বাগেরহাট ও রামপালে পানির সংকট ও খাল দখলের ফলে কৃষি ও পরিবেশের বিপর্যয়

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ৩:৩৮ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৩১, ২০২৫

বাগেরহাট এবং রামপাল উপজেলাগুলিতে তীব্র পানির সংকট, লবণাক্ততা বৃদ্ধি এবং সরকারি খাল ও খাস পুকুর দখলের কারণে কৃষি, পরিবেশ ও সাধারণ জনগণের জীবনযাত্রা মারাত্মকভাবে হুমকির মুখে পড়েছে। এই পরিস্থিতি থেকে দ্রুত মুক্তি পাওয়ার জন্য বাগেরহাট প্রেসক্লাবে এক প্রতিনিধিত্বমূলক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) এ সংবাদ সম্মেলনটি আয়োজিত হয় এক্টিভিস্টরা কর্তৃক। এতে জানানো হয়, বাগেরহাট জেলা ঐতিহ্যবাহী ও প্রাচীন জনপদ। প্রায় ১৪০০ বছর আগের সময় হজরত খানজাহান আলী (র.) এই এলাকার কৃষি ও জনজীবনের উন্নয়নের জন্য অনেক খাল, দীঘি ও জলাধার নিজ উদ্যোগে খনন করেছিলেন। ঐতিহাসিক এসব জলাশয় এক সময় কৃষি উৎপাদন ও পানীয় জল সরবরাহের মূল উৎস ছিল। কিন্তু বর্তমানে দখল, দূষণ এবং অপ্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপনার কারণে বেশিরভাগ খাল ও পুকুর অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। উপকূলীয় এই অঞ্চলে জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে লবণাক্ততা দিন দিন বাড়ছে। সরকারি খাল ও পুকুর দখলের কারণে নদী ও ভূগর্ভস্থ জলের লবণাক্ততা বৃদ্ধি পাচ্ছে, যার ফলে পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এর ফলশ্রুতিতে বিস্তীর্ণ কৃষিজমি অনাবাদি হয়ে পড়েছে। শুধু রামপাল উপজেলাতেই বর্তমানে প্রায় ২৭,৬৪৪ হেক্টর জমি অব্যবহারযোগ্য হয়ে গেছে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বাগেরহাট জেলায় মোট আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ আড়াই লক্ষের বেশি হেক্টর, যার মধ্যে সদ্য চাষ হওয়া জমির সংখ্যা ১ লাখ ৪ হাজার ৪৭৩ হেক্টর। অপরাজেয় পতিত জমির পরিমাণ ৮ হাজার ৭০৭ হেক্টর, আর সারাবছর পানির নিচে থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় প্রায় ১৫ হাজার ৫৯২ হেক্টর জমি। জেলার জেলা প্রশাসক গোলাম মো. বাতেন বলেন, সরকারি পুকুর ও খাস পুকুর রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। এই সম্পদ রক্ষা আমাদের দায়িত্ব। তিনি আরও জানান, কিছু অসাধু ব্যক্তি এসব সম্পদ দখল করে মাছ চাষ করছে। তিনি তৎক্ষণাত এসব দখলদারিত্ব বন্ধ করে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন, সাময়িকভাবে দখলমুক্ত করতে এবং খাস পুকুরগুলো পুনঃসংস্কার করে নতুন প্রকল্পের আওতায় সুপেয় পানির ব্যবস্থা নিশ্চিত করবেন বলে পত্রিকাকে জানান।