মহেশখালী-মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর মাছ রপ্তানি ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন আনেবে নতুন দিগন্ত

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ২:৩৫ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৫

নির্মাণাধীন মহেশখালী-মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরের উন্নত অবকাঠামো ও লজিস্টিক সুবিধা দেশের মৎস্য ও সামুদ্রিক খাদ্য রপ্তানি secteur উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি ঘটানোর সম্ভাবনা সৃষ্টি করছে। এই তথ্য শিল্পসংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

মহেশখালী-মাতারবাড়ি ইন্টিগ্রেটেড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট (MID) প্রকল্পের অংশ হিসেবে এই সমুদ্রবন্দর তৈরি করা হচ্ছে, যেখানে জাপানের সহায়তা রয়েছে। এই বন্দর চট্টগ্রাম বন্দরের জট কমাতে এবং বড় জাহাজের সরাসরি চলাচলের সুবিধা প্রদান করে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

বিশেষ করে মৎস্য খাতে এর প্রভাব ব্যাপক হবে। দ্রুত পরিবহন ও কোল্ড চেইন রক্ষা করে তাজা ও সতেজ মাছ দ্রুত বাজারে পৌঁছানো সম্ভব হবে, এতে বাংলাদেশের মাছের মান ও বৈদেশিক বাজারে প্রতিযোগিতা বাড়বে।

মহেশখালীর মাছ ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম বলেন, ‘নতুন এই বন্দরটি হিমায়িত মাছ ও সামুদ্রিক খাদ্য দ্রুত পরিবহনে সহায়ক হবে, ফলে পচন কমে সতেজতা রক্ষা হবে এবং আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদের পণ্য পৌঁছানো আরও সহজ হবে।’

অন্যদিকে, মাতারবাড়ির জেলে মোহাম্মদ আলী বলেছেন, ‘গভীর সমুদ্রবন্দর চালু হওয়ার ফলে আমাদের ধরা মাছ দ্রুত রপ্তানি করে ন্যায্যমূল্য পাবো, যা আমাদের জীবনমান উন্নয়নে অপূর্ব অবদান রাখবে।’

বাংলাদেশের সামুদ্রিক মাছ ধরা ও প্রক্রিয়াকরণ এখনও আন্তর্জাতিক বাজারে বিশ্বের বিশাল ব্যবসা হলেও, এই খাতে তেমন উন্নয়ন হয়নি। তবে, মহেশখালী-মাতারবাড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (MID) উদ্যোগের ফলে এই সম্ভাবনা বাস্তবে রূপ নেওয়ার পথে।

বিশ্বের মোট মাছের প্রায় ৭ শতাংশ বঙ্গোপসাগর থেকে আসে। এছাড়া, বিশ্বের প্রায় ৪৫ কোটি মানুষ এই সাগর ও এর ‘ব্লু অর্থনীতি’ থেকে জীবন ধারণ করে।

বাংলাদেশ ‘ইন্ডিয়ান ওশান টুনা কমিশন’ (IOTC) এর সদস্য হিসেবে নির্দিষ্ট কিছু এলাকা থেকে টুনা মাছ ধরার অনুমতি পায়, তবে অন্যান্য প্রজাতির মাছের জন্য কোটা রয়েছে। তবে, কিছু কোটা প্রতি বছরই অপূর্ণ থাকে।

এই সমস্যা সমাধানে, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ২৮টি গভীর সমুদ্রে মাছ ধরা জাহাজ (লংলাইনার) নির্মাণ বা আমদানির অনুমোদন দিয়েছে।

মাতারবাড়ি বন্দর চিংড়ি শিল্পসহ বিদ্যমান ও নতুন উদ্যোগধারীদের জন্য দ্রুত বাজারে পৌঁছানোর সুযোগ সৃষ্টি করবে, বিশেষ করে ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানে।

বন্দরটির রপ্তানি প্রক্রিয়া সময় ও ব্যয় কমাবে, ফলে ফিলেট, স্মোকড মাছ, রেডি-টু-ইট সামুদ্রিক খাধ্যসহ মান সম্পন্ন পণ্যের রপ্তানি পথ সুগম হবে।

উদাহরণস্বরূপ, স্ক্যালপ (এক প্রজাতির শামুক) প্রক্রিয়াজাতকরণ ও রপ্তানি থেকে ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া, MID এর শক্তিশালী লজিস্টিক সুবিধা দেশে নতুন বিনিয়োগের জন্য দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।