বাংলাদেশি পর্যটকের অভাবে মানবেতর পরিস্থিতিতে কলকাতার রিকশাচালকরা

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ১২:১২ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৬, ২০২৪

বাংলাদেশ-ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের টানাপোড়েন আর ভারতের ভিসা সীমিত করার প্রভাব সরাসরি পড়েছে রিকশাচালকদের ওপর। প্রতিবেশী দুই দেশের উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্ক পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতার ‘মিনি বাংলাদেশ’ খ্যাত মার্কুইস স্ট্রিটের ৮০ জন রিকশাচালকের জীবন-জীবিকার ওপর ভয়াবহ সংকট ডেকে এনেছে।

ভারতের ইংরেজি দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে কলকাতার মিনি বাংলাদেশের হাতে টানা রিকশাচালকদের কষ্টের সেই গল্প তুলে ধরা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই রিকশাচালকরা বাংলাদেশি পর্যটকদের পরিবহন করে থাকেন। বাংলাদেশি পর্যটকদের সংখ্যা কমে যাওয়ায় গত তিন মাসে ওই রিকশাচালকদের উপার্জন প্রায় ৭০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন এই পেশা ছেড়ে দিয়ে নতুন কাজ শুরু করেছেন।

সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশি পর্যটকদের ভিসা সীমিত করেছে ভারত। যে কারণে বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে কিছু সংখ্যক মানুষ কেবল চিকিৎসার জন্য কলকাতায় যাচ্ছেন।

অথচ কয়েক মাস আগেও কলকাতার ‘মিনি বাংলাদেশ’ মারকুইস স্ট্রিট, মির্জা গালিব স্ট্রিট, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট এবং সদর স্ট্রিটে বাংলাদেশি পর্যটকদের বড় বড় শপিং ব্যাগ নিয়ে রিকশায় করে যাতায়াতের দৃশ্য একেবারে সাধারণ ছিল।

কলকাতার সোদিপুরের বাসিন্দা প্রসেনজিৎ সাহা প্রায় এক দশক ধরে মার্কুইস স্ট্রিটে রিকশা চালান। তিনি বলেন, ‘আমরা সারা বছরই বাংলাদেশি পর্যটকদের ফেরি করি। ঈদ, দুর্গাপূজা এবং বিয়ের মৌসুমের আগে এই সংখ্যা উল্লেখযোগ্য বেড়ে যায়। কিন্তু গত তিন-চার মাসে বাংলাদেশি পর্যটকদের সংখ্যা কমে গেছে।’

কলকাতার এই হাতেটানা রিকশাচালক মো. রফিক বলেন, ‘এমনকি চার মাস আগেও আমি প্রত্যেক দিন ৭০০ থেকে ৮০০ রুপি উপার্জন করতাম। এখন তা নেমে দিনে ২০০ রুপিতে এসেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশিদের সংখ্যা এতই কম যে, প্রত্যেকদিন ২০০ থেকে ২৫০ রুপি উপার্জন করাও কঠিন হয়ে পড়েছে। চিকিৎসার জন্য যারা আসেন, তারা সাধারণত কেনাকাটা করেন না কিংবা মজা করার জন্যও রিকশায় উঠেন না।’

রিকশাচালক মো. সাজ্জাকের মতো অনেকেই এখন এই পেশা ছেড়ে অন্য কাজ করছেন অথবা বিকল্প খুঁজছেন। সাজ্জাক ছয় বছর ধরে রিকশাচালক হিসেবে কাজ করলেও এখন খাদ্যদ্রব্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানে কাজ শুরু করেছেন।

কলকাতার পার্ক সার্কাসের বাসিন্দা রিকশাচালক মো. আদিল বলেন, তিনি অবসর সময়ে রিকশা নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। তিনি বলেন, আমার নিজের রিকশা নেই। আমাদের উপার্জন হোক বা না হোক মালিককে প্রত্যেকদিন ৭০ রুপি জমা দিতে হবে।’