বেগমগঞ্জে সরকারি হাসপাতালের ডাক্তারের রুমে তালা, রোগীরা যান অন্যত্র Staff Staff Reporter প্রকাশিত: ৭:৪৭ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৫ নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে চরম দুর্ভোগ। উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের রুমে তালা ঝুলছে, ফলে রোগীরা চিকিৎসা না পেয়ে দ্রুত ফিরে যাচ্ছেন। বুধবার সকাল ৯টায় হাসপাতালে এসে এসব দৃশ্য দেখা যায়, যেখানে রোগীরা অসহায়ভাবে অপেক্ষা করে থাকছেন মূল কর্মঘণ্টার বাইরে ডাক্তার না থাকার কারণে। বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টায় উপজেলার গোপালপুর গ্রাম থেকে আসা ফরিদ হোসেন (৩৫) নামের এক রোগী তার নাকের সমস্যার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়েছিলেন। তিনি দীর্ঘ দিন ধরে এই সমস্যায় ভুগছেন। লাইনে দাঁড়িয়ে ৫ টাকার টিকিট নিয়ে সেটি দুটি টাকা দিয়ে সংগ্রহ করেন। পরে হাসপাতালের দ্বিতীয় তলার কনসালটেন্ট (ইএনটি) ডাক্তার আলমগীর হোসেনের ২১০ নম্বর রুমের বাইরে সকাল ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকেন, কিন্তু দরজায় তালা ঝুলছে। কবে ডাক্তার আসবেন, তা জানার উপায় নেই। অন্যদিকে, উপজেলা চৌরাস্তা থেকে পায়ে ব্যথা নিয়ে আসা ৬০ বছর বয়স্ক আব্দুর রহমান প্রায় দেড় ঘণ্টা অপেক্ষা করে কোন চিকিৎসা সেবা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন। তিনি ১৫ টাকার রিসিট নিয়ে অপেক্ষা করেছেন, কিন্তু ডাক্তার অপ্রাতিষ্ঠানিক লাইনে দেখা না দেওয়ায় হতাশ তিনি চলে যান। সোমবারের মতো, গাইনী বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ফারজানা রায়হানের কক্ষ Number ২১১-এর বাইরে তালা ঝুলছে। অন্যান্য স্থানে, যেমন কুলসুম আক্তার (১৬) মীর আলিপুর গ্রাম থেকে এসেছেন গাইনি বিভাগে, তবে ডাক্তার উপস্থিত না থাকায় তিনি বেশ কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করে অবশেষে চলে যেতে বাধ্য হন। সরেজমিনে দেখা গেছে, হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট ডাক্তার মো. আব্দুল আউয়াল নিয়মিত কোন চেম্বার করেন না। তিনি বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আসেন, ফলে রোগীরা দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে ক্লান্ত হয়ে ফিরে যান। ডেন্টাল সার্জন ডাক্তার মোঃ শরিফুল ইসলাম ডিউটিরত থাকলেও, তিনি মূলত প্রাইভেট ক্লিনিকে রোগী দেখান—অভিযোগ উঠছে দীর্ঘদিন ধরে। খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মেডিকেল অফিসার ২ জন, এমও প্যাথলজিস্ট ১ জনসহ বেশ কিছু পদ দীর্ঘক্ষণ ধরে শূন্য। উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নের বেশিরভাগ স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রেও ডাক্তার সংকট রয়েছে, যা সাধারণ জনগণের জন্য অতিরিক্ত দুর্ভোগ ডেকে আনছে। অনেক দোকানি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বলছেন, কয়েক দিন আগে এই হাসপাতালে ডাক্তার আসেনি বা দেখা যায়নি। ফেসবুক পোস্টে এ সংক্রান্ত খবরও প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে, বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা মূলত রীতিমতো চেম্বার করেন না। এ পরিস্থিতিতে, নিরীহ রোগীরা সেবা না পেয়ে অন্যত্র যেতে বাধ্য হন। বেগমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এমআরএ ও ডাক্তার সালেহ আহমদ সোহেল বলেন, কিছু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার সদর হাসপাতালে থাকেন, তবে তারা আসেন না এমন অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অপরদিকে, এই হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার মোহাম্মদ হাসান গায়েব চৌধুরীর মাধ্যমে বক্তব্য নেওয়ার জন্য একাধিকবার ফোন করা হলেও তার উত্তর পাওয়া যায়নি। SHARES সারাদেশ বিষয়: