বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া মোটরসাইকেল বিক্রি নয়!

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ৪:৩৬ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৩, ২০১৯

ডেস্ক নিউজ: বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া কোনো ব্যক্তির কাছে মোটর সাইকেল বিক্রয় না করার বিষয়ে নির্দেশনা জারির সুপারিশ করেছে সড়ক পরিবহন সেক্টরে শৃঙ্খলা জোরদারকরণ এবং দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে গঠিত কমিটি।

এছাড়া মোটরসাইকেল চালক ও আরোহীদের নিরাপত্তায় করণীয় বিষয়ে সুপারিশ করা হয়েছে। মোটর সাইকেলের জন্য আলাদা লেন, মানসম্মত হেলমেট ব্যবহারসহ কয়েক দফা সুপারিশ করেছে কমিটি।

সড়কে শৃঙ্খলা জোরদারের সুপারিশের মধ্যে মোটরসাইকেলের বিষয়ে বলা হয়েছে, মোটরসাইকেল ক্রেতাকে অবশ্যই বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্সধারী হওয়ার বাধ্যবাধকতা আরোপ করা। বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া কোনো ব্যক্তির কাছে মোটরসাইকেল বিক্রয় না করার বিষয়ে নির্দেশনা জারি করা। মোটর সাইকেল রেজিস্ট্রেশন করার সময় অন্যান্য কাগজপত্রের সাথে ক্রেতার ড্রাইভিং লাইসেন্সের কপি জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করা।
ট্রাফিক পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশের সহায়তায় এই সুপারিশ বাস্তবায়ন করবে বিআরটিএ। আশু করণীয় হিসেবে এই সুপারিশ বাস্তবায়নের ফলে কিশোর বা অপ্রাপ্তবয়স্কদের মোটরসাইকেল ক্রয়ের প্রবণতা কমানো সম্ভব। এছাড়া সড়ক দুর্ঘটনা বহুলাংশে হ্রাস পাবে বলে মনে করে কমিটি।
সুপারিশে মোটরসাইকেলগুলোর চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।
‘সারাদেশে রেজিস্ট্রেশনকৃত মোটরসাইকেলের সংখ্যা প্রায় ২৫ লাখ। এর বিপরীতে ড্রাইভিং লাইসেন্সধারী মোটরসাইকেলের সংখ্যা প্রায় নয় লাখ।মোটরসাইকেল ও লাইসেন্স ধারী মোটরসাইকেল চালকের সংখ্যা ব্যাপক পার্থক্য দূর করার জন্য একটি ক্রাশ প্রোগ্রামের আওতায় পরীক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে লাইসেন্স প্রদানের ব্যবস্থা করা। এক্ষেত্রে ড্রাইভিং কম্পিটেন্সি টেস্ট বোর্ডের মাধ্যমে পরীক্ষা গ্রহণ সময় সাপেক্ষ বিধায় বিআরটিএ এবং পুলিশের সমন্বয়ে গঠিত কমিটি পরীক্ষা গ্রহণ করতে পারে।’
পুলিশের সহায়তায় স্বল্পমেয়াদী এই সুপারিশ বাস্তবায়ন করবে বিআরটিএ। সুপারিশ বাস্তবায়িত হলে সড়ক-মহাসড়কে লাইসেন্সবিহীন চালকের সংখ্যা কমবে এবং সড়ক পরিবহন সেক্টরে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে বলে মনে করে কমিটি।
প্রয়োজনীয় সমীক্ষার মাধ্যমে যেসব সড়কে সাইকেল বা মোটরসাইকেলের ব্যবহার বেশি সেখানে সাইকেল বা মোটরসাইকেল লেন প্রদান করার বিষয়ে সম্ভাব্যতা যাচাই করার সুপারিশ করা হয়েছে।
‘সাইকেলের ব্যবহার রাজধানীতে ক্রমাগত বাড়ছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সাইকেলের জন্য আলাদা লেন করা হয় সাইকেল আরোহীদের নিরাপত্তার জন্য।ঢাকার রাস্তায় এ ধরনের ব্যবস্থা প্রদান করা সম্ভব কিনা এবং কোন কোন রাস্তায় করা যাবে এবং কিভাবে করা যাবে সে বিষয়ে একটি গবেষণা পরিচালনা করে সাইকেল রুটের পরিকল্পনা করতে হবে।’
আশু করণীয় হিসেবে সড়ক নিরাপত্তায় প্রকৌশলগত গবেষণাধর্মী সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান এবং পরামর্শক সংস্থার সহায়তায় ডিটিসিএ ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মাধ্যমে বাস্তবায়নের সুপারিশ করা হয়েছে। এ সুপারিশ বাস্তবায়িত হলে সাইকেল-মোটরসাইকেল আরোহীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
মোটরসাইকেল চালক ও বাইসাইকেল আরোহীদের মানসম্মত হেলমেট ব্যবহারের বিষয়ে সচেতন করারও সুপারিশ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে হেলমেটের গুনগতমান ও নিরাপদ ডিজাইন ঠিক করে ব্যবহার নিশ্চিত করা। মোটর সাইকেলে চালক ব্যতীত একজনের অধিক আরোহী উঠালে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার সুপারিশ করা হয়েছে।
এনজিও ও সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে সাহায্যকারী সংস্থা হিসেবে বিআরটিএ ও পুলিশকে বাস্তবায়নকারী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। আশু করণীয় এই সুপারিশ বাস্তবায়িত হলে মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে হতাহতের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে বলে মনে করে কমিটি।
গত ২২ আগস্ট সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের কাছে সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী এবং শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরি সভাপতি শাহজাহান খানের নেতৃত্বে সুপারিশমালা হস্তান্তর করা হয়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, কমিটি দুর্ঘটনার কারণ চিহ্নিত করে এবং সুপারিশমালাসহ প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে। প্রতিবেদনে ১১১টি সুপারিশ করা হয়। এরমধ্যে আশুকরণীয় ৫০টি, স্বল্প মেয়াদী ৩২টি এবং দীর্ঘমেয়াদী ২৯টি।
আগামী ৫ সেপ্টেম্বর সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলের সভায় সুপারিশমালা উপস্থাপন করা হবে বলে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী জানিয়েছেন।