মহেশখালী-মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর মাছ রপ্তানি বাড়াবে

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ২:৩৬ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৫

নির্মাণাধীন মহেশখালী-মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরের উন্নত অবকাঠামো ও লজিস্টিক সুবিধা দেশের মাছ ও সামুদ্রিক খাদ্য রপ্তানি খাতে এক উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনার সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে। শিল্প সংশ্লিষ্টরা এ বিষয়ে জানিয়েছেন যে, এই উন্নত পরিকাঠামো দেশের মাছের বাজার সম্প্রসারণের পাশাপাশি দেশীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে।

মহেশখালী-মাতারবাড়ি ইনটিগ্রেটেড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট উদ্যোগের অংশ হিসেবে এটি নির্মাণে সহায়তা দিচ্ছে জাপান। এই সমুদ্রবন্দরটি চট্টগ্রাম বন্দরের জট হারাতে এবং বড় জাহাজ সরাসরি চালানের সুবিধা করে দেওয়ার মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এতে দেশের মাছের খাতে প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়বে, বিশেষ করে কোল্ড চেইন রক্ষা ও দ্রুত পরিবহনের ক্ষেত্রে।

মহেশখালীর মাছ ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম বলছেন, নতুন এই বন্দরটি হিমায়িত মাছ ও সামুদ্রিক খাদ্যের মতো দ্রুত পচনশীল পণ্যের পরিবহন সময় ব্যাপকভাবে কমিয়ে আনবে। এর ফলে সতেজতা বজায় রেখে পণ্য বিশ্বের বাজারে পাঠানো সহজ হবে এবং বাংলাদেশের মাছের মানের উপর কড়াকড়ি আরোপের ঝুঁকি কমবে।

অপর দিকে, মাতারবাড়ির জেলে মোহাম্মদ আলী বলেছেন, গভীর সমুদ্রবন্দর চালু হলে তারা ধরা মাছ দ্রুত রপ্তানি করতে পারবেন, যার ফলে তারা ন্যায্য মূল্য পাবে এবং তাদের জীবনমানের উন্নতি হবে।

বিশ্বের প্রায় ৭ শতাংশ মাছের সরবরাহ বঙ্গোপসাগর থেকে আসে। এর পাশাপাশি, এই সাগরের উপর নির্ভর করে প্রায় ৪৫ কোটি মানুষ, যা এক প্রকার অর্থনৈতিক এবং সামাজিক ‘ব্লু ইকোনমি’ গড়ে তুলেছে। বাংলাদেশ ‘ইন্ডিয়ান অশান টুনা কমিশন’ (আইওটিসি)-এর সদস্য, যার অর্থাৎ ভারত মহাসাগরে নির্দিষ্ট এলাকায় মাছ ধরা হয়। তবে, বাংলাদেশের নির্দিষ্ট টুনা মাছের কয়েকটি প্রজাতির জন্য কোটা দেওয়া হলেও অনেক ক্ষেত্রেই বছরান্তে এই কোটা অপূর্ণ থেকে যায়।

এজন্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ২৮টি গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার জাহাজ বা লংলাইনার তৈরির বা আমদানির অনুমতি দিয়েছে, যা মাছ ধরা ও রপ্তানি প্রক্রিয়াকে আরও সহজ করবে।

মাতারবাড়ি বন্দরের মাধ্যমে চাঁকড়িয়া চিংড়ি শিল্পের মতো existing ও নতুন উদ্যোক্তারা ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের মতো দেশে দ্রুত পণ্য পাঠাতে পারবেন। ফলে, ফিলেতে, সেমাই বা রেডি-টু-ইট সামুদ্রিক খাদ্যসহ অন্যান্য মানসম্পন্ন পণ্য রপ্তানি করতে পারবে বাংলাদেশ।

উদাহরণস্বরূপ, স্ক্যালপ (এক ধরনের শামুক) প্রক্রিয়াজাতকরণ ও রপ্তানি থেকে সম্ভাব্য আয় ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পর্যন্ত হতে পারে। পাশাপাশি, মিডার উন্নত লজিস্টিক সুবিধা দেশের মধ্যে নতুন বিনিয়োগের প্রবাহ বাড়াবে বলে আশা করছে সংশ্লিষ্ট মহল।