মালালা ইউসুফজাই পাকিস্তানের বন্যা দুর্গতদের জন্য গভীর শোক প্রকাশ

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ২:৩৮ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৮, ২০২৫

পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলে বিভিন্ন প্রদেশে প্রবল বর্ষণ এবং আকস্মিক বন্যায় ব্যাপক প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি ঘটে যেতে থাকায় তিনি গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন নোবেল বিজয়ী মালালা ইউসুফজাই। রোববার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে (টুইটার) এক ব্যক্তিগত বার্তায় তিনি নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং দুর্গত ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর প্রতি সমবেদনা জানান।

মালালা লিখেছেন, ‘পাকিস্তানের গিলগিত-বালতিস্তান থেকে আজাদ জম্মু ও কাশ্মির—বিশেষ করে খাইবার পাখতুনখোয়ার বুনের, সোয়াত, বাজাউর ও শাংলার মতো বিভিন্ন অঞ্চল যেখানে ভয়াবহ এই বন্যা আঘাত হেনেছে, সেখানে ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি পরিবারের জন্য আমার হৃদয় খুব ভেঙে যাচ্ছে।’

মালালার জন্মভূমি হলো মনোরম শাংলা জেলাই, যা নিঃসন্দেহে তার হৃদয়ের খুব কাছে। খাইবার পাখতুনখোয়া প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের (পিডিএমএ) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুধুমাত্র শাংলায়ই এখন পর্যন্ত ৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও, মানসেহরারাতে ২৩, সোয়াতে ২২, বাজাউরে ২১, বাত্তাগ্রামে ১৫, লোয়ার দিরে ৫ এবং আবোটাবাদে ১ জনের প্রাণহানি হয়েছে।

প্রতিবেদনে জানা গেছে, এই বন্যায় কমপক্ষে ১১টি ঘরবাড়ি সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে এবং আরও ৬৩টি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত। সোয়াতে দুটি স্কুল ও শাংলার একটি স্কুলও ক্ষতির শিকার হয়েছে।

মালালা আরও লিখেছেন, ‘যারা প্রিয়জন, ঘরবাড়ি এবং জীবিকা হারিয়েছেন, তাদের প্রতি আমি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।’

পাকিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (এনডিএমএ) জানিয়েছে, শেষ ৪৮ ঘণ্টায় উত্তরাঞ্চলে ব্যাপক বর্ষণ এবং আকস্মিক বন্যায় কমপক্ষে ৩৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৩২৪ জনই খাইবার পাখতুনখোয়ায় মারা গেছেন। অধিকাংশ জনের মৃত্যু হয়েছে আকস্মিক বন্যা ও ঘরবাড়ি ধসের কারণে। আহত হয়েছেন অন্তত ১৩৭ জন।

প্রাদেশিক উদ্ধার সংস্থাগুলি জানিয়েছে, নয়টি জেলায় প্রায় দুই হাজার উদ্ধারকর্মী লাশ উদ্ধারের পাশাপাশি ত্রাণ কার্যক্রম চালাচ্ছেন। তবে অব্যাহত বর্ষণ এই কার্যক্রমে বিঘ্ন সৃষ্টি করছে।

উল্লেখ্য, শিক্ষা অধিকারের জন্য সোচ্চার মালালা চলতি বছরের মার্চে নিজের গ্রাম শাংলার বারকানায় ফিরেছেন। এটি তার জন্য বছরের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা, কারণ ২০১২ সালে সোয়াত উপত্যকায় তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান তাদের স্কুল বাসে হামলা চালিয়ে তাকে গুলিবিদ্ধ করে। পরে তাকে যুক্তরাজ্যে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়। এরপর থেকে তিনি বিশ্বজুড়ে নারী শিক্ষার পক্ষে সোচ্চার হয়ে দাড়িয়েছেন। মাত্র ১৭ বছর বয়সে তিনি সর্বকনিষ্ঠ নোবেল শান্তি পুরস্কার পেতেও স্বীকৃতি লাভ করেন।