তরিক রহমানের আহ্বান: জনগণের পাশে থাকুন, জনগণকে পাশে রাখুন

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ২:৩৩ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৫

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিএনপি নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, দেশের স্বার্থ ও জনগণের কল্যাণ আমাদের জন্য অগ্রাধিকার। তিনি বলেন, দেশের প্রত্যেক নেতা-কর্মীকে জনগণের পাশে থাকতে হবে এবং জনগণকেও পাশে রাখতে হবে, কারণ জনগণই আমাদের শক্তির মূল উৎস। শনিবার বিকালে কিশোরগঞ্জে বিএনপির ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তারেক রহমান উল্লেখ করেন, বিগত ১৬ বছর ধরে দেশের মানুষ ঐক্যবद्धভাবে সংগ্রাম করে স্বৈরাচার ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিয়েছে। এই সংগ্রামের মূল লক্ষ্য ছিল গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ফিরিয়ে আনা এবং রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠা। তিনি জানান, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনী প্রচেষ্টা অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যেতে হলে আমাদের সবাইকে একত্রে থাকতে হবে এবং বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে দৃঢ় থাকতে হবে। তিনি উল্লেখ করেন, স্বৈরাচার পতনের পর আমরা ৩১ দফার একটি কর্মসূচি ঘোষণা করেছি, যেখানে দেশের শিশু, যুবক, নারীসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষের অধিকারের কথা রয়েছে। এই ৩১ দফা আমাদের নেতা-কর্মীদের manual হিসেবে কাজ করতে হবে জনতার কাছে যাওয়ার জন্য।

তারেক রহমান সতর্ক করে বলেন, কেউ যেন বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা না করে এবং জনগণের বিশ্বাসে আঘাত আনতে না পারে। তিনি মনে করিয়ে দেন, আমরা কোন ব্যক্তির কর্মী নই, আমরা নূ্যনতম জাতীয়তাবাদী শক্তির কর্মী। আমাদের আদর্শ ও নীতির ওপর স্থীর থাকা এবং দলীয় সিদ্ধান্তের প্রতি আনুগত্য বজায় রাখা সকলের দায়িত্ব। নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থেকে দলের মূল নীতি ও আদর্শের প্রতি অবিচল থাকার আহ্বান জানান তিনি।

সম্মেলনের সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সভাপতি শরীফুল আলম। তিনি বলেন, বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলমান রয়েছে। বিশেষ মহল থেকে নানা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, যেমন বিএনপি ইসলাম ধর্ম মানে না- এমন অপপ্রচার। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, বিএনপি সংবিধানে বিসমিল্লাহ সন্নিবেশিত করেছে এবং মুক্তিযুদ্ধের ওপরে বিশ্বাসী। যারা এসব অপপ্রচার চালাচ্ছে, তারা মুক্তিযুদ্ধের সময় মহান দেশের জন্য অস্ত্র ধরেছিলাম, যুদ্ধ করেছিলাম।

তিনি আরও বলেন, বিএনপির ৩১ দফার মধ্যে সংস্কার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে অনেক উল্লেখ রয়েছে। এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন হলে দেশ উন্নত ও সমৃদ্ধ একটি গণতান্ত্রিক দেশে পরিণত হবে।

বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম বলেন, বর্তমান দেশে দুইভাগের মতো বিভক্তি সৃষ্টি হয়েছে। একদিকে কিছু আধিপত্যবাদী শক্তি আছে, অন্যদিকে এই আধিপত্যবাদবিরোধী বিষয়। বিএনপি এর জন্মই হয়েছে এই সব আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, বিএনপি টেকসই মধ্যপন্থী পার্টি, যারা সকল মানুষের অধিকার রক্ষা করে চলবে।

প্রধান বক্তা বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব হাবিবুন নবী খান সোহেল বলেন, জামায়াতে ইসলামি ধর্মের ব্যবসা করছে, তারা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে। ১৯৭১ সালে পাকবাহিনী, মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হত্যা চালিয়ে যায়। এ ব্যাপারে সকলকে সতর্ক থাকতে হবে।

দুপুরে কিশোরগঞ্জের পুরাতন স্টেডিয়ামে জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। অনুষ্ঠান শেষে দলীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে কর্মসূচির সূচনা হয়।

সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, এই সম্মেলনের মাধ্যমে আমাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত হলো, আমরা জনগণের থেকে দূরে নয়। দেশের রাজনীতিতে আমাদের অনড় অবস্থানে থাকব, যাতে ভবিষ্যতেও গণতন্ত্র ও অধিকার প্রতিষ্ঠিত থাকে।

সন্ধ্যায়, জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল আলমের সভাপতিত্বে অন্যান্য দলে উল্লেখযোগ্য নেতা-কর্মীর বক্তব্য এবং বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এসময় ২১টি ইউনিটের কাউন্সিলর সহ বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। ভবিষ্যতে, ভোটের মাধ্যমে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার অপেক্ষায় এই সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্যায় অনুষ্ঠিত হবে।