বিদ্বেষ থেকে এনবিআর বিভক্তি ভয়ংকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করবে

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ২:৩৫ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৫

রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্ত করে নতুন করে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা নামে দুটি পৃথক সংস্থা গঠনের সুপারিশ নিয়ে সরকারি অধ্যাদেশে যথাযথভাবে প্রতিফলন হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক সদস্য ফরিদ উদ্দিন। তার মতে, যদি এই বিভক্তি বর্তমান আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে ‘বিদ্বেষ’ বা পক্ষপাতিত্বের ভিত্তিতে করা হয়, তাহলে এটি দেশের জন্য খুবই বিপজ্জনক পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে।শনিবার ঢাকার গুলশানে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) ও পলিসি এক্সচেঞ্জ অব বাংলাদেশ (পিইবি) আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ কথাগুলো বলেন।ফরিদ উদ্দিন বলেন, সংস্কার প্রতিবেদনে বলে ছিল যে, রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা নামে দুটি ভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হবে। কিন্তু বাস্তবায়নে তা পর্যাপ্ত সমন্বয় দেখা যায়নি। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যে সুপারিশ করেছি, তার যথাযথ প্রতিফলন অধ্যাদেশে হয়নি। যদি এই বিভাজন ভুলভাবে বা বিদ্বেষপ্রসূতভাবে করা হয়, তাহলে বর্তমানের চেয়েও কঠিন পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে।’এ সময় তিনি একটি নথি তুলে ধরে বলেন, অধ্যাদেশে কী বলা হয়েছে এবং কী হওয়া উচিত—সেসব নিয়ে আলাদা নোট প্রস্তুত করেছেন, যা সবাইকে পড়া ও আলোচনা করা দরকার।গত ১২ মে রাতে সরকার ‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করে এনবিআর বিলুপ্ত করে। পরেরদিন থেকেই এনবিআর কর্মীরা আন্দোলনে নামে। তারা শীর্ষ পদে প্রাথমিকভাবে প্রশাসন ক্যাডার নয়, বরং বিসিএস (কর) ও বিসিএস (শুল্ক ও আবগারি) ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিয়োগের দাবি তোলে। এই পরিস্থিতিতে সরকার অল্প সময়ের মধ্যে অধ্যাদেশ সংশোধনের ঘোষণা দেয়। subsequent ধাপে ১১টি পরিবর্তন আনা হয় এবং অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে আনার কথা যুক্ত করা হয়।পরামর্শক কমিটির অন্য সদস্য এবং সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ বলেন, সঠিকভাবে এই সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য রাজনৈতিক কমিটমেন্ট জরুরি। শুধু রিপোর্ট দেওয়া বা অধ্যাদেশ জারি করলেই হবে না, বাস্তবায়নে মনোযোগ না দিলে সমস্যা আরও বাড়বে।তিনি ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনাদের মতামত দিন। যদি পরে সরকার কিছু না শোনে, তখন বলতে পারবেন যে, আমাদের সুপারিশ ছিল, কিন্তু কী বাস্তবায়ন হলো?’এমসিসিআইর সাবেক সভাপতি নিহাদ কবির বলেন, ‘সংস্কার কমিটি খুব ভালো কাজ করেছে। তবে কি পরিণতি হবে, তা আমরা জানি না। বাস্তবায়নের ব্যাপারে যথেষ্ট মনোযোগ দেখা যাচ্ছে না। হঠাৎ করে এনবিআর বিলুপ্ত হওয়ায় বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে।’পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মাশরুর রিয়াজও একই উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘কমিটি স্টেকহোল্ডারদের মতামত নিয়ে সুপারিশ দিয়েছে, কিন্তু সরকারের আগ্রহ কম। যদি দুটি সংস্থা গঠন কার্যকর না হয়, তাহলে একটার বদলে দুই জায়গায় ঝামেলা বাড়বে।’বক্তারা মনে করেন, সংস্কার প্রক্রিয়ায় তাড়াহুড়ো বা ভুল পদক্ষেপ রাজস্ব প্রশাসনকে জটিল করে তুলবে এবং ব্যবসায়ী সমাজের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। সুতরাং, তারা সরকারের কাছে জোর দিয়ে অনুরোধ করেন, সুপারিশগুলো গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে সঠিক পথে এগোনোর।