কুষ্টিয়ার লালন শাহের মাজারে ফাটল, সংস্কার নয়, স্থায়ী পুনর্নির্মাণের দাবি

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ২:৩৭ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৫, ২০২৫

কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়া লালন শাহের মাজার ভবনে দীর্ঘদিন ধরে ফাটল দেখা দেওয়ায় উদ্বিগ্ন লালনভক্ত ও বার্ষিক ভক্তরা। মূল গেট, মাজারের পূর্ব, পশ্চিম ও উত্তর পাশে ফাটল সৃষ্টি হয়েছে। গম্বুজেও ফাটল ধরে পলেস্তার খসে পড়ছে এবং বৃষ্টি হলে মাজারের উপর পানি পড়ছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়েও খাদেমরা তাঁদের খেদমত চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে বারবার সংস্কার করলেও সমস্যা মেটেনি। তাই এখন লালনভক্তরা বেশি গুরুত্বরোচিত সমস্যার সমাধান হিসেবে দাবি করছেন যে, সংস্কার নয়, বরং পুরো মাজারের স্থায়ী পুনর্নির্মাণ প্রয়োজন।

এই মাজার ১৯৬২ সালে নির্মিত হয়, যেখানে মূল ফটক ও মূল মাজার রয়েছে। এর মধ্যে কেটে গেছে প্রায় ৬৩ বছর। ১৯৯৬ সালে ভেতরের অডিটোরিয়াম ও মিউজিয়াম তৈরি করা হয়। তবে প্রতিবার উৎসবের সময় মূল গেট ও মাজারের সার্বিক স্থাপনা কালো বা সাদা রঙে আচ্ছাদিত হয়ে যায়। সময়ের সাথে সাথে মাজারের ইটের ভবন ও মূল গেটের স্থায়িত্ব কমে গেছে, এতে এখন ফাটল দেখা দিয়েছে। এই অবস্থায়, বাংলাদেশের পাশাপাশি বিশ্বের কোটি কোটি লালন ভক্তের স্বপ্ন, তাদের প্রিয় সাধকের জন্মস্থানটির স্থায়ী সংস্কার এবং মূল ডিজাইনের অবকাঠামো বজায় রাখা।

আখড়ায় ঘুরতে আসা দর্শনার্থী এস এম রুশদী জানান, ফকির লালন সাইজীর আখড়ার ভবন এখন খুবই জরাজীর্ণ। উপর থেকে চুনসড়কি খুলে পড়ছে, অনেক জায়গায় ফেটে গেছে। সাইজীর মাথার গম্বুজ ফেটে পানি পড়ছে। চারপাশের অবস্থা একেবারেই বেহাল।

শিল্পী আনু ফকির বলেন, এই মাজার পাকিস্তান আমলে তৈরি হওয়ার কারণে এর বয়স এখন প্রায় ৬০ বছর। আগে একবার সংস্কার করা হলেও তা টেকেনি। তিনি আরও বলেন যে, পুরোপুরি পুনর্নির্মাণ না করলে এই মাজারের স্থায়িত্ব বেশ কঠিন। গম্বুজের ফাটল, পলেস্তার খসে পড়া এবং পানি পড়ার বিষয়গুলো খুবই উদ্বেগের। দর্শনার্থীরা এই অস্থির অবস্থায় আসেন এবং খাদেমরা দ্বিগুণ ঝুঁকির মধ্যে থাকেন। জেলা প্রশাসন ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের দ্রুত কার্যক্রমের জন্য প্রয়োজনীয় দাবি জানাচ্ছেন তারা।

মাজারের ভারপ্রাপ্ত খাদেম মাসুদ শাহ বলেন, বিশ্বে এই মাজারের একটি আন্তর্জাতিক মান রয়েছে। তবে সংস্কার করলেও কিছুদিনের মধ্যেই আবার অবস্থা অবনতির দিকে যায়। পাকিস্তান আমলে নির্মিত এই মাজারটির এখন চারপাশে ফাটল, গম্বুজের ক্ষতির মাধ্যমে পানি পড়া, ছাদের রডের বেরিয়ে যাওয়া—সবই ভয়ঙ্কর অবস্থা। তিনি অনুরোধ করেন, শুধু সংস্কার নয়, এই মাজারটিকে নতুন করে পুনর্নির্মাণ করা উচিত।

কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক মো: তৌফিকুর রহমান বলেন, এটি অত্যন্ত সংবেদনশীল বিষয়। মাজারটি ভেঙে আবার তৈরির জন্য ভক্ত এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে আলোচনা করে ব্যবস্থা নিতে হবে। ইতিমধ্যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এবং গৃহীত হচ্ছে। তবে দুর্ঘটনার আশঙ্কা না থাকলেও, কিছু ছোট সমস্যা দ্রুত মেরামত করা প্রয়োজন। আশাকরা হচ্ছে, সময়মতো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে বড় ধরনের দুর্ঘটনার ঝুঁকি এড়ানো যাবে।