তীব্র গরমে বাংলাদেশের ক্ষতি ২১ হাজার কোটি টাকার বেশি Staff Staff Reporter প্রকাশিত: ২:৩১ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৫ বাংলাদেশে তীব্র গরমের কারণে প্রতি বছর ব্যাপক পরিমাণ কর্মঘণ্টা ক্ষতिग্রস্ত হচ্ছে যা দেশের অর্থনীতির জন্য গুরুতর ঝুঁকি সৃষ্টি করছে। বিশ্বব্যাংকের সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, মূলত তাপজনিত অসুস্থতার কারণে শুধুমাত্র ২০২৪ সালেই প্রায় ২৫ কোটি কর্মদিবস নষ্ট হয়েছে। এর ফলে অর্থনৈতিক ক্ষতি ছড়িয়ে গেছে ১.৩৩ থেকে ১.৭৮ বিলিয়ন ডলার, যা আগামী বছর অর্থাৎ জিডিপির প্রায় ০.৩ থেকে ০.৪ শতাংশের সমান। টাকা হিসেবে এর মূল্য অসম্ভব বড়, যা ২১ হাজার কোটি টাকারও বেশি। প্রতিবেদনটি সম্প্রতি মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে প্রকাশ করা হয়, যেখানে শীর্ষক ছিল ‘অ্যান আনসাসটেইনেবল লাইফ: দ্য ইমপ্যাক্ট অব হিট অন হেলথ অ্যান্ড দ্য ইকোনমি অব বাংলাদেশ’।この記事 অনুযায়ী, যখন তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রী সেলসিয়াসের ওপরে উঠে যায়, তখন কর্মীদের উৎপাদনশীলতা গুরুত্বপূর্ণভাবে কমে যায়, যা দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতিকে বিরূপ প্রভাবিত করছে। বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ১৯৭৬ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে তাপমাত্রার পরিবর্তন বিশ্লেষণে, দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার উর্ধ্বগতি ১.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, তবে অনভূত বা অতিরিক্ত তাপমাত্রার বৃদ্ধি ৪.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি। এর ফলে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা যেমন ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট, দীর্ঘস্থায়ী কাশি এবং অবসাদ আরো বেড়ে গেছে। মানসিক স্বাস্থ্যের উপরও এর প্রভাব স্পষ্ট, বিষন্নতা ও উদ্বেগের মতো সমস্যা বাড়ছে। ঢাকা শহর সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চল হিসেবে দেখা গেছে, যেখানে ১৯৮০ সালের পর থেকে আবহাওয়ার গড় তাপমাত্রা ১.১ ডিগ্রি বেড়েছে, আর এই সময়ে ঢাকায় তা বেড়েছে ১.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর মানে, ঢাকা গড়ে দেশের তুলনায় প্রায় ৬৫ শতাংশ বেশি তাপমাত্রা অনুভব করছে। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, কঠিন তাপদাহ জনিত স্বাস্থ্য, মানসিক স্বাস্থ্য ও উৎপাদনশীলতা সংক্রান্ত নানা চ্যালেঞ্জের সাক্ষ্য দেয়, যা উদ্বেগজনক একটি চিত্র। জরিপে অংশ নেওয়া মানুষের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি কাশির হার বেড়েছে গ্রীষ্মের মৌসুমে, যেখানে শীতে এই সমস্যা তুলনামুলকভাবে কম ছিল। বিশেষ করে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে তাপমাত্রায় দীর্ঘমেয়াদি কাশির হার ২২.৭ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। এছাড়া, ২.৬ শতাংশ মানুষ তাপজনিত ক্লান্তির শিকার হয়েছেন, যার মধ্যে ৩৬ থেকে ৬৫ বছর ও তার উর্দ্ধের প্রবীণের মধ্যে গ্রীষ্মে এই সমস্যা সবচেয়ে বেশি। তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি থেকে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে গেলে, তাপজনিত ক্লান্তির সম্ভাবনা ২৬.৫ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। ডায়রিয়া সমস্যা গ্রীষ্মকালে সবচেয়ে বেশি দেখা যায়, যেখানে আক্রান্তের হার শীতের তুলনায় দেড় গুণের বেশি। এই রোগের শিকার নারীর পাশাপাশি ৫ বছরের কম বয়সী শিশুরাও। তাপের উচ্চমাত্রায় এই ধরনের রোগের ঝুঁকি প্রায় অর্ধেক আলোচনা করে উঠে এসেছে। এছাড়াও, গরমের মৌসুমে মানসিক স্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। শীতে বিষন্নতার হার ১৬.২ শতাংশ থাকলেও গ্রীষ্মে তা বেড়ে ২০ শতাংশে দাঁড়ায়। উদ্বেগের ক্ষেত্রেও একইভাবে হার বৃদ্ধি পাচ্ছে, যেখানে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে তাপমাত্রায় এই মানসিক সমস্যা আরও বিস্তৃতি লাভ করছে। অনুষ্ঠানের মূল উপস্থাপনায় ছিলেন বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র অপারেশনস অফিসার ইফফাত মাহমুদ ও সিনিয়র হেলথ স্পেশালিস্ট ড. ওয়ামেক এ. রাজা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ও স্বাস্থ্যক্ষেত্রের বিশেষ সহকারী ডা. মো. সায়েদুর রহমান। উপস্থিত ছিলেন বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের ডিভিশনাল ডিরেক্টর জাঁ পেসমে, সাউথ এশিয়া হেলথ নিউট্রিশন অ্যান্ড পপুলেশন প্র্যাকটিসের ম্যানেজার ড. ফেং ঝাও। SHARES জাতীয় বিষয়: