রাশিয়ার পারমাণবিক কেন্দ্রের ওপর ইউক্রেনের হানাদারি Staff Staff Reporter প্রকাশিত: ২:৪২ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৬, ২০২৫ ইউক্রেনের ব্যাপক ড্রোন হামলার ফলে রাশিয়ার কুরস্কে অবস্থিত পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কার্যক্ষমতা হঠাৎ করে কমে গেছে এবং লেনিনগ্রাদ অঞ্চলের উস্ত-লুগা জ্বালানি টার্মিনালে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। রুশ কর্তৃপক্ষ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এই হামলাগুলোর বিষয়ে নিশ্চিত করেছে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত রোববার তারা অন্তত ৯৫টি ইউক্রেনীয় ড্রোন বিভিন্ন অঞ্চলে ভূপাতিত করে। ইউক্রেন এই দিনটিকে স্বাধীনতা দিবস হিসেবে উদযাপন করে, যা ১৯৯১ সালের এ দিনে সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে আলাদা হয়ে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। বিশেষ করে, এই হামলার আলোচনায় সবচেয়ে বেশি গুঞ্জন সৃষ্টি হয়েছে রাশিয়ার কুরস্ক পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে। এই কেন্দ্রটি ইউক্রেনের সীমান্ত থেকে মাত্র ৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত, যেখানে গত ড্রোন আক্রমণে চতুর্থ রিঅ্যাক্টরের একটি সহায়ক ট্রান্সফরমার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর ফলে রিঅ্যাক্টরের কার্যক্ষমতা অর্ধেকে নেমে এসেছে। কেন্দ্রের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিকিরণের মাত্রা এখনও স্বাভাবিক পর্যায়ে রয়েছে এবং কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। পাশাপাশি, অন্য দুটি রিঅ্যাক্টর বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ রেখেছে এবং একটি রিঅ্যাক্টর মেরামতের জন্য বন্ধ রয়েছে। এ ব্যাপারে জাতিসংঘের পারমাণবিক তদারকি সংস্থা (আইএইএ) গভীর নজরদারি চালাচ্ছে। সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সামরিক কর্মকাণ্ডের কারণে কুরস্ক পারমাণবিক কেন্দ্রে ট্রান্সফরমারে আগুন লাগার খবর তারা পেয়েছে, এবং সব ধরনের পারমাণবিক স্থাপনাকে নিরাপদে রাখতে তারা দৃঢ়ভাবে আহ্বান জানিয়েছে। অন্যদিকে, উত্তরে ফিনল্যান্ড উপসাগরের তীরে উস্ত-লুগা বন্দরের কাছে ড্রোন হামলার পরে একটি বিশাল জ্বালানি রপ্তানি টার্মিনালে আগুন ধরে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। লেনিনগ্রাদের গভর্নর আলেকজান্ডার দ্রজদেনকো জানিয়েছেন, কমপক্ষে ১০টি ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত হলেও ধ্বংসাবশেষ থেকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে কালো ধোঁয়া আকাশে ছড়িয়ে পড়ে। দমকল বাহিনী আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে বলে তিনি উল্লেখ করেন, তবে এতে কোনো হতাহত ঘটেনি। রুশ সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রচারিত বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা গেছে, একটি ড্রোন সরাসরি টার্মিনালে আঘাত হানে এবং সঙ্গে সঙ্গে বিশাল আগুন ও ধোঁয়ার কুণ্ডলী আকাশে উঠছে। নোভাটেক জানিয়েছে, ২০১৩ সালে চালু এই টার্মিনালে গ্যাস কনডেনসেট প্রক্রিয়াজাত করে ন্যাপথা, জেট ফুয়েল, ফুয়েল অয়েল ও গ্যাস অয়েল উৎপাদন হয়। পরে এগুলো প্রধানত এশিয়া ও তুরস্কে রপ্তানি করা হয়। হামলার কারণে কয়েক ঘণ্টার জন্য রাশিয়ার বেশ কয়েকটি বিমানবন্দরে ফ্লাইট বন্ধ রাখা হয়। এর মধ্যে লেনিনগ্রাদ অঞ্চলের পুলকোভো বিমানবন্দরও ছিল। এছাড়া, দক্ষিণ রাশিয়ার সামারা অঞ্চলের একটি শিল্প কারখানায় ইউক্রেনের ড্রোন হামলায় একজন শিশুর আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে, যা স্থানীয় গভর্নর নিশ্চিত করেছেন। ইতোমধ্যে, ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে শান্তি আলোচনার আলোচনা চললেও বাস্তবে যুদ্ধের পরিস্থিতি দিন দিন আরও ভয়াবহ হয়ে উঠছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপে এই সংঘাত সবচেয়ে প্রাণঘাতী রূপ নিয়েছে, যেখানে ইউক্রেন-রুশ সীমান্তের দীর্ঘ দুই হাজার কিলোমিটার জুড়ে তীব্র লড়াই অব্যাহত রয়েছে। SHARES আন্তর্জাতিক বিষয়: