সৌদি ও ফ্রান্সের জন্য ‘রেড লাইন’ ঘোষণা ইসরায়েলকে সতর্কবার্তা

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ৭:৫৩ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৫

জাতিসংঘের একটি উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনের শেষে সৌদি আরব এবং ফ্রান্স ইসরায়েলের জন্য একটি স্পষ্ট ‘রেড লাইন’ বা বিপৎসীমা ঘোষণা করেছে। তারা মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতা রক্ষা ও শান্তি প্রতিষ্ঠায়- ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পর সেখানে বসতি নির্মাণ বা দখলদারিত্বের চেষ্টা করলে তা আন্তর্জাতিকভাবে আপোষহীনভাবে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে পরিষ্কারভাবে জানানো হয়।

এ pertinent বিবৃতি মূলত যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সদরদপ্তরে অনুষ্ঠিত এক সম্মেলনের ফলস্বরূপ। এই সম্মেলনে ফ্রান্স, বেলজিয়াম, লুক্সেমবার্গ, মাল্টা, সান মারিনো ও অ্যান্ডোরা ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেয়। এর এক দিন আগে, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও পর্তুগালও একই ধরনের ঘোষণা করে।

সম্মেলনের শেষে প্রকাশিত বিবৃতিতে সৌদি ও ফ্রান্স আরও জানিয়েছে, ইসরায়েল যদি এই রেড লাইন অতিক্রম করে, তাহলে তার জন্য গুরুতর পরিণতি অপেক্ষা করছে। এর ফলে বিদ্যমান ও ভবিষ্যতের শান্তি চুক্তিগুলোর ভীতি সৃষ্টি হতে পারে। গাজায় চলমান সংঘর্ষের অবসান ঘটাতে এবং জিম্মি মুক্তির জন্য এখনই তাদের অগ্রাধিকার।

গাজায় ইসরায়েলি স্থল অভিযান চালানোর ফলে পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে। নিরীহ সাধারণ মানুষ ও জিম্মিদের যে মূল্য দিতে হচ্ছে, তা অবিচার। সৌদি ও ফ্রান্স এই সংঘাতের স্থায়ী সমাধানে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। তারা স্থায়ী যুদ্ধবিরতি, জিম্মি মুক্তি, বন্দি বিনিময়, গাজায় মানবিক সহায়তা ও ইসরায়েলি সেনাদের প্রত্যাহার নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছে।

তারা বলেন, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে একাধিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে যাতে গাজা ও পশ্চিম তীর একীভূত হয়। এর জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা ও তত্ত্বাবধানের মাধ্যমে হামাসের থেকে ক্ষমতা হস্তান্তর নিশ্চিত করতে হবে।

ফ্রান্স ও সৌদি আরব ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের অঙ্গীকারকেও স্বাগত জানিয়ে বলেছে, ফিলিস্তিন শান্তিপূর্ণ রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে উঠবে, সহিংসতা ও সন্ত্রাসবাদ নিষিদ্ধ থাকবে। তারা তাদের আর্থ-সামাজিক সংস্কার, শিক্ষাখাতে পরিবর্তন ও এক বছরের মধ্যে নির্বাচনের প্রতিশ্রুতিও প্রশংসা করেছে।

তারা বলে, এখনই সময় দখলদারিত্ব বন্ধ করে নিজেদের শান্তিপূর্ণ সমাধানে দৃঢ় অঙ্গীকার করার। পাশাপাশি, দ্রুত বসতি স্থাপনকারীদের দমন ও সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানানো হয়েছে।

অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করছে। তাদের যুক্তি, এই স্বীকৃতি হামাসের পক্ষে পুরস্কার ও অন্যায্য, যা যুদ্ধ বন্ধ ও জিম্মি মুক্তির চেষ্টা কঠিন করে তুলতে পারে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ সংগঠন হামাস নতুন প্রস্তাব দিয়েছে, যাতে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি থাকলে ৪৮ জিম্মির অর্ধেক মুক্তি দেওয়া সম্ভব। এই প্রস্তাবের চিঠি ট্রাম্পের কাছে পৌঁছানোর কথা রয়েছে, তবে এখনো সে পায়নি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই আলোচনায় ইসরায়েল গাজা দখলের জন্য নতুন করে এগুচ্ছে।

এদিকে, গাজা পরিস্থিতির ভয়াবহতা প্রতিফলিত করে, গাজা ও পশ্চিম তীরের চিকিৎসা ব্যবস্থা চালু ও উন্নত করার দাবি উঠেছে। পশ্চিমা দেশগুলো গাজায় চিকিৎসা সরঞ্জাম ও সহযোগিতা পাঠানোর জন্য প্রস্তুত। কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্সসহ বেশ কিছু দেশ এই বিষয়ক চুক্তিতে সই করেছে। তবে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই উদ্যোগে এখনো যোগ দেয়নি।