আজ সুর সম্রাট আলাউদ্দিন খাঁর ৫৩তম মৃত্যুবার্ষিকী Staff Staff Reporter প্রকাশিত: ২:৩৭ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৬, ২০২৫ আজ ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, উপমহাদেশের কিংবদন্তি সংগীতজ্ঞ, শ্রদ্ধেয় সুর সম্রাট উস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর ৫৩তম মৃত্যুবার্ষিকী। তিনি ১৯৭২ সালের আজকের এই দিনে ভারতের মাইহারে পরলোকগমন করেন। উস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ ১৮৬২ সালের ৮ অক্টোবর তৎকালীন ত্রিপুরা জেলার (বর্তমান ব্রাহ্মণবাড়িয়া) নবীনগর উপজেলার শিবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তবে তার পিতার নাম সাবদর হোসেন খাঁ, ওরফে সদু খাঁ, এবং মায়ের নাম সুন্দরী বেগম। তিনি পরিবারের পাঁচ ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তৃতীয় ছিলেন। তার স্ত্রীর নাম মদনী বিবি। তাদের একটি পুত্র (বিশ্বখ্যাত সরোদবাদক আলী আকবর খাঁ) এবং দুটি কন্যা (সরিজা ও রৌশন আরা, যা অন্নপূর্ণা নামে বেশ পরিচিত) ছিলেন। ছোটবেলা থেকেই সংগীতের প্রতি গভীর আগ্রহ ছিল তার। মাত্র আট বছর বয়সে, মায়ের অসুস্থতার কারণে তিনি ১২ টাকা নিয়ে গভীর রাতে বাড়ি থেকে বেড়ে কলকাতার দিকে রওনা দেন। সেখানে তিনি ‘মনমোহন দেব’ নামে পরিচিত হয়ে ওস্তাদ নুলো বাবুর কাছ থেকে সংগীতের প্রশিক্ষণ গ্রহণ শুরু করেন। সংগীতের প্রতি তার একাগ্রতা এতটাই প্রবল ছিল যে, বিবাহের রাতেও তিনি স্ত্রীর হাত ছেড়ে দ্বিতীয়বারের মতো কলকাতায় পালিয়ে যান। উস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ কলকাতা, লাহোর, মাইহারসহ বিভিন্ন স্থান থেকে সংগীতের দীর্ঘ বিশেষ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। তিনি ওস্তাদ ওয়াজির খাঁর কাছ থেকে বীণা শেখার মাধ্যমে প্রায় ৩৩ বছরের সংগীত শিক্ষার দীর্ঘ পথে হাঁটেন। সংগীতের বিভিন্ন পর্যায়ে তিনি দেশের বিভিন্ন শহরসহ আন্তর্জাতিক পর্যায়েও তার শিল্পকর্ম ও শিক্ষাদানে অবদান রাখেন। ১৯৫৪ সালে তিনি শিবপুরে ফিরে আসেন এবং মায়ের ইচ্ছায় একটি পুকুর খনন ও একটি পাকা মসজিদ নির্মাণ করেন। উস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ ছিলেন উপমহাদেশের দ্রৌপদী ঘরানার প্রতিষ্ঠাতা। তিনি সংগীতের মাধ্যম দিয়ে রাজ দরবার থেকে সাধারণ মানুষের মধ্যে পৌঁছানোর জন্য কাজ করেন, যা গণমুখী সংগীতের ধারাকে আরও শক্তিশালী করে তোলে। তার প্রথম প্রতিযোগিতায় কলকাতার সর্বভারতীয় সংগীতানুষ্ঠানে স্বর্ণপদক লাভ করেন। ১৯৩৬ সালে এক বিশ্বভ্রমণে লন্ডনে তার পারফরম্যান্সে মুগ্ধ হয়ে ব্রিটেনের রানি তাকে “সুর সম্রাট” উপাধিতে ভূষিত করেন। তার রচিত মূল রাগসমূহের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: মদিনা মঞ্জুরী, শোভাবতী, ধবলশ্রী, ভুবনেশ্বর, দুর্গেশ্বরী, হেমন্ত, উমাবতী, প্রভাতী, হেম বেহাগ ও নাগার্জুন। বিশ্বব্যাপী তার অসামান্য অবদানের জন্য তিনি বিভিন্ন পুরস্কার ও সম্মানে ভূষিত হন, যার মধ্যে পদ্মভূষণ, পদ্মবিভূষণ, দেশিকোত্তম, ডক্টরেট ডিগ্রি এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেলোশিপ অন্যতম। এছাড়াও ভারত সরকারের কেন্দ্রীয় শিক্ষা কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেন। SHARES সারাদেশ বিষয়: