নওগাঁর মোমনিপুর হাটে প্রতি মাসে আড়াই কোটি টাকার কাঁচা মরিচ বিক্রি

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ২:৩৫ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৫

নওগাঁ জেলার মহাদেবপুরের মোমিনপুর বাজারে অবস্থিত স্থানীয় সবচেয়ে বড় পাইকারি কাঁচা মরিচের বাজার। এই হাটে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়, যা দুই দিন আগে ছিল ১৩০ থেকে ১৫০ টাকায়। হঠাৎ করে এই দাম কমে যাওয়ায় সেখানে কৃষক ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে হতাশা তৈরি হয়েছে। কৃষকরা বলছেন, এই দামে মরিচ বিক্রি করলে তাদের লস হতে পারে, কারণ উৎপাদন খরচ আর থাকছে না। অন্যদিকে, ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারতের কাছ থেকে মরিচের আমদানি বেড়ে যাওয়ায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

গত শুক্রবারের মহাদেবপুরের মোমিনপুর বাজারে এই বিপুল ভিড় সাধারণ বা সমবেত দৃশ্য। প্রতি সপ্তাহে এখানে নিয়মিত মোহনা হয়ে বিক্রিবাটা চলে। এক বছরে এ হাটটি প্রায় ছয় থেকে সাত মাস ধরে চলে, যেখানে মাসে দুই থেকে আড়াই কোটি টাকার কাঁচা মরিচের বিক্রয় হয়। এখান থেকে মরিচ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে, যেমন ঢাকা, রাজশাহী, সিলেট, চট্টগ্রাম, দিনাজপুরসহ বহু জেলায় সরবরাহ করা হয়।

মহাদেবপুরের কুঞ্জবন এলাকার কৃষক সোলেমান আলী ও গুলবর রহমান বলেন, এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মরিচের ফলন ভাল হয়েছে। তবে হাটে দাম কমে যাওয়ায় কৃষকদের জন্য লাভজনক হয়নি। তারা বলেন, চাষের জন্য অনেক খরচ হয়েছে; শ্রমিকের মজুরি, কীটনাশক এবং অন্যান্য খরচের সঙ্গে কিছুও অবশিষ্ট থাকছেনা। প্রথমে মরিচের কেজি বিক্রি হয়েছিল ১৩০-১৫০ টাকায়, এখন তা ৬০-৭০ টাকায় নেমে গেছে।

বগুড়া থেকে আসা মরিচ ব্যবসায়ী সুজন মিয়া বলেন, এই হাটের মরিচ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যায়। তবে ভারতের কাছ থেকে মরিচের আমদানি বৃদ্ধি পাওয়ায় হঠাৎ দাম কমে গেছে।

মোমিনপুর হাটের একটি প্রতিনিধি বলেন, এটি জেলার সবচেয়ে বড় মরিচের হাট, যেখানে বছরশুরে ৬ থেকে ৭ মাস এ বাজার চলমান থাকে এবং মাসে ২ থেকে আড়াই কোটি টাকার মরিচের ব্যবসা হয়। তবে এখন দাম কমে যাওয়ায় কৃষকদের আর্থিক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, আবহাওয়ার উন্নতি ও ভালো ফলনের কারণে এ বছর মরিচের উৎপাদন ভালো হয়েছে। শুরুতে বাজারে দাম ভাল থাকলেও এখন কিছুটা কমে যাওয়ায় কৃষকরা লাভবান হবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন। তিনি আরও জানান, চলতি বছর নওগাঁয় ৭৫০ হেক্টর জমিতে মরিচের চাষ হয়েছে, যা এই এলাকার কৃষকদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ আয়ের উৎস। তিনি কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে সহায়তা চালিয়ে যাচ্ছেন।