ডাকসু নির্বাচন: ছাত্র রাজনীতির নতুন দৃষ্টান্ত

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ২:৩৩ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৫

ডাকসু নির্বাচনের এই ফলাফল মানে শুধু একটি বিজয় নয়, বরং এটি ছাত্র রাজনীতিতে নতুন এক দৃষ্টিভঙ্গি ও অনুপ্রেরণার সূচনা। এই নির্বাচনে যা দেখা গেছে, তা স্পষ্ট যে স্বপ্ন পূরণের পথে সাহস, নিষ্ঠা এবং ইমানদারিতা অপরিহার্য। কেবলমাত্র বিজয়ের জন্য নয়, একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ নির্মাণের জন্য ছাত্রদের লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। মেধা এবং কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে নতুন ইতিহাস রচনার পথে এই নির্বাচনে শিবিরের তিন জন প্রার্থী Clare করে দেখিয়েছেন, তারা কি করে নিজেদের যোগ্যতা এবং সততার প্রমাণ দিতে পারেন।

প্রথমে আসি মহিউদ্দিন খান মহির দিকে। চোখে সরু চশমা, পরনে ঐতিহ্যবাহী পাঞ্জাবি এবং ভদ্রতার ছাপ দিয়ে তিনি সবাইকে সহজে আকর্ষণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের এই শিক্ষার্থী এখনো ছাত্র জীবনেও তার সাফল্য ধরে রেখেছেন। স্নাতকে ৩.৯৩ সিজিপিএ এবং মাস্টারে ৪.০০ সিজিপিএ পাওয়া এই ছাত্রের নেতৃত্বের ভাবনাটা সাধারণের চেয়ে আলাদা, যার নাটের দিকনির্দেশনাও স্পষ্ট। তিনি বিজয় ‘৭১ হলের সাবেক ছাত্র, এবং ছাত্র রাজনীতিতে দাপটের সাথে অংশগ্রহণ করে চলেছেন। তিন দিন অন্তর কিছু করতে হয়নি, এরই মধ্যে হলে থাকার রেওয়াজ এবং ছাত্ররাজনীতির এক অনন্য নজির স্থাপন করেছেন। তাই এবারের ডাকসু নির্বাচনে তার ভোটের সংগ্রহ স্বাভাবিক বলে মনে হয়।

অন্যদিকে, এস এম ফরহাদের কথা আসছে। ছোটখাটো বা দেখতে সাধারণ হলেও, তার দায়িত্ব অনেক বেশি। তিনি একজন দক্ষ বিতার্কিকে, সমাজের নানা সমালোচনা দক্ষতার সাথে মোকাবেলা করেন। ছাত্রলীগের সঙ্গে তার অতীত সম্পর্ক থাকলেও, নিজের পরিচয় গোপন রেখে তিনি অনেকটাই শঠতার সঙ্গে কাজ করে গেছেন বলে গুঞ্জন। ২০০৪ সালে তার পরিচয় প্রকাশ হলে সবাই অবাক হয়েছিল, কিন্তু তার ক্ষমতা, দায়িত্ববোধ এবং নেতৃত্বদক্ষতা তাকে এই ফলাফল এনে দিয়েছে। ফাঁকে ফাঁকে তিনি ছাত্রদের মধ্যে সমলোচনার মুখেও বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন।

শেষে সাদিক কায়েমের কথা। এই নামটি পুরো ছাত্রপ্রজন্মের মনে আলাদা স্থান করে নিয়েছে। তিনি শিবিরের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু, জনসম্পৃক্তি ও উদ্যোগে আগের তুলনায় বেশ এগিয়ে। তিনি বর্তমান ডাকা শিবিরের প্রথম এবং একমাত্র ভিপি, যার প্রতিপক্ষের মাথা খারাপের চেয়ে অনেক বেশি। বিজয়ের দিন, রাতের অন্ধকারে নামাজরত অবস্থায় তার ছবি ধরা পড়ে, যেখানে তিনি আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তার প্রচার সাধারণ ছিল, কিন্তু তার কার্যক্রম অত্যন্ত প্রশংসিত। শিক্ষার্থীদের জন্য আবাসন, খাবার, চিকিৎসা সামগ্রী, লাইব্রেরি সমৃদ্ধি, হাসপাতাল ও মসজিদের আধুনিকতা – এইসব বিষয় তাঁর মূল লক্ষ্য। তিনি নিজেকে সেই এলাকার একজন প্রতিনিধিদ হিসেবে উপস্থাপন করেছেন যেখানে তার বিরল উপস্থিতি হচ্ছে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য উচ্চ ফলাফল করেছেন এবং নেতৃত্বের গুণাবলীও রেখেছেন। এখন দেখার বিষয় তিনি কীভাবে সফলতা হাসিল করবেন।

এই নির্বাচনে প্রমাণ হলো যে, শুধু মেধা নয়, সংকল্প, সততা ও সাহসিত্বের সমন্বয়ে সমাজের অনেক বাধা অতিক্রম করা যায়। ছাত্র রাজনীতি দাগমুক্ত করার এই নতুন প্রেরণাও আমাদেরকে শিখিয়েছে যে, পর্যাপ্ত সাহস ও যোগ্যতার সাথে কেউ চাইলে অনেক কিছু অর্জন করতে পারে। এই বিজয়ের অর্থ শুধু একটি পদে বিজয় নয়, এটি লক্ষ লক্ষ ছাত্রদের স্বপ্ন, প্রত্যাশা এবং ভবিষ্যৎ নির্মাণের সুচনা। এই পথচলা আগামী দিনের নতুন সূচনা, যা আরও ইতিবাচক পরিবর্তন আনার প্রতিশ্রুতি দেয়।