বাংলাদেশের অর্থখাত অতিমাত্রায় ব্যাংক ঋণের ওপর নির্ভরশীল: অর্থ উপদেষ্টা Staff Staff Reporter প্রকাশিত: ১১:৪৪ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৫ অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক খাত বর্তমানে বেশিরভাগটাই ব্যাংক ঋণের উপর নির্ভরশীল। বেসরকারি ও সরকারি উভয় খাতই ঋণ গ্রহণ করছে, তবে অনেক সময়ই সেই ঋণ পরিশোধের মধ্যে থাকা ছাড়াই পার হয়ে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিই বাংলাদেশের জন্য একটি ট্র্যাজেডি হিসেবে দেখা দিচ্ছে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশের বন্ড ও সুকুক বাজার উন্মোচন: রাজস্ব স্থিতি, অবকাঠামো উন্নয়ন ও ইসলামী মানি মার্কেট’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। সালেহউদ্দিন আহমেদ Confidence জানিয়েছেন যে, ঝুঁকি ভাগাভাগির জন্য একটি শক্তিশালী পুঁজিবাজার এবং বেসরকারি খাতের সক্রিয় অংশগ্রহণ অত্যন্ত জরুরি। সাধারণ মানুষকে বোঝাতে হবে যে, বিনিয়োগের সঙ্গে ঝুঁকি জড়িত, বিশেষ করে বন্ড, ডিবেঞ্চার ও সিকিউরিটিজে। তিনি আরও বলেছেন, পুঁজিবাজার কোনো চিরস্থায়ী গ্যারান্টিযুক্ত আয়ের উৎস নয়। অর্থ উপদেষ্টা আরও উল্লেখ করে বলেন, ছোট বিনিয়োগকারীরা বেশিরভাগ মনে করেন, বিনিয়োগ করলে যেন মুনাফা নিশ্চিত, কিন্তু এই বাজারের ঝুঁকি তারা মানতে চায় না। তাই ডিএসই ও বিএসইসি কে আরও উদ্যোগী হয়ে বিনিয়োগকারীদের শিক্ষিত করতে হবে। তিনি সুকুকের উল্লেখ করে বলেন, এই ইনস্ট্রুমেন্টটি ব্যাংকের উপর চাপ কমাতে ব্যাপক সম্ভাবনা রাখে, যদি সঠিকভাবে ব্যবহার হয়। দেশে বর্তমানে প্রায় ২৪ হাজার কোটি টাকার বেশি মূল্যের সুকুক থাকলেও এর অধিকাংশই সরকারি প্রকল্পে ব্যবহার হচ্ছে। বেসরকারি খাতও এগুলি ব্যবহার করে অবকাঠামো ও বিভিন্ন ব্যবসায়িক উদ্যোগে অর্থায়ন করতে পারবে বলে তিনি জানান। অর্থ উপদেষ্টা আরও বলেন, একটি গতিশীল আর্থিক খাত গড়ে তুলতে হলে ব্যাংকর পাশাপাশি শক্তিশালী পুঁজিবাজার, বিমা খাত এবং বিশেষ ট্যাক্স ইনস্ট্রুমেন্ট সমূহকে আরও উন্নত করতে হবে। সাধারণ মানুষ ও সরকারের মধ্যে আস্থা ও বিশ্বাস বাড়ানো জরুরি, কারণ তারা কর প্রদান করে যে সেবা পাচ্ছেন, সেটাই হলো একটি ভালো শাসনব্যবস্থার মূল পরীক্ষা। তিনি উল্লেখ করেন, আমাদের দেশে মূল সমস্যা হলো অর্থের অভাব। অনেক সরকারি কর্মকর্তা মনে করেন, সবকিছুই সরবরাহ করা যাবে, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে আমাদের অর্থের প্রাপ্যতা ও প্রবাহির পরিমাণ খুবই কম। সেমিনারে অর্থ উপদেষ্টা পুঁজিবাজারের শক্তিশালীকরণ ও সুকুকের সম্প্রসারণের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন, যাতে সরকারি ও বেসরকারি প্রকল্পের অর্থায়নে ব্যাংকের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমে যায়। এছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, বন্ড মার্কেটের উন্নয়নে অনেক কাজ বাকি আছে। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এবং বাংলাদেশ ব্যাংক যৌথভাবে এই উন্নয়নের জন্য কাজ করছে। তিনি জানিয়ে থাকেন, তারা একটি উন্নয়নমূলক প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছেন, যা খুব শিগগিরই সরকারের কাছে উপস্থাপন করা হবে। এই প্রতিবেদনে সরকারি ও করপোরেট বন্ডের চাহিদা বাড়ানোর রাস্তা এবং সরবরাহ বৃদ্ধি করার পরিকল্পনা অন্তর্ভুক্ত থাকবে। বাংলাদেশের বন্ড মার্কেট খাটো থাকার কারণে, সেটিকে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ মার্কেটে রূপান্তর করার লক্ষ্যে তারা কাজ করছে। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টা ও পুঁজিবাজার উন্নয়ন কমিটির চেয়ারম্যান ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী, আর্থিক বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেক ও অন্যান্য বিশেষ অতিথি। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ অর্লিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম. কবীর হাসান। অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন বিএসইসির চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ। SHARES অর্থনীতি বিষয়: