এই অবরোধের কারণে আন্তর্জাতিক সমুদ্র পরিবহন অবরুদ্ধ। গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার পৌঁছালে এটি হবে, গত ১৮ বছরে গাজার জন্য প্রথম আন্তর্জাতিক নৌবহর অবতরণ।

গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ৩টায় তারা জানায়, গাজা থেকে ৪৬ নটিক্যাল মাইল বা ৮৫.১৯ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে এই ৩০টি নৌযান।