ডাকসু নির্বাচন: ছাত্র রাজনীতির নতুন অধ্যায়ের সূচনা Staff Staff Reporter প্রকাশিত: ২:৩৩ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫ নির্বাচনী ফলাফল ও বিশ্লেষণে এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু। এই নির্বাচন শুধু কেবল এক সংখ্যাগরিষ্ঠতার চেয়ে অনেক বেশি কিছু—এ এটি ছাত্র রাজনীতির পরিবর্তনের এক নতুন বার্তা। যেখানে মেধা, সততা এবং দৃঢ় সংকল্পের মিলনে জয়লাভ সম্ভব, সেটার প্রমাণ এই নির্বাচনের ফলাফলে স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য এই বিজয় হয়ে উঠেছে এক অনুপ্রেরণার উৎস, যেখানে স্বপ্ন পূরণের পথে সাহস এবং নিষ্ঠাই মূল চালিকা শক্তি হিসেবে আবিস্কৃত হয়েছে। আজকের এই বিজয় কেবল এক প্রতিযোগিতার ফলাফল নয়, বরং এক নতুন ইতিহাসের সূচনা, যেখানে শিক্ষার্থীদের স্বার্থের জন্য এবং ভবিষ্যতের বাংলাদেশ গড়ার জন্য শিক্ষার্থীরা আবারও নিজেদের ক্ষমতার পরিচয় দিয়েছে। বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এই নির্বাচনে শিবিরের তিন প্রার্থীর জয়টি খুবই উল্লেখযোগ্য। ভিপি পদে সাদিক কায়েম ১৪ হাজার ৪২ ভোট পেয়ে প্রথম স্থান অর্জন করেছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের আবিদ পেয়েছেন ৫৬৫৮ ভোট, যা খুবই কম। জিএস পদে এস এম ফরহাদ ১০,৭৯৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন, যেখানে ছাত্রদলের হামিমের ভোট ছিল ৫২৮৩। এই ব্যবধান দ্বিগুণের বেশি, যা তাদের শক্ত অবস্থানের প্রমাণ। একইভাবে, এজিএস পদে মহিউদ্দিন খান ৯৫০১ ভোট পেয়ে এগিয়ে রয়েছেন, তার প্রতিদ্বন্দ্বী মায়েদের পার পাচ্ছেন ৪২৫৪ ভোট। চলুন জেনে নিই এই নির্বাচনের বিজয়ীদের কিছু তারকার জীবনগুলো, যারা তাদের কারিশমা দিয়ে এই ফলাফলের জন্য মূল ভূমিকা রেখেছেন। প্রথমে আলোচনা করা যাক মহিউদ্দিন খান মহিকে। তিনি একজন শিক্ষানুরাগী ও মেধাবী ছাত্র, যার চোখে চশমা এবং পাঞ্জাবি পরা demeanor দেখে অনেকেই সহজেই তার ভদ্রতা ও আদর্শিতা মনে করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের এই শিক্ষার্থী শতভাগ মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করেছেন। তিনি অনার্সে ৩.৯৩ সিজিপিএ ও মাস্টার্সে ৪.০০ সিজিপিএ পেয়ে প্রথম স্থান অধিকার করেন। তার এই স্বভাব তিনি ছাত্র রাজনীতিতেও পরিষ্কারভাবে দেখিয়েছেন। তিনি বিজয় ‘৭১ হলে থাকতেন এবং পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজের ক্যারিয়ার গড়েছেন। আরেকটি বড় নাম হলো এস এম ফরহাদ। তিনি একজন ডিবেটার এবং ছাত্র সমাজের একটি বিশিষ্ট চরিত্র। তার দায়িত্বশীল আচরণ ও স্পষ্ট মতামত তার পরিচিতি উন্নত করেছেন। রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে তার পরিচয় অনেকের কাছে রহস্য ছিল, কিন্তু ২০০৪ সালে তার আসল পরিচয় প্রকাশের পর সবাই অবাক হয়ে গিয়েছিল। তিনি সমাজকল্যাণ ইনস্টিটিউটের এবং জসীমউদ্দীন হলে থাকতেন, যেখানে তার পাঠ্যকালীন সময়ে তিনি নিজের প্রতিভা ও নেতৃত্বের ক্ষমতা দেখিয়েছেন। অবশেষে, বিশেষ করে শিবিরের একজন প্রবক্তা হিসেবে পরিচিত সাদিক কায়েমের কথায় আসি। তিনি বর্তমান ডাকসুর প্রথম শিবিরপন্থী ভাইস প্রেসিডেন্ট, যিনি সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বার্থের জন্য লড়াই করছেন। ভোটের আগেও তিনি খুব সাধারণভাবে প্রচার করেননি, কিন্তু আল্লাহর বরকত ও ছাত্রদের সমর্থনে তিনি এই ফলাফল অর্জন করেছেন। তিনি শিক্ষার্থীদের জন্য আধুনিক লাইব্রেরি, আবাসন, স্বাস্থ্যসেবা এবং রেজিস্টার ভবনের সমস্যা সমাধানে কাজ করতে চান। তার জীবনযাত্রা ও নেতৃত্ব গুণাবলি প্রমাণ করে যে, দৃঢ় সংকল্প ও সততার মিশ্রণে যে কোন বাধা অতিক্রম করা সম্ভব। এই নির্বাচন প্রমাণ করেছে, যখন মেধা, সততা এবং দৃঢ় সংকল্পের সমন্বয় হয়, তখন অর্ধেক বাধা ইতিমধ্যে অতিক্রম হয়। এই বিজয় শিক্ষার্থীদের জন্য শুধু একটি পদের প্রতিষ্ঠা নয়, বরং এটি ভবিষ্যতের জন্য এক অনুপ্রেরণা। ছাত্র রাজনীতির দিগন্তে নতুন এক দিকন্ত উন্মোচন হয়ে, এটি একটি কলঙ্কমুক্ত ও উন্নত প্রজন্মের পথের সূচনা। এই নতুন অধ্যায়ের সূচনা যেন এক সুন্দর বাংলার স্বপ্ন বাস্তব রূপ পায়। SHARES রাজনীতি বিষয়: