ডাকসু নির্বাচন: ছাত্র রাজনীতির নতুন দিগন্তের সূচনা

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ২:৩৩ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৫

ডাকসু নির্বাচনের ফলাফলে দেখা গেছে, এই ঘটনার মধ্য দিয়ে ছাত্র রাজনীতির এক নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছে। এমন ঘটনা যে কেবল সাধারণ নির্বাচনের ফল নয়, বরং ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য এক শক্তিশালী বার্তা, তা স্পষ্ট। এই নির্বাচনে ছাত্রদের মনোভাব, তাদের সংগ্রাম ও সততার প্রতিফলন দেখা গেছে যা শিক্ষার পাশাপাশি নীতির মতো মূল স্তম্ভকে শক্তিশালী করে। অদ্ভুত হলেও সত্য, এই বিজয় শুধু স্থুল সংখ্যায় জয় লাভ নয়, বরং তা শিক্ষার্থীদের স্বার্থের পূর্ণাঙ্গ আশ্বাস হিসেবে দেখা যাচ্ছে।

বিশ্লেষণে দেখা গেছে, শিবিরের তিন প্রার্থী—সাদিক কায়েম, এস এম ফরহাদ এবং মহিউদ্দিন খান—অপ্রতিদ্বন্দ্বীভাবে জয়লাভ করেছেন। তারা প্রত্যেকেই নিজেদের মধ্যে পার্থক্যের কারণে আলাদা হলেও, তাদের বিজয় এক চিরন্তন বিশ্বাসের প্রতি ইঙ্গিত করছে— সততা, মেধা ও সৎ প্রচেষ্টা দিয়ে তিনি সফলতা অর্জন করতে পারেন। এই বিজয়ে বোঝা যায়, ছাত্রদের কি ধরনের নেতৃত্ব ও প্রতিষ্ঠানসচেতনতা প্রয়োজন, যা আমি ভবিষ্যতের জন্য একটি ইতিবাচক দৃষ্টান্ত হিসেবে মনে করি।

মহিউদ্দিন খান, যিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের ১৮-১৯ সেশনের একজন শিক্ষার্থী, তার জীবন সাধারণ ছাত্রের চেয়ে আলাদা। শক্ত মেধা, অধ্যবসায় ও স্বচ্ছ পরিচালনার মাধ্যমে তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তিনি প্রথম শ্রেণীতে প্রথম এবং মাস্টার্সেও সেরা স্থান অর্জন করেছেন। ছাত্র রাজনীতিতে তার দীর্ঘ সময়ের উপস্থিতি ও স্বচ্ছ কর্মচারিতার জন্য তিনি আবাদকর্মীদের মধ্যে জনপ্রিয়। অবশেষে, তিনি নির্বাচিত এজিএস হিসেবে এরূপ সাফল্য লাভ করেছেন।

এস এম ফরহাদ, একজন বিবেকবান বাকপ্রতিম, তার রাজনৈতিক জীবন ও দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে নিজের স্থান তৈরি করেছেন। ছোট শরীরেও তার মধ্যে আত্মবিশ্বাসের জোয়ার, যা তাকে ছাত্রদের মধ্যে জনপ্রিয় করে তোলে। তার রাজনৈতিক জীবন মূলত তার দায়িত্বশীল আচরণ ও ভাষার জেদি ব্যক্তিত্বের জন্য প্রশংসিত। বহু চর্চার মধ্যে তার সত্যতা ও নিরপেক্ষতা ফুটে উঠেছে।

অন্যদিকে, সাদিক কায়েম, যিনি শিবিরের অন্যতম শক্তিশালী মুখ, তার বিজয় এক অভাবনীয় ঘটনা। তিনি এই প্রথম শিবিরের হিসেবে ভিপি নির্বাচিত হন। তার প্রচারণা সরল ও সাধারণ হলেও, তার স্বার্থবাদী ও নেতৃত্বের গুণাবলী তাকে আলাদা করে তুলেছে। নির্বাচনের ফলাফল যা-ই হোক, সাদিকের মাধ্যমে বার্তা দিতে চান যে, শিক্ষার্থদের স্বার্থে সকলের জন্য কাজ করতেই হবে। তিনি বিশ্বাস করেন, আধুনিক সুবিধা, আবাসন, গবেষণা ও জীবনমান উন্নত করার লক্ষ্যেই তারা কাজ করবেন।

আমাদের মনে রাখতে হবে, সফলতার জন্য কেবল মেধা নয়, দরকার দৃঢ় সংকল্প ও সততা। এই নির্বাচন প্রমাণ করে যে, মেধা ও সততার সমন্বয় হলে যে কোন বাধা অতিক্রম করা সম্ভব। এই নতুন দৃষ্টান্ত আমাদের ছাত্র রাজনীতিকে কলঙ্কমুক্ত করে নতুন সূচনার পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে। এটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য প্রেরণাদায়ক এবং একটি নতুন দিনের সূচনা হিসেবে দেখা যাচ্ছে। এই বিজয় শুধু একটি পদ নয়, এটি লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থীর প্রত্যাশার এক বাস্তব রূপ।

সংক্ষিপ্ত জীবনী:
ডঃ তারনিমা ওয়ারদা আন্দালিব, বর্তমানে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী অধ্যাপক এবং গ্লোবাল কনসালট্যান্ট ডিরেক্টর হিসেবে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড ইমপ্যাক্ট গ্রুপে কর্মরত।
দাউদ ইব্রাহিম হাসান, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসার্চ এসিস্ট্যান্ট এবং ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে নিয়োজিত। তিনি আইডিএলসি ফাইনান্স পিএলসিত মার্কেটিং ডিপার্টমেন্টের একজন সদস্যও।